ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দিলশানেরও আছে কষ্ট

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ৩০ আগস্ট ২০১৬

দিলশানেরও আছে কষ্ট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অরবিন্দ ডি সিলভার পর তিলকারতেœ দিলশানকে বলা হয় শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে আনন্দদায়ী ক্রিকেটার। মাঠ ও মাঠের বাইরে বিতর্ক কখনই তাকে ছুঁয়ে যায়নি। কাউকে কখনও দোষারোপ করেননি। ব্যাটিংয়ের মতো চরিত্রটাও চমৎকার। পরশু ডাম্বুলায় জীবনের শেষ ওয়ানডে খেলার পর স্মৃতি রোমাঞ্চন করতে গিয়ে সেই তার কণ্ঠ থেকে ছোট্ট একটা হতাশা বেরিয়ে এলো। বললেন, ক্যারিয়ারে নেতৃত্বের সময়টা তার জন্য ছিল সবচেয়ে কষ্টের। সতীর্থ অনেকের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পাননি বলেও অভিমান, ‘সত্যি বলতে অধিনায়ক হওয়ার কোন পরিকল্পনাই আমার ছিল না। সে সময় শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের (এসএলসি) সভাপতি আমাকে ছয় মাসের জন্য দায়িত্ব নিতে বলেছিলেন। বলেছিলেন, এ সময়ে অন্য কাউকে পাওয়া যাবে। কোনভাবেই আমার জন্য সেটি অনুকূলে ছিল না।’ এ বিষয়ে দিলশান আরও যোগ করেন, ‘ম্যাথুসের (বর্তমান অধিনায়ক) তখন মাংসপেশিতে চোট ছিল, যে কারণে সে বছর খানেক বল করতে পারেনি। হয়ত আমারই দুর্ভাগ্য! কারণ আমি নেতৃত্ব ছাড়ার পরপরই যখন অস্ট্রেলিয়া সফরে গেলাম, ও ফিট হয়ে বোলিং শুরু করল! হয়ত ওটা ছিল মাহেলার (পরবর্তী অধিনায়ক) সৌভাগ্য।’ লঙ্কান ক্রিকেটে তখন ক্রান্তিকাল। বিশেষ করে বোলিংয়ে। মুত্তিয়া মুরলিধরন অবসরে চলে গেছেন, চোটের কারণে বাইরে নুয়ান কুলাসেকারা-অজন্তা মেন্ডিস। দিলশান অধীনে তখন ২০ ওয়ানডেতে ম্যাথুস বল করেছিলেন মাত্র ৯টিতে। তাও আবার কোনটিতেই ৫ ওভারের বেশি নয়! সেই তিনিই মাহেলার অধীনে দলের অন্যতম প্রধান বোলার হয়ে উঠেছিলেন। ২০১১ সালের এপ্রিল থেকে পরের বছর জানুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ১০ মাস অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন দিলশান। তারপরই ব্যর্থ বলে তাকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। তবে দিলশানের ক্রিকেটে ব্যক্তিজীবনের প্রভাব পড়েনি। নেতৃত্ব হারানোর পরও দেশের জন্যই খেলেছেন, ‘সে বছরই দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের পর (অধিনায়ক হিসেবে শেষ) আমি সবকিছু পেছনে ফেলে এসেছি। এরপর অস্ট্রেলিয়া সফরে গেলাম, পাঁচ শ’র মতো রান করলাম, ম্যান অব দ্য সিরিজ হলাম। চিন্তা করিনি, কে অধিনায়কত্ব করছে। আমি আমার দেশের জন্য খেলেছি। ব্যক্তিগত ইস্যু নিয়ে কখনই উদ্বিগ্ন ছিলাম না। কিন্তু ওই সময়টা কষ্টকর ছিল।’ তবে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে থাকা ৩৯ বছর বয়সী দিলশানকে সম্মান জানিয়েছেন সেই ম্যাথুস। বর্তমান অধিনায়ক বলেন, ‘দিলশান গত ১৭ বছরে আমাদের অসাধারণ একজন ক্রিকেটার। আমি তাকে মাহেলা আর সাঙ্গার মতোই সেরাদের আসনে স্থান দিতে চাই। মাঠে ওকে অনেক মিস করব।’ ৯ সেপ্টেম্বর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি২০’র মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকটে পুরোপুরি বিদায় জানাবেন দিলশান। সাঙ্গাকারার টুইট, ‘আমি তো বলব, সনাথ জয়সুরিয়ার পর দিলশানই ছিল আমাদের সফল ম্যাচ উইনার। লঙ্কান ক্রিকেটে ওর অবদান অনেক। আশা করি অবসর পরবর্তী সময়টা ভাল কাটবে।’ শ্রীলঙ্কাকে এখন পর্যন্ত একমাত্র বিশ্বকাপ (১৯৯৬) উপহার দেয়া অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা বলেন, ‘দিলশান মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেছিল। সেখান থেকে সুযোগ পেয়ে নিজেকে একজন সেরা ওপেনার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তিন ধরনের ক্রিকেটেই ছিল অসাধারণ! সফল ক্যারিয়ারে দেশের জন্য অবদান রেখেছে।’
×