ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দশ দিনের সফরে মন্ত্রী আজ জর্দান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করবেন

জর্দান ও লেবাননে বন্ধ দুয়ার খুলে যাচ্ছে, যাবে দক্ষকর্মী

প্রকাশিত: ০৪:০০, ৮ আগস্ট ২০১৬

জর্দান ও লেবাননে বন্ধ দুয়ার খুলে যাচ্ছে,  যাবে দক্ষকর্মী

ফিরোজ মান্না ॥ জর্দান ও লেবানন বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগ করবে। ১০ দিনের সফরে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বিএসসিকে জর্দান ও লেবানন কর্তৃপক্ষ এমন আশ্বাস দিয়েছে। মন্ত্রী আজ সোমবার জর্দান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন। বৈঠকে পোশাককর্মী নিয়োগের বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হবে। চুক্তি করেই তিনি লেবাননের উদ্দেশে রওনা হবেন। লেবাননে গৃহকর্মী নিয়োগের বিষয়ে আরও একটি চুক্তির কথা রয়েছে। দুই দেশই বাংলাদেশের শ্রমবাজার। নানান কারণে দীর্ঘদিন ধরে বাজার দুটি বন্ধ ছিল। এখন আবার বাজার দুটি চালু হবে বলে মন্ত্রণালয় আশা করছে। চুক্তি শেষ করে মন্ত্রীর আগামী ১৫ আগস্ট দেশে ফেরার কথা রয়েছে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, দেশের শ্রমবাজারের জন্য এটি একটি ভাল খবর। জর্দানে দেশের বিপুলসংখ্যক পোশাককর্মী কর্মরত আছেন। দেশটিতে আরও কর্মী নিয়োগ করার জন্য কর্তৃপক্ষ চুক্তি করতে যাচ্ছে। ২০১২ সাল জর্দানের সঙ্গে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছিল। ওই সমঝোতার ভিত্তিতে কিছু পোশাককর্মী পাঠানো হয়েছিল। তখন স্বল্প বেতনে জর্দান কর্মী নিয়োগ দেয়। মন্ত্রী বেতনের বিষয়টি নিয়ে জর্দান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছেন, যাতে তারা কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি করে। বর্তমানে দেশটিতে এক লাখ ২৫ হাজার বাংলাদেশী কর্মরত আছেন। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মন্ত্রী নূরুল ইসলাম বিএসসি দেশটির কয়েকটি গার্মেন্টস কারখানা পরিদর্শন করে কাজের পরিবেশ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু কর্মীদের বেতন-ভাতা নিয়ে তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ দুই-তিন বছর আগে যে বেতন দিত এখনও সেই বেতনেই কর্মীদের কাজ করাচ্ছে। বেতন বৃদ্ধির জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ও দেশটির শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন। দেশটির শ্রমমন্ত্রী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। জর্দানে আরও কর্মী নিয়োগের বিষয়ে একটি চুক্তি হবে বলেও জনসংযোগ কর্মকর্তা বলেন। মন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেনÑ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব বেগম শামসুন নাহার, বিএমইটির মহাপরিচালক সেলিম রেজা, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ জুলহাস, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আজহারুল হক, মন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহসিন চৌধুরী, বাংলাদেশ দূতাবাস জর্দানের প্রথম সচিব (শ্রম) লুবনা ইয়াসমিন, তুসকার এ্যাপারেল লিমিটেড কোম্পানির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রামকুমার দেবরাজ। ৫ আগস্ট মন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল জর্দান যায়। এখানে ৫ দিনের সফর শেষ করে লেবানন যাবেন। লেবাননে বাংলাদেশের বহু গৃহকর্মী কর্মরত রয়েছেন। আরও গৃহকর্মী নিয়োগের বিষয়ে দেশটির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। এখানেও একটি চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। এই দুই দেশই বাংলাদেশের জন্য ভাল শ্রমবাজার। দীর্ঘদিন ধরে নানা কারণে দুটি দেশ বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ কমিয়ে দিয়েছে। এবার মন্ত্রীর সফর ইতিবাচক হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বাজার দুটিতে বিপুলসংখ্যক কর্মী নিয়োগের সুখবর রয়েছে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি জর্দানের আল দুলাল ও আল হাসান এলাকায় কর্মরত বাংলাদেশীদের (নারী-পুরুষ) গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি পরির্দশনকালে কর্মীদের ন্যায্য মজুরির পাশাপাশি চিকিৎসা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। মন্ত্রী গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মালিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পোশাক কর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলেন। মন্ত্রীর এই আহ্বানের পর দেশটিতে কর্মরত কর্মীরা উল্লাস করেন। বাংলাদেশী কর্মীরা দক্ষতা ও সততার সঙ্গে কাজ করায় গার্মেন্টস মালিকরাও খুশি বলে মন্ত্রীকে জানান। প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয়ের অধীনে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মীদের দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে। বর্তমানে দক্ষ কর্মী পাঠাতে বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আরও কর্মী নিয়োগের জন্য গার্মেন্টস মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানান। প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যে জর্দানের ক্ল্যাসিক ফ্যাশন লিমিটেড ও তুসকার এ্যাপারেল লিমিটেড পরিদর্শন করে।
×