ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষক ও ছাত্রদের সঙ্গে যোগ দেন অভিভাবক ও সাধারণ মানুষ;###;সিলেবাসের শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার প্রতি জোর দেয়ার আহ্বান

গড়ো প্রতিরোধ রুখো জঙ্গী ॥ লাখো ছাত্র শিক্ষকের প্রতিবাদী মানববন্ধন

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২ আগস্ট ২০১৬

গড়ো প্রতিরোধ রুখো জঙ্গী ॥ লাখো ছাত্র শিক্ষকের প্রতিবাদী মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশজুড়ে ঐক্যবদ্ধভাবে জঙ্গীবাদীদের প্রতিরোধ করার অঙ্গীকার করলেন লাখ লাখ ছাত্র-শিক্ষক জনতা। জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধের ডাক দেয়া হয়েছে সরকারী বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোসহ দেশজুড়ে শিক্ষাঙ্গনে একযোগে অনুষ্ঠিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জঙ্গীবাদবিরোধী মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে। কর্মসূচীতে প্রতিবাদকারীদের কণ্ঠে ছিল সেøাগান, ‘জঙ্গীবাদের আস্তানা, ভেঙ্গে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ‘জঙ্গীবাদের আস্তানা বাংলাদেশে হবে না’ ‘গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলো, জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসকে রুখে দাঁড়াই’। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসসহ পার্শবর্তী স্থানে আয়োজিত কর্মসূচী পালিত হয় দেশজুড়ে। যেখানে অংশ নেন লাখ লাখ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ সর্বস্তরের মানুষ। তারা দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে জঙ্গীবাদীদের কবর রচনা করার হুঁশিয়ারী দিয়েছেন। কর্মসূচীকে ঘিরে সোমবার সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছিল প্রতিবাদী মিছিল সেøাগান। সকাল থেকেই রাজধানী থেকে শুরু করে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কলেজগুলোতে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন অভিভাবকসহ সর্বস্তরের জনতা। রাজধানীতে সবচেয়ে বড় জমায়েত হয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। যেখানে জমায়েত হয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন হাজার হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ৫টি কলেজ নিয়ে কর্মসূচী পালন করা হয়। এখানে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদসহ কলেজগুলোর অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরাও অংশ নেন। উপাচার্যের নেতৃত্বে ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারী বদরুন্নেসা কলেজ, শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজ ও তেজগাঁও কলেজ শহীদ মিনারে জমায়েত হয়ে যৌথভাবে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। মানববন্ধনটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পলাশি মোড়, অপরদিকে দোয়েল চত্বর হয়ে হাইকোর্টের মোড় এবং একটি অংশ চারুকলা অনুষদ ভবনের সম্মুখ থেকে বাংলা একাডেমি হয়ে দোয়েল চত্বরে যুক্ত হয়। মানববন্ধনে স্কুলের শিক্ষার্থী ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও অংশ নেয়। কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ রুখতে জনগণের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, কেবল আইন দিয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে প্রয়োজন সামাজিক ঐক্য। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস ও বাংলা পড়াতেই হবে। যারা এটা মানবেন না, তারা টিকে থাকতে পারবে না। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় আইন মানবে না সেগুলোকে আমরা বন্ধ করে দেব। সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জঙ্গী কার্যক্রমের অভিযোগ তদারক করতে এরই মধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জঙ্গীবাদে জড়াতে দেয়া হবে না। জঙ্গীবাদের সঙ্গে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান। পাশাপাশি আইন সংশোধন করে ব্যাংকের মতো বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ট্রাস্টি বোর্ডে সরকারী একজন পর্যবেক্ষক রাখার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার কথাও জানান ইউজিসি চেয়ারম্যান। জঙ্গীবাদ দমনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুন অর রশিদ বলেন, শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলা, সাহিত্য, সংস্কৃতি চর্চার প্রতি জোর দিতে হবে। দেশের হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বর্তমান প্রজন্মকে জানাতে হবে। শিক্ষক ও অভিবাবকদের দায়িত্বশীলতা বাড়াতে হবে। জঙ্গী দমনে ইতোমধ্যে আমরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যবেক্ষক টিম গঠন করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের ডাক ॥ এদিকে এই কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস জুড়ে কয়েক শ’ ব্যানার নিয়ে মানববন্ধনে মিলিত হন বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট এবং হলের হাজারো শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী। ‘সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলুন’ সেøাগানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে ওই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল ‘জঙ্গীবাদের জায়গা বাংলাদেশে নয়’, ‘শান্তিপূর্ণ দেশ চাই’, ‘জঙ্গীবাদের ঠাঁই নাই’, ‘জঙ্গীবাদের বিষদাঁত ভেঙ্গে দাও’, ‘ধর্মের নামে মানুষ হত্যা মহাপাপ’, ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার’, ‘সন্তানদের জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে পরিবারেই হোক প্রথম পাঠশালা’, ‘জঙ্গীবাদের মূল উৎপাটনে ঐক্যবদ্ধ হোন’ ইত্যাদি সেøাগানে লেখা ফেস্টুন-প্ল্যাকার্ড। ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাকসুদ কামালের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমদ প্রমুখ। উপাচার্য অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, যারা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল তাদের দোসররাই গুলশানের ন্যক্কারজনক হত্যাকা- ঘটিয়েছে। এই হত্যাকা-ের নিন্দা জানানোর কোন ভাষা নেই। যারা এই সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের সাথে জড়িত তারা অমানুষ। শুধু আমাদের দেশে নয়, দেশের বাইরেও এ হামলা সংঘটিত হচ্ছে। বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। এখানে জঙ্গীবাদের কোন স্থান নেই। তিনি বলেন, ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের সাথে জড়িতদের সংখ্যা নগণ্য। জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সব মানুষের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান দরকার। তাহলে দেশের মাটি থেকে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ নির্মূল করা সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষও। ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত কর্মসূচী পালিত হয় রাসেল স্কয়ার, ধানম-ি-৩২এ। ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ফাযিল ও কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। ইউজিসি’র মানবন্ধন ॥ গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট ও শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশ বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) উদ্যোগে কমিশন চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. এম. শাহ্ নওয়াজ আলি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউজিসি অফিসার্স এ্যাসোসিশেনের সভাপতি ও ইউজিসি’র অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ কামাল হোসেন। মানববন্ধন কর্মসূচীতে ইউজিসি’র সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। প্রফেসর শাহ্ নওয়াজ বলেন, বাংলাদেশ জঙ্গীবাদের স্থান নয়। এটি সকল ধর্মের মানুষের সহাবস্থানের একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। কতিপয় বিপথগামী ব্যক্তি কর্তৃক দেশের ভাবমূর্তি কোনভাবেই বিনষ্ট হতে দেয়া যায় না। তিনি প্রতিটি পরিবারকে তাঁদের সন্তানদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জঙ্গীবাদ এখন শুধুমাত্র কোন বেসরকারী ও সরকারী বিশ^বিদ্যালয়ের সমস্যা নয় এটি একটি জাতীয় সমস্যা। এ সমস্যা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। শেকৃবিতে মানববন্ধন ॥ জঙ্গী হামলার প্রতিবাদে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববনন্ধন, র‌্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অংশ নেন শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ সেকেন্দার আলীর নেতৃত্বে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে একটি প্রতিবাদ র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনের সামনে এসে ১০ মিনিট মানববন্ধন শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। বিইউপিতে জঙ্গীবিরোধী কর্মসূচী ॥ বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) ‘জঙ্গীবাদ ও আমাদের ছাত্রসমাজ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিইউপির মাননীয় উপাচার্য মেজর জেনারেল শেখ মামুন খালেদ, এসইউপি, পিএসসি, পিএইচডি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিইউপির উপ উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিটিএফও। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, সমাজে বিভিন্ন বিষয়ের হতাশা, পারিবারিক ও সামাজিক অসন্তোষ এবং সুষ্ঠু সাংস্কৃতিক চর্চা না থাকার ফলে ছাত্রসমাজের একটি অংশ জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়ছে। শৈশব থেকেই আমাদের শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা শিক্ষা দিতে হবে। জঙ্গী বিরোধী কর্মসূচী বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ॥ সম্প্রতি ঘটে যাওয়া নৃশংস সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান এসেছে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও আলোচনা সভা থেকে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করে। ইউজিসির আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। ক্যাম্পাসের চতুর্দিকে রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়। এসময় তারা জঙ্গীবাদ বিরোধী বিভিন্ন ব্যানার এবং প্ল্যাকার্ড বহন করে। ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে জঙ্গীবাদ বিরোধী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১১ টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আফতাব নগরের প্রধান সড়কে এই মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জঙ্গীবাদ বিরোধী নানান সেøøাগান সংবলিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন প্রদর্শন করে। এছাড়া মানববন্ধন থেকে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি এবং শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের পাশে জঙ্গীবাদী হামলায় নিহতের পরিবার পরিজনদের প্রতিও সমবেদনা প্রকাশ করা হয়। ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এম শহিদুল হাসান, কোষাধ্যক্ষ এ জেড এম শফিকুল আলমসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিনগণ, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারপার্সন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারও এই মানববন্ধনে যোগ দেন। ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ সব-সময়ই অসাম্প্রদায়িক ও শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে পরিচিত। কিছু বিপথগামী জঙ্গীর কারণে বাংলাদেশের সেই সুনাম ক্ষুণœœ হতে দেয়া যাবে না। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সর্বাত্মক প্রতিরোধের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে জঙ্গীবাদ নির্মূল করতে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান। প্রাইম ইউনিভার্সিটির সামনের সড়কে (দারুস্সালাম রোড) জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস প্রতিরোধে মানববন্ধন, র‌্যালি ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দেন প্রাইম ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সম্মানিত সদস্য মীর শাহাবুদ্দিন। আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশেও কর্মসূচী পালিত হয়। ক্যাম্পাসে জঙ্গীবাদ প্রতিরোধ ও সুশিক্ষার পক্ষে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচী পালন করা হয়। ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে জঙ্গীবাদ প্রতিরোধ ও শান্তি-সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় মানববন্ধন, র‌্যালি, গণস্বাক্ষর ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির চেয়ারম্যান ও ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন। ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির (ইইউ) আয়োজনে জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। ‘জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে তারুণ্য’ এই সেøাগান নিয়ে র‌্যালিটি ধানম-ির বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। আশা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (আশাইউবি) মানববন্ধন, র‌্যালি এবং আলোচনা সভার আয়োজন করে। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদবিরোধী মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। এইউবির প্রতিষ্ঠাতা ও উপাচার্য প্রফেসর ড. আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক এবং উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী হোসেন খান এ মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাতারকুল, বনানী ও গ্রীনরোড ক্যাম্পাসে মানববন্ধন, র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। গ্রীন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উদ্যোগে মানববন্ধন, র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। জঙ্গী তৎপরতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এ্যান্ড টেকনোলজিতে (বিইউবিটি) মানববন্ধন, র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিরপুরে বিইউবিটির মূল ফটকের সামনে বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের প্রধান কার্যালয় (ধানম-ি) এবং সিদ্ধেশ্বরী উভয় ক্যাম্পাসে জঙ্গীবাদবিরোধী মানববন্ধন, শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মানববন্ধন এবং ‘জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধন এবং আলোচনা সভায় প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকম-লী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
×