ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকের ১৪টি শাখায় নোট সরবরাহ শুরু হবে ১ সেপ্টেম্বর থেকে

ঈদ উপলক্ষে বাজারে আসছে ১৫ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ২৩ আগস্ট ২০১৬

ঈদ উপলক্ষে বাজারে আসছে ১৫  হাজার কোটি টাকার নতুন নোট

রহিম শেখ ॥ ঈদে সালামি হিসেবে নতুন টাকা পেতে পছন্দ করে ছোট ছেলেমেয়েরা। বড়দের কাছেও সমান কদর রয়েছে নতুন টাকার। আর এ কারণে অনেক ব্যক্তিই ব্যাংক থেকে অথবা ফুটপাথের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নতুন নোট বদলে নেয়। ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে পর্যাপ্ত নতুন নোট বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতি নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন নোটের বিনিময় শুরু হবে। নোট বিনিময়ের এ কার্যক্রম চলবে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। রাজধানীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসের পাশাপাশি বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ১৪টি শাখায় নতুন নোট পাওয়া যাবে। এবার একজন ছোট মূল্যমানের সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকার নোট বদলিয়ে নিতে পারবেন। আর বড় মূল্যমানের নোট নিতে পারবেন সর্বোচ্চ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তবে চাহিদা কম থাকায় এবার ২ ও ৫ টাকার নোট বিনিময়ের সুযোগ রাখা হচ্ছে না। এদিকে, কোরবানির পশুসহ অন্যান্য কেনাকাটায় বাড়তি খরচের কথা মাথায় রেখে এবার নতুন-পুরনো মিলে ৩০ হাজার কোটি টাকার নোট সরবরাহের ব্যবস্থা রাখছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে একদম নতুন নোট রয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। জানা গেছে, মৌসুমী ব্যবসায়ী ও দালাল রুখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাতিঝিল অফিসে নতুন টাকা বিনিময়ে ডিজিটাল ডিসপ্লের ব্যবহার করা হবে। এই পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ নেয়ার পর কুপনের সিরিয়ালে টাকা সরবরাহ করা হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, এবার ৩০ হাজার কোটি টাকার নোট বিনিময়ের ব্যবস্থা রাখছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যার অর্ধেকটাই থাকছে নতুন নোট। ২ ও ৫ টাকা কেন বিনিময় করা হবে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোরবানির ঈদে বড় নোটের চাহিদা বেশি হয়। এই চিন্তা থেকেই ২ ও ৫ টাকার নোট বিনিময় করা হবে না। তিনি জানান, এবারও নতুন নোট বিনিময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে নতুন টাকা বিনিময়ের আগে আঙুলের ছাপ নেয়ার পাশাপাশি মানুষের মধ্যে কুপন সরবরাহ করা হবে। পরে কুপনের সিরিয়াল ধরে নতুন নোটের বিনিময় হবে। জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসের পাশাপাশি সকল বিভাগীয় শাখা অফিসেও নতুন টাকা বিনিময়ের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। মতিঝিল অফিসে দুটি কাউন্টার এবং বিভাগীয় শাখা অফিসে একটি কাউন্টার খোলা হবে। পাশাপাশি রাজধানীতে ১৪টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখায় নতুন নোট বিনিময়ের নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া বিভাগীয় শহরগুলোর নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংকের শাখায়ও পাওয়া যাবে নতুন নোট। এবার একজনে ছোট মূল্যমানের সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকার সমপরিমাণ নতুন টাকা বদলে নিতে পারবেন। এর মধ্যে ৫০ টাকার ১ প্যাকেট বা ৫ হাজার টাকা, ২০ টাকার ১ প্যাকেট বা ২ হাজার টাকা ও ১০ টাকার ১ প্যাকেট বা ১০০ হাজার টাকা নেয়ার সুযোগ রাখা হচ্ছে। অন্যদিকে, একজনে বড় মূল্যমানের সর্বোচ্চ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার নতুন নোট সংগ্রহ করতে পারবেন। এর মধ্যে রয়েছে ১০০ টাকার ১ প্যাকেট বা ১০ হাজার টাকা, ৫০০ টাকার ১ প্যাকেট বা ৫০ হাজার টাকা ও ১০০০ হাজার টাকার ১ প্যাকট বা ১ লাখ টাকা। এবার মহাব্যবস্থাক ও উপ-মহাব্যবস্থাপকরা ছোট মূল্যমানের ১৬ হাজার টাকা, যুগ্ম ও উপপরিচালকরা ১২ হাজার টাকা এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মকর্তারা ৮ হাজার টাকা বদলে নিতে পারবেন। আউটসোর্সিয়ে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্যও ৮ হাজার টাকা বদলে নেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। এবার রাজধানিতে যেসব শাখায় ছোট মূল্যমানের নতুন নোট পাওয়া যাবে সেগুলো হলো-ন্যাশনাল ব্যাংকের যাত্রাবাড়ী শাখা, অগ্রণী ব্যাংকের এলিফ্যান্ট রোড শাখা, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা সিটি (পান্থপথ) শাখা, ব্যাংক এশিয়ার ধানম-ি শাখা, ঢাকা ব্যাংকের উত্তরা শাখা, জনতা ব্যাংকের আবদুল গণি রোড শাখা, দি সিটি ব্যাংকের মিরপুর শাখা ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের মালিবাগ শাখা। এবার যেসব শাখায় বড় মূল্যমানের নোট বিনিময় হবে সেগুলো হলো-মার্কেন্টাইল ব্যাংকের বনানী শাখা, সোনালী ব্যাংকের রমনা শাখা, আইএফআইসি ব্যাংকের গুলশান শাখা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের মোহাম্মদপুর শাখা ও রূপালী ব্যাংকের মহাখালী শাখা। গেল কোরবানির ঈদে ২৫ হাজার কোটি টাকার নোট বিনিময়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। যা বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসসহ সব শাখা অফিস এবং ২০টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ২১ শাখার মাধ্যমে বিনিময়ের ব্যবস্থা রাখা হয়।
×