ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

বলেছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে ও টি২০ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা

‘আমি বিশ্বাস করি ইংল্যান্ড আসবে’

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ২৫ আগস্ট ২০১৬

‘আমি বিশ্বাস করি ইংল্যান্ড আসবে’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সবকিছু ইতিবাচকভাবেই চলছিল। ইংল্যান্ড এ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসে নিরাপত্তাও পর্যবেক্ষণ করে গেল। কোন নেতিবাচক কথাও বলেনি তারা। কিন্তু মঙ্গলবার হঠাৎ করেই ইংলিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের এক রিপোর্টেই সব যেন নেতিবাচক হতে শুরু করে দিল। তারা জানিয়েছে, যাতায়াত ব্যবস্থায় সমস্যা আছে। এখনও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) দুই টেস্ট ও তিন ওয়ানডে সিরিজ না খেলার মতো কোন ইঙ্গিত দেয়নি ইসিবি। এরপরও সবার ভেতর এ সিরিজ নিয়ে শঙ্কা ঢুকে গেছে। আর তাই বাংলাদেশ ওয়ানডে ও টি২০ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বুধবার বিশ্বাস প্রকাশ করেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ইংল্যান্ড আসবে।’ ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলকে আসার ক্ষেত্রে কোন আহ্বান আছে কিনা, এমন প্রশ্ন উঠতেই মাশরাফি বলেন, ‘প্রথমত আমি বলব আসতে এবং এখনও আমি বিশ্বাস করি তারা (ইংল্যান্ড) আসবে। স্বাভাবিক অবস্থা থাকলেও অনন্য দলকে যেভাবে নিরাপত্তা দেয়া হয়, আমরা অনেক আত্মবিশ্বাসী, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, সরকারের পক্ষ থেকে সেভাবে নিরাপত্তা দেয়া হবে। আমার বিশ্বাস এই ধরনের সমস্যা হবে না আশা করি। একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমি বলব খেলা চালু রাখতে। যাতে খেলাটা হয়। পৃথিবীর সব জায়গাতেই এই ঘটনাগুলো ঘটছে। এভাবে খেলা বাদ দিলে এক সময় তো খেলাই বন্ধ হয়ে যাবে। ফ্রান্সের মতো জায়গায় সন্ত্রাসী হামলার পর কিন্তু ইউরো ফুটবল হয়েছে। সব দল খেলেছে। সব জায়গাতেই এমন কম বেশি সমস্যা হচ্ছে। আমি মনে করি খেলোয়াড়দের উচিত খেলার দিকে ফোকাস করা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের হাতে ছেড়ে দেয়া। যেহেতু তাদের বোর্ড থেকে আমাদের বোর্ডে প্রতিনিধি দল এসেছে। তাদের উপর অবশ্যই বিশ্বাস রাখতে হবে।’ প্রতি দেশের ক্রিকেটারদের সঙ্গে আরেক দেশের ক্রিকেটারদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকে। সেক্ষেত্রে বোর্ডে-বোর্ডে আলোচনার সঙ্গে খেলোয়াড়দের মধ্যেও আলোচনার বিষয় থাকে। খেলোয়াড়দের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইতিবাচক কিছুও বের করা যেতে পারে। সেই কাজ কি করছেন মাশরাফিরা? অধিনায়ক বোর্ডের কোর্টেই বল ঠেলে দিলেন, ‘কারও সঙ্গে কার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকলে হয়ত কেউ নক করে। সেটা একটা বিষয়। কারণ যে কোন একটা অফিসিয়াল ট্যুরে দুই বোর্ড মিলে সিদ্ধান্ত নেবে। আসলে এগুলো কি অবস্থা আছে সেগুলো খেলোয়াড়দের কাছ থেকে বেশি নির্ভর করে বোর্ডে যারা আছে তাদের উপর। আমার বিশ্বাস অবশ্যই ইসিবি শক্তভাবে বিষয়টি দেখবে। এবং আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তারা সন্তুষ্ট হবে।’ নিজেদের ইচ্ছাতে কোন পদক্ষেপ নেয়ার কিছু দেখছেন না মাশরাফি, ‘পদক্ষেপ নেয়ার কিছু নেই। বিভিন্ন দেশে ব্যক্তিগত টুর্নামেন্ট খেলতে অনেকে অনেক দেশে যাচ্ছে। সেই সব দেশেও কিন্তু আগে পরে অনেক আক্রমণ হয়েছে। এগুলো বলা খুব কঠিন। একজন খেলোয়াড় হিসেবে চিন্তা করতে হবে, ক্রিকেট বোর্ড যেহেতু দায়িত্ব নিচ্ছে, আমাদের বোর্ডের উপর বিশ্বাস থাকাটাই জরুরী। আমাদের ক্রিকেট বোর্ড যদি কোথাও যেতে বলে আমরা অবশ্যই যাব, আমাদের এতটুকু বিশ্বাস তো আমাদের ক্রিকেট বোর্ডের উপর আছে। আমি মনে করি নির্ভর করছে বিসিবি টু ইসিবির উপর। তাদের ভেতরে কি অবস্থা। এটা যদি ঠিক থাকে, আমি মনে করি খেলোয়াড়দের আশা উচিত।’ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কোন উদ্যোগ এখন পর্যন্ত মিলেনি। তবে যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেছে। মাশরাফি এ বিষয়ে জানান, ‘উনারা যেহেতু দেখতে এসেছিল, একটা বিষয় বলতেই পারে। এটা ঠিক করা যায় কিনা, কোন সেন্সে বলেছে এটা আমি জানি না। আমার কাছে মনে হয় যাই হোক আমাদের ওই ক্ষমতা আছে যে খেলোয়াড়দের ঠিকভাবে নিয়ে যাওয়া এবং নিয়ে আসা। আমাদেরও কিন্তু পরিবার আছে। আমরাও তো মানুষ। আমাদের যাতায়াতের বিষয়টি এর মধ্যেই পড়ে। আমি মনি করি বিসিবি খুব ভালভাবে সামলাতে পারবে। এটা খুব কঠিন কাজ নয়, আমার বিশ্বাস।‘ যদি ইংল্যান্ড দল না আসে, তাহলে ক্রিকেটের দিক থেকে বাংলাদেশের ক্ষতিটা কতটা লম্বা হতে পারে? মাশরাফির কাছে সাংবাদিকদের এ প্রশ্ন ছুড়ে যেতেই বললেন, ‘আমি বলেছিলাম ইংল্যান্ড শুরু থেকেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের পাশে ছিল। অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপে তারা এসেছিল। বাংলাদেশের এমন পরিস্থিতে সব সময় ইংল্যান্ড আমাদের পাশে ছিল। এখন আমি আশা করছি ওরা থাকবে আমাদের সঙ্গে। যদি না আসে, আমি জানি না আমাদের থেকে কি করার আছে। কি করবে সেটা অবশ্যই বিসিবির ট্যাকনিক্যাল পর্যায়ে যারা আছেন, তারা বসে একটা সিদ্ধান্ত নেবেন, কি করা যায়। এই মুহূর্তে একজন খেলোয়াড় হিসেবে আশা করছি, সব কিছুই স্থির থাকবে।’ বাংলাদেশে ক্রিকেটারদের এ্যাসোসিয়েশন আছে। নাম-কোয়াব। সেই এ্যাসোসিয়েশনের কী কিছু করার নেই? এ্যাসোসিয়েশনের দুর্বলতার কথাই মাশরাফি জানালেন, ‘প্লেয়ার্স এ্যাসোসিয়েশনের প্রভাব একটা আছে। সারা বিশ্বেই এটা আছে। আমাদেরটা করা হয়েছিল। হয় তো বা আমরা এতটা শক্তিশালীভাবে করতে পারিনি। কেননা আমাদের খেলোয়াড়দেরও কিছুটা ভুল আছে। তারপরও আমি মনে করি, যদি সুযোগ থাকে এখান থেকে পদক্ষেপ নেয়া উচিত। বড় স্বার্থের ব্যাপারে, যদি সুযোগ থাকে কিছু করা উচিত।’ শেষে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল ও ক্রিকেটারদের প্রতি বাংলাদেশে এসে খেলে যাওয়ার আহ্বানই জানিয়েছেন, ‘প্রত্যেকটি খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে আমি বলব, তোমরা আসবা, আমি নিশ্চিত তোমরা এখানে এসে নিশ্চিন্ত মনে ক্রিকেট খেলতে পারবে। অন্যকিছু নিয়ে ভাবার সুযোগ নেই। আশা করি, খুব ভাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এই পরিস্থিতিতে আমরা খেললে, আমাদের ভেতর বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হবে।’
×