ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর হারানো টোব্যাকো পাইপ!

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১৩ আগস্ট ২০১৬

বঙ্গবন্ধুর হারানো টোব্যাকো পাইপ!

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যবহৃত ‘টোব্যাকো’ পাইপ মিলল খুলনার পাইকগাছায়। বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ আহম্মদের কাছে পাইপটি হস্তান্তর করেছেন দাউদ আলী ও ভবতোষ নামে দুই ব্যক্তি। এ বিষয়ে স্থানীয় একাধিক মুক্তিযোদ্ধা ও রজনীতিবিদ বলেন, এর আগে তারা কখনও শোনেননি বঙ্গবন্ধু পাইকগাছায় তাঁর ব্যবহৃত ‘টোব্যাকো পাইপ’ ফেলে গেছেন। পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি মারুফ আহম্মদ বলেন, দাউদ আলী ও ভবতোষ পাইপটি বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাক মলঙ্গীর কাছে যান। আব্দুর রাজ্জাকের কাছে বিষয়টি জানার পর তিনি পাইপটি সংগ্রহ করে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হস্তান্তরের উদ্যোগ নেন। বৃহস্পতিবার ‘টোব্যাকো’ পাইপটি বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। টোব্যাকো পাইপটি হস্তান্তরকারীদের বরাত দিয়ে ওসি মারুফ আহম্মদ জানান, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পাইকগাছার ওয়াপদার বেড়িবাঁধ উদ্বোধনের উদ্দেশ্যে আসেন। আলমতলার বেড়িবাঁধে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিথি ভবনে এলাকাবাসীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি। এ সময় গড়ইখালী ইউনিয়নের পাতড়াবুনিয়া গ্রামের মৃত মুন্সী তাজেল গাজীর ১২ বছরের ছেলে দাউদ আলীর হাতে হাত দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করার সময় বঙ্গবন্ধুর মুখ থেকে টোব্যাকো পাইপটি মাটিতে পড়ে যায়। এরপর তিনি আর পাইপটি তোলেননি। তখন দাউদ আলী পাইপটি কুড়িয়ে নিয়ে নিজের কাছে যতœ করে রেখে দেন। ৩১ বছর নিজের কাছে রাখার পরে পাইপটি নিরাপদে রাখতে একই এলাকার রায় সাহেব কালি চরণ ম-লের ছেলে ভবতোষ ম-লের হেফাজতে দেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু বলেন, ’৭২ সালে বঙ্গবন্ধু যখন পাইকগাছায় এসেসিলেন তাঁর নিরাপত্তা ব্যবস্থার দায়িত্বে তিনি ছিলেন। সে সময় তো নয়ই পরবর্তীতেও তিনি কোনদিন শোনেননি বঙ্গবন্ধূ শেখ মুজিবুর রহমানের ‘টোব্যাকো পাইপ’ পাইকগাছায় ফেলে গেছেন। থানার ওসির কাছ থেকে বিষয়টি সম্পর্কে তিনি জেনেছেন এবং তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা পাইকগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স.ম বাবর আলী বলেন, বঙ্গবন্ধু যে সময়ে পাইকগাছায় এসেছিলেন তখন তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। এর আগে তিনি বঙ্গবন্ধুর ‘টোব্যাকো পাইপ’ ফেলে যাওয়ার কথা কখনও শোনেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, তিনিও প্রথম শুনেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যবহৃত ‘টোব্যাকো পাইপ’ এতদিন পাইকগাছায় কারও কাছে ছিল। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন। নাম প্রকাশে আর এক নেতা বলেন, ১২ বছর বয়সের ছেলের হাতে টোব্যাকো পাইপটি যাওয়ার পর সে কি কাউকেই দেখায়নি বা জানায়নি। এটা বালক বয়সে লুকিয়ে রাখা অবিশ্বাস্য ঘটনা বলে তিনি মনে করেন।
×