ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিঘ্নিত হতে পারে পরিষেবা কার্যক্রম

স্বাস্থ্য সেক্টরে স্টাফ উপস্থিতির হার আশঙ্কাজনক হ্রাস

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৪ আগস্ট ২০১৬

স্বাস্থ্য সেক্টরে স্টাফ উপস্থিতির হার আশঙ্কাজনক হ্রাস

নিখিল মানখিন ॥ দেশের স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্টাফদের কর্মস্থলে উপস্থিতির হার আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে। গত ১ থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে স্টাফদের উপস্থিতির হার ছিল গড়ে ২১ থেকে ২৩ শতাংশের মধ্যে। আর অনুপস্থিতির হার ছিল প্রায় ৭৭ শতাংশের বেশি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের উপস্থিতি তদারকি বিভাগ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। স্টাফদের অনুপস্থিতির এমন উচ্চ হার স্বাস্থ্য সেক্টরের সার্বিক কার্যক্রম বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমকে ব্যাহত করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে মতে, গত ১১ আগস্ট বরিশাল বিভাগে ১৭৫২ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ১৪৫৮ ও উপস্থিত ২৯২ (্উপস্থিতির হার ১৫.৮ শতাংশ), চট্টগ্রাম বিভাগে ৪২৪৩ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ৩৬০১ ও উপস্থিত ৬৪২ (্উপস্থিতির হার ১৫.১ শতাংশ), ঢাকা বিভাগে ৮৫৮৭ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ৭৪৪১ ও উপস্থিত ১১৪৬ (্উপস্থিতির হার ১৩.৩ শতাংশ), খুলনা বিভাগে ২৫৯৮ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ২১৯৪ ও উপস্থিত ৪০৪ (্উপস্থিতির হার ১৫.৬ শতাংশ), রাজশাহী বিভাগে ৩৬০১ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ৩৩২৫ ও উপস্থিত ২৭৬ (্উপস্থিতির হার ৭.৭ শতাংশ), রংপুর বিভাগে ২০৯৬ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ১৭৯০ ও উপস্থিত ৩০৬ (্উপস্থিতির হার ১৪.৬ শতাংশ), সিলেট বিভাগে ১৩৯৪ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ১১১১ ও উপস্থিত ২৮৩ (্উপস্থিতির হার ২০.৩ শতাংশ)। এভাবে গত ১১ আগস্ট দেশের সাতটি বিভাগে স্বাস্থ্য সেক্টরের ২৪ হাজার ২৭১জন স্টাফের মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ২০ হাজার ৯২০ ও উপস্থিত ছিল মাত্র ৩৩২১ জন। সারাদেশে উপস্থিতির হার ছিল গড়ে ১৩.৮ শতাংশ। এভাবে সারাদেশে গত ১ থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত উপস্থিতির হার ছিল যথাক্রমে ২৩.১ শতাংশ, ২১.৯ শতাংশ, ২১.৯ শতাংশ, ২১ শতাংশ, ২০.৭ শতাংশ, ২১.১ শতাংশ, ২১.২ শতাংশ, ১৯.৫ ও ১৪.৯ শতাংশ। বর্তমান সরকারের আমলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্টাফদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু একের পর এক ব্যবস্থা গ্রহণ করেও কর্মস্থলে তাদের উপস্থিতি প্রত্যাশিত হারে আনতে পারছে না সরকার। সর্বশেষ দেশের যেকোন সরকারী চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্টাফদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের উদ্যোগ গ্রহণ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে কর্মস্থলে সরকারী স্টাফদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে টেলিফোনে মনিটরিং ও সরেজমিন পরিদর্শন বাধ্যতামূলক করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অনেক স্টাফের বিরুদ্ধে টেলিফোনে তাদের অবস্থান সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এছাড়াও প্রতি দু’মাসে একবার নির্ধারিত এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন ও প্রতিবেদন দাখিলের উদ্যোগও নেয়া হয়। বিদেশে প্রশিক্ষণের যাওয়ার ক্ষেত্রেও মনিটরিং ও সরেজমিন পরিদর্শনের পারফরমেন্স পরীক্ষা করে বাধ্যতামূলক করা হয়। ‘বৈদ্যুতিক হাজিরা মনিটরিং ব্যবস্থা’ চালু করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। কিন্তু ওসব উদ্যোগ গ্রহণ করেও কর্মস্থলে স্টাফদের উপস্থিতি সন্তোষজনক হারে নিয়ে আসা যায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। মনিটরিং সেলের প্রতিবেদনেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেলের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের মনিটরিংয়ের ক্ষেত্রে শৈথিল্যের বিষয়টি উঠে আসে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং কার্যক্রম পর্যালোচনায় দেখা যায়, বেশিরভাগ কর্মকর্তা টেলিফোনে স্টাফদের উপস্থিতি পরিবীক্ষণ করছেন না, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান সরেজমিন পরিদর্শনও করছেন না। ফলে মনিটরিং সেলের কার্যক্রম পরিচালনা দুরূহ হয়ে পড়েছে।
×