ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

সাঙ্গ হলো গৌড়ীয় সঙ্গীত ও নৃত্যবিষয়ক কর্মশালা

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১০ আগস্ট ২০১৬

সাঙ্গ হলো গৌড়ীয় সঙ্গীত ও নৃত্যবিষয়ক কর্মশালা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মঙ্গলবার বিকেল। শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা ভবনের মহড়া কক্ষে চলছে কর্মশালা। ২৮ জন সঙ্গীত শিক্ষার্থী নিবিড় মনোযোগে শিখছেন গৌড়ীয় সঙ্গীতের বেশ কিছু জটিল তাল। তবে সেই জটিল তালগুলোকেই শিক্ষার্থীদের কাছে সহজ করে বুঝিয়ে দিচ্ছেন ভারতের প্রখ্যাত গৌড়ীয় সঙ্গীত গবেষক অমিতাভ মুখোপাধ্যায়। গণেশ বন্দনার মাধ্যমে কিছুক্ষণ চলল তেহাই পর্যায়ের উপস্থাপনা। কখনও কণ্ঠের সুর ধরে আবার কখনও বোর্ডে লিখে দিচ্ছেন গৌড়ীয় গানের তালগুলো। বাংলার এই প্রাচীন সঙ্গীত ধারাটি পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে সোমবার দুই দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। মঙ্গলবার ছিল এই কর্মশালার শেষ দিন। কর্মশালার এক ফাঁকে কথা হয় অমিতাভ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। গানের এই ধারাটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মূলত এটি হচ্ছে প্রবন্ধ সঙ্গীত। নাচের সঙ্গে এই সঙ্গীতের বিশেষ সমন্বয় সাধন হয়। কীর্তন ধারার সঙ্গে এই গানের ধারার মিল রয়েছে। এটি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতেরই একটি ধারা হলেও চর্চার ঘাটতির কারণেই সেই মর্যাদাটি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এই সঙ্গীতধারার ৬৫ শতাংশ অনুষঙ্গ হচ্ছে বাংলাদেশের আর বাকি ৩৫ শতাংশ হচ্ছে ভারতের। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রত্যেকেই খুব উৎসাহ নিয়ে শিখছে। তাই তাঁদের কাছে এই গানের ধারাটি নতুন হলেও আয়ত্ত করতে অসুবিধা হচ্ছে না। তবে শুধু এই দুই দিনের কর্মশালা করে গৌড়ীয় সঙ্গীত ভালভাবে রপ্ত করা যাবে না। এই শিক্ষার্থীরা নিয়মিত চর্চা করলে ভবিষ্যতে ভাল করবে। এখন প্রযুক্তি পৌঁছে গেছে মানুষের ঘরে ঘরে। তাই রেকর্ড করা গানের মাধ্যমেও তাঁদের শেখার অবারিত সুযোগ রয়েছে। গৌড়ীয় সঙ্গীতের পাশাপাশি একাডেমির তত্ত্বাবধানে গৌড়ীয় নৃত্য কর্মশালারও আয়োজন করা হয়। এই কর্মশালারও শেষ দিন ছিল মঙ্গলবার। গৌড়ীয় নৃত্য কর্মশালাটি পরিচালনা করেন আরেক ভারতীয় প্রখ্যাত গৌড়ীয় নৃত্য গবেষক নৃত্যগুরু অধ্যাপক ড. মহুয়া মুখোপাধ্যায়। গৌড়ীয় নৃত্য কর্মশালার সমাপনী দিনের কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে। প্রসঙ্গত, এই কর্মশালার অংশ হিসেবে গত ৬ আগস্ট একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত হয় গৌড়ীয় নৃত্যবিষয়ক সেমিনার। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারটি পরিচালনা করেন ড. মহুয়া মুখোপাধ্যায়। সেমিনারের মহুয়া মুখোপাধ্যায় গৌড়ীয় নৃত্যের পটভূমি নিয়ে আলোকপাত করেন। একই সাথে বাঙালী সংস্কৃতির অনবদ্য এই শিল্প নিয়ে তাঁর গবেষণার ৪০ বছরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গৌড়ীয় নৃত্য বিষয়ে অনেকেরই স্বচ্ছ ধারণা নেই। এটি বাংলা সংস্কৃতির নিজস্ব একটি শিল্প হয়েও বিভিন্ন কারণে প্রতিষ্ঠা পায়নি। এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে এর চর্চা ও পৃষ্ঠপোষকতায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী ও নৃত্য পরিচালক শামীম আরা নীপার সঞ্চালনায় সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন নৃত্যশিল্পী ও নৃত্যপরিচালক রাহিজা খানম ঝুনু, আমানুল হক, গেলাম মোস্তফা খান, শুক্লা সরকার, সোমা মমতাজ, দীপা খন্দকার, ফারহানা চৌধুরী বেবী, ওয়ার্দা রিহাব, এম আর ওয়াসেক, বেনজীর সালাম, র‌্যাচেল এগনেস প্যারিস, সামিনা হোসেন প্রেমা, তামান্না রহমান, মুনমুন আহমেদ, তাবাসসুম আহমেদ, কবিরুল ইসলাম রতন, নিলুফার ওয়াহিদ পাপড়িসহ আরও অনেক নৃত্যশিল্পী ও পরিচালকবৃন্দ। নৌবাহিনীর ঐতিহাসিক দলিলপত্রের ফটোকপি জাদুঘরে হস্তান্তর ॥ মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের প্রথম নৌবাহিনী গঠন করে। নবগঠিত নৌবাহিনীর দু’টি পেট্রোল বোট ‘পলাশ’ ও ‘পদ্মা’ নামে রূপান্তর করে দক্ষিণাঞ্চলে নৌযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। এই দু’টি পেট্রোল বোটকে যুদ্ধজাহাজে রূপান্তর এবং অপারেশন জ্যাকপট সম্পর্কিত ঐতিহাসিক দলিলত্রের ফটোকপি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কমোডর মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক সংরক্ষণের জন্য মঙ্গলবার জাতীয় জাদুঘরে হস্তান্তর করেন। জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী এ সমস্ত মূল্যবান দলিলপত্রের ফটোকপি জাদুঘরে সংরক্ষণের জন্য গ্রহণ করেন। এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ পেজগী ॥ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হলো সাত্ত্বিক নাট্য সম্প্রদায়ের নাটক ‘পেজগী’। জে বি পি মলিয়েরের গল্প অবলম্বনে ও অপু আমানের রূপান্তরে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন কামরুজ্জামান তুপা। নাটকের পেজগী মিয়া প্রকৃতপক্ষে একজন কাঠ মিস্ত্রি। তার চরিত্রের বৈশিষ্ট্য হলো মদ খাওয়া, মিথ্যা বলা এবং ইংরেজী বলার মিথ্যা চেষ্টা করা। বউয়ের প্ররোচনায় পেজগী মিয়া হেকিম হয়ে যায়। চিকিৎসার দায়িত্ব পড়ে নিরক্ষর বিত্তশালী ব্যক্তি আজগর আলীর একমাত্র বাকশক্তি হারিয়ে ফেলা কন্যা লিপির। অন্যদিকে আকাশ মিয়া হঠাৎ করে প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক বনে যায়। কিন্তু হঠাৎ করেই পেজগী মিয়ার সব জোচ্চুরি ধরা পড়ে এবং সে নাকানি-চুবানি খায়। এভাবেই এগিয়ে যায় নাটকটির কাহিনী। নাট্যচক্রের ৪৪ বছর পূর্তির নাট্যানুষ্ঠান আজ ॥ নাট্যদল নাট্যচক্রের ৪৪বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ বুধবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে আনন্দযজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বরেণ্য যাত্রাশিল্পী ও পালাকার মিলন কান্তি দে এবং মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অভিনেতা মাহমুদ সাজ্জাদকে সম্মাননা প্রদান করা হবে। সম্মাননা শেষে আবৃত্তি করবেন শিল্পী মিলন কান্তি দে এবং শিল্পী মাহমুদ সাজ্জাদ। শিল্পী তাবাসসুমের পরিচালনায় দলীয় নৃত্য পরিবেশিত হবে। নাট্যচক্রের উল্লেখযোগ্য প্রযোজনাসমূহের অংশবিশেষ নিয়ে রবিউল মাহমুদ ইয়ংয়ের পরিচালনায় পরিবেশিত হবে নাট্যানুষ্ঠান ‘মৌচাক’।
×