ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইইউ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রীর বৈঠক

বিদেশী ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার ওপর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১ আগস্ট ২০১৬

বিদেশী ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার ওপর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ জঙ্গী-সন্ত্রাস হামলার প্রেক্ষাপটে বিদেশী ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দেয়াকে সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, কোন বিদেশীর কাছে নেতিবাচক বার্তা পাইনি। জঙ্গী দমনে বর্তমান সরকারের কাজে সন্তুষ্ট রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রবিবার সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রতিনিধি দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে কূটনীতিকদের পাশাপাশি জঙ্গী-সন্ত্রাসের কবল থেকে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের নিরাপত্তা চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউ প্রধান পিয়ারে মিয়াদুন এ আহ্বান জানান। গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, হলি আর্টিজানে জঙ্গী-সন্ত্রাসীরা টার্গেট করেছে আমাদের বিদেশী বন্ধুদের। ইতালিয়ান ক্রেতা আর জাপানে মেট্রোরেলের জন্য যারা এসেছে তাদের। বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের যাতে ক্ষতি হয়, চলমান অর্থনৈতিক উন্নয়ন যাতে বাধাগ্রস্ত হয়, বিদেশীরা যাতে এই দেশে ব্যবসা না করে-এই উদ্দেশে অনেক বিদেশী দেখে হলি আর্টিজানে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। হলি আর্টিজানের ঘটনা সতর্ক করেছে বেশি করে। আমরা আশা করব, বাংলাদেশ তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। সরকারের পদক্ষেপের কারণে ভবিষ্যতে আর জঙ্গীবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন তোফায়েল আহমেদ। বিদেশীদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হবে, বিদেশী বন্ধুদের নিরাপত্তা দেয়া, যারা বাংলাদেশে ব্যবসা করে। অনেকে হয়ত সড়ক পথে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম-খুলনা-বরিশালে যাবে, প্রয়োজন হলে আমরা তাদের এসকর্ট দেব। আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মন্ত্রিপরিষদ সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিদেশী ব্যবসায়িক কমিউনিটিকে নিরাপত্তা দেয়া সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এখানে যে স্থাপনা রয়েছে, সেখানেও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, জুলাই-অগাস্টে তারা অবকাশে যায়, পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা সময় কাটায়। কালকেও মিটিং করেছি বিকেএমইএর সঙ্গে। তারা বলেছে, অর্ডারের কোন ক্ষতি হয় নাই। এদিকে মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর ইইউ রাষ্ট্রদূত পিয়ারে মিয়াদুন শুধু কূটনীতিকদের আবাসস্থল গুলশান নয়, সারা বাংলাদেশেই নিরাপত্তা জোরদারের ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, আমরা শুধু গুলশান, বনানী ও বারিধারার কথা বলছি না। সেখানে আমরা থাকি, তাই তা গুরুত্বের দাবিদার। কিন্তু আমাদের অনেক জায়গায় যেতে হয়, বাণিজ্যিক কার্যক্রমের কারণে, উন্নয়ন কার্যক্রমের কারণে, ওইসব এলাকায় বাংলাদেশীরাও থাকে। সুতরাং সর্বত্র নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত দেশ নিরাপদ নয়। জঙ্গীদের লাশ নিতে পরিবারের অস্বীকার করাকে আসল বাংলাদেশ উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের এ ঘটনা বেশিদিন থাকবে না। এ্যাবসলিউটলি ইট উইল বি নরমাল কান্ট্রি, কোন সন্দেহ নেই। ইইউ প্রতিনিধি দলে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত ইয়োহান ফ্রিসেল, স্পেনের রাষ্ট্রদূত এদুয়ার্দো দে লা ইগলেসিয়া ই দেল রোসাল ছিলেন। এদিকে, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, জঙ্গীবাদী তৎপরতার জন্য জামায়াতে ইসলামীই দায়ী। তাই তাদের জোট সঙ্গী বিএনপির সঙ্গে কোন ধরনের ঐক্য হতে পারে না। তিনি বলেন, জঙ্গীদের অরিজিন হলো জামায়াত। জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য রেখে জাতীয় ঐক্যের কথা বলে, এটা হতে পারে না। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ঐক্যবদ্ধ মন্তব্য করে তিনি বলেন, একাত্তরের মতো কেউ হয়ত আওয়ামী লীগকে পছন্দ করে, কেউ করে না, তবে প্রত্যেকটা মানুষ এখন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। দলে দলে ঐক্য জাতীয় ঐক্য নয়। জাতীয় ঐক্য হচ্ছে মানুষে মানুষে ঐক্য, এটা হয়ে গেছে। কাজেই কারও সঙ্গে ঐক্য করার কোন প্রয়োজন নেই।
×