ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ডাক বিভাগের হালচাল ॥ ডিজিটাল যুগে অনেক পিছিয়ে, মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে মানুষ

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ৩০ জুলাই ২০১৬

ডাক বিভাগের হালচাল ॥ ডিজিটাল যুগে অনেক পিছিয়ে, মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে মানুষ

ওয়াজেদ হীরা ॥ ভাঙ্গাচোরা দেয়াল, তার ওপর একাধিক ফাটল। দেয়ালের রং উঠে গেছে কয়েক বছর আগেই। একটি মাত্র কাঠের দরজা, তাও ভাঙ্গা। বাইরে থেকে ভাঙ্গা দরজার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিলে ভেতরের টেবিল আর চেয়ার ছাড়া আর কিছুই নেই তা স্পষ্টই দেখা যায়। আর চারপাশে স্যাঁতসেঁতে কাদা। এটি ময়মনসিংহের শিল্প এলাকা ভালুকার একটি গ্রামের ডাকঘরের দৃশ্য। যদিও প্রতিদিন নিয়ম করেই পোস্ট মাস্টার দিনে দুই বার এমন ডাকঘরের কর্মকা- সম্পাদন করেন। তাতে বিন্দুমাত্র ক্ষোভও নেই তার। বর্তমানে সারা দেশে সর্বমোট ৯ হাজার ৮৮৬টি ডাকঘর রয়েছে। এসব ডাকঘরে বর্তমানে ১১টি মূল সেবাসহ মোট দুই ডজনেরও বেশি সেবা চালু রয়েছে। বিভাগীয় ও শহর পর্যায়ের ডাকঘরগুলোর অবস্থা কিছুটা ভাল থাকলেও অধিকাংশের অবস্থাই বেশ নাজুক। এমনকি অনেক শহরের ডাকঘরের অবস্থাও ভাল নেই। সেই সঙ্গে চিঠি রাখার বাক্সগুলোর অবস্থা আরও করুণ। প্রত্যন্ত অঞ্চলের ডাকঘরে মানুষ যেতে চায় না। দেখলে মনে হয় ভূতের বাড়ি! তবে সমস্যা থাকলেও আশার কথা শুনিয়েছেন ডাক বিভাগের মহাপরিচালক প্রবাস চন্দ্র সাহা। তিনি জানিয়েছেন, সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকা-ের অংশ হিসেবে ডাক বিভাগ নিয়েও কিছু প্রকল্প চালু আছে। ক্রমান্বয়ে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মহাপরিচালক। ডাক বিভাগ একটি ঐতিহ্যবাহী সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। ডাক সেবার পাশাপাশি বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করার অভিজ্ঞতাও রয়েছে ডাক বিভাগের। ডাক বিভাগের নেটওয়ার্ক সারা দেশে বিস্তৃত এবং জনগণের খুব কাছাকাছি। তবে বর্তমান আধুনিক যুগে সরকারের ডিজিটাল উন্নয়নের ছোঁয়া লাগার পর থেকেই অনেকটা নাজুক হয়ে পড়েছে ডাক বিভাগ। ডিজিটাল অগ্রযাত্রার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না এই প্রতিষ্ঠানটি। ফলে ক্রমান্বয়ে ডাক বিভাগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে মানুষ। আর সে কারণে এক সময়ের রমরমা অবস্থানের ডাক বিভাগ এখন আর ভাল নেই। সেই সঙ্গে ভাল নেই ডাক বিভাগের কর্মচারীরাও। তবুও আধুনিক যুগের মুঠোফোনের ক্ষুদের বার্তা, ফেসবুক, টুইটার, স্কাইপিতে কথোপকথনের নানা আধুনিকতার মধ্যেও এখনও ঠায় দাঁড়িয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছে ডাক বিভাগ। অথচ একটা সময় ছিল ডাক ছাড়া চিন্তাই করা যেত না। প্রিয়জনের কোন খবরও পাওয়া যেত না এই ডাকছাড়া। আর বিশ্বের ডাক ব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ১৯৭৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ডাক সংস্থার ১৪৭তম সদস্যপদ পায় বাংলাদেশ। স্বাধীনতা পরবর্তী সেই সময়েয় সেই ডাক বিভাগের প্রতি এখন তেমন আগ্রহ নেই এই প্রজন্মের আধুনিক মানুষের। যতটুকু আছে শুধুই দাফতরিক। রাজধানীতে কয়েকটি এলাকা ছাড়া অধিকাংশ জায়গায় গেলেই দেখা যায় চিঠি রাখার বাক্সের চারপাশে আগাছার রাজত্ব। দেখলেই বোঝা যায় এটি এখন নিষ্প্র্রয়োজন। অথচ কত লাখো মানুষের খবরাখবর বহন করত এই ডাক বিভাগ। এখন সময় ও প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্টে যাচ্ছে অনেক কিছুই। পাল্টে যাচ্ছে মানুষের আচরণ ও পরিবেশ। ক্রমান্বয়ে গড়ে উঠছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। যার ছোঁয়া লেগেছে সর্বত্রই। দক্ষ জনবল আর যথাযথ প্রচারের অভাবে পিছিয়ে পড়ছে ডাক বিভাগ। এ কারণেই ডিজিটাল ডাক বিভাগের বিভিন্ন সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছান সম্ভব হচ্ছে না। ফলে, বর্তমান প্রযুক্তির এ যুগে প্রয়াত কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার রানারের দেখা মেলে না। ‘খবরের বোঝা হাতে/রানার চলেছে রানার’। কিন্তু না কোথাও দেখা মেলে না ‘সেই রানারের’। সময় ও প্রযুক্তির সঙ্গে অনেক কিছুই পাল্টালেও পুরনো আবহ ধরে রেখেছে ডাকঘর। আর সেকারণেই ই-মেইল-ইন্টারনেটের যুগে রানারের সেই ব্যস্ততা আর বর্তমানে নেই। ডাকঘরের চিঠি এখন কালের অতল গহ্বরে হারিয়ে যেতে বসেছে। যদিও এর পেছনে রয়েছে নানা কারণ। বিভিন্ন কারণে মুখথুবড়ে পড়া ডাক বিভাগকে গুনতে হচ্ছে লোকসানও। অথচ জৌলুস হারানো এই ডাক বিভাগের গত ১০-১৫ বছর আগেও ছিল সাজানো গোছানো সুন্দর সুদিন। যা এখন কেবলই স্মৃতি। তবে থেমে নেই ডাক বিভাগের কার্যক্রম। অনেক সমস্যা আর জনপ্রিয়তা হারালেও এখনও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে ডাক বিভাগ। বরং বর্তমানে আধুনিকতার সঙ্গে তাল মেলাতে চেষ্টা চালাচ্ছে সরকারী প্রতিষ্ঠানটি। ডাক বিভাগের একাধিক কর্মকর্তাও জানিয়েছেন এই প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে চালানো কর্মকা-ের কথা। সময়ের স্রোতে মানুষের জীবন বদলে যাচ্ছে। মানুষ আধুনিক হতে আরও অত্যাধুনিক জগতে যাচ্ছে। আর বর্তমান যুগে পুরনো সেই চিঠি লেখার অভ্যাস একেবারেই নেই। চিঠি লেখার সেই জায়গাটি এখন দখল করেছে মোবাইল ফোনের ক্ষুদে বার্তা, ই-মেল, টুইটার বা ফেসবুকের চ্যাটিং। প্রিয়জনদের সঙ্গে কথা বলার জন্য কেউ কেউ বেছে নিচ্ছেন ইমু, ভাইভার, হোয়াটসএ্যাপ বা স্কাইপির মতো প্রযুক্তি। ঝামেলাহীন ও দ্রুততার সঙ্গে সংযোগ পাচ্ছে প্রিয় মানুষের। বর্তমান যুগের প্রেমিক-প্রেমিকারাও বসে থাকে না চিঠির আশায়। হারিয়ে গেছে চিঠি! হারিয়ে গেছে প্রিয়জনকে কাগজে লেখার সেই যুগ। আর তার সঙ্গে হারিয়ে গেছে ডাকঘরও! কেননা ব্যস্ততা কমেছে ডাক বিভাগের। সাইকেলের বেল বাজিয়ে ডাক পিয়নের ‘চিঠি এসেছে...চিঠি...’ এমন কথাও আর শোনা যায় না। এখন আর সেই আগেকার দিনের মতো পিয়নের পানে চেয়ে থাকতে হয় না প্রিয়জনদের। আধুনিক যুগে চিঠিশূন্য এখন ডাকঘর। প্রিয়জনদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষায় এখন আর চিঠির প্রচলন নেই বললেই চলে। তবে চিঠির যে প্রয়োজনটুকু এখনও টিকে আছে তা শুধুই দাফতরিক। প্রযুক্তির ছোঁয়া আজ শহর ছেড়ে অজপাড়া গাঁয়েও পৌঁছে গেছে। তাই এসএমএস, মেইল আর ফেসবুকে চ্যাটই প্রিয়জনের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে। পরিবারের কেউ দেশের বাইরে কিংবা অন্য কোথাও অবস্থান করলে তার খোঁজ নেয়া হতো চিঠির মাধ্যমে। তাকে বাড়ির খোঁজ দেয়ার একমাত্র মাধ্যম ছিল এই চিঠি লিখন পদ্ধতি। তখন মোবাইলের মতো দ্রুত যোগাযোগের মাধ্যম ছিল না বলে সবার কাছে জনপ্রিয় মাধ্যম ছিল চিঠি। ২০০৪ সালেও দেশে ২৩ কোটি চিঠি লেনদেন হয়েছে। অথচ সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী সারা দেশে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে সাধারণ চিঠি আদান-প্রদান হয়েছে ৫ কোটি আর ২০১৪-১৫ সালে হয়েছে ৪ কোটি। আর রেজিস্টার চিঠির আদান-প্রদান হয়েছে প্রায় ৭ কোটি। এতেই বোঝা যাচ্ছে প্রতিবছর ব্যক্তিগত চিঠির ব্যবহার ক্রমেই কমছে। ডাক বিভাগের প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, বর্তমানে সারা দেশে সর্বমোট ৯ হাজার ৮৮৬ ডাকঘর রয়েছে। যার মধ্যে বিভাগীয় ডাকঘরের সংখ্যা ১৪২৬ এবং অবিভাগীয় ডাকঘরের সংখ্যা ৮৪৬০। যেখানে কর্মরত আছেন ৩৯৯০৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। এর মধ্যে বিভাগীয় কর্মকর্তা কর্মচারীর সংখ্যা ১৬৮৮৬ এবং ভাতাপ্রাপ্ত বা অবিভাগীয় কর্মচারীর সংখ্যা ২৩০২১ জন। সংখ্যার বিচারে ভাতা প্রাপ্ত কর্মচারীর সংখ্যা বেশি হলেও এরাই সবচেয়ে দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় দিন পার করছেন। কেননা এই ভাতাপ্রাপ্ত কর্মচারীদের জীবনমান উন্নয়নের পদক্ষেপ নেই বললেই চলে। মাস শেষে কর্মচারীর পদবী ভেদে কেউ এগারো শ’ কেউ বারো শ’ কেউবা ষোলো শ’ টাকা ভাতা পান মাত্র। জানা গেছে, ডাক বিভাগের মোট কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে একটি বৃহৎ অংশ ২৩০২১ জন কর্মচারী অবিভাগীয় হিসেবে ভাতাপ্রাপ্ত। এদের মধ্যে এক্সট্রা ডিপার্টমেল্টাল এজেন্ট পোস্ট মাস্টার (ইডিএসপিএম) সংখ্যা ৩২২ জন, এক্সটা ডিপার্টমেন্টাল এজেন্ট (ইডিএ) ৮১৩৮ জন, এক্সট্রা ডিপার্টমেন্টাল ডেলিভারি এজেন্ট (ইডিডিএ) ৭২৫৩ জন, এক্সট্রা ডিপার্টমেন্টাল মেইল ক্যারিয়ার (ইডিএমসি) ৫৯৬১ জন, অন্যান্য ইডি কাম ঝাড়ুদার ও নৈশপ্রহরি ১৩৪৭ জন। বর্তমান আধুনিক ও উন্নয়নের যুগে একজন এক্সট্রা ডিপার্টমেন্টাল এজেন্ট পোস্ট মাস্টার (ইডিএসপিএম) মাস শেষে ১৬৫০ টাকা ভাতা পান। এছাড়াও, প্রত্যন্ত অঞ্চলের পোস্ট অফিসের কর্মচারীদের মধ্যে ইডিএ পান ১২৬০ টাকা, ইডিডিএ পান ১২৩০ টাকা ইডিএমসি পান ১১৮০ টাকা এবং অন্যান্য ইডি কর্মচারী পান ১১৩০ টাকা মাসিক ভাতা। অথচ বর্তমান যুগে ডাক বিভাগকে সেবা দিয়ে এই সামান্য অর্থ ভাতা নিয়ে অনেকের যাতায়াত খরচও হয় না। তবুও সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। প্রত্যন্ত অঞ্চলের সঙ্গে একাধিক ই.ডি.এর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তাদের দুর্দশার কথা। জনকণ্ঠের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কেউ কেউ বার বার মুছেছেন চোখের পানি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময়কার কথা স্মরণ করে এক প্রবীণ ইডিএ কর্মচারী জানান, ঐ সময় তার তিন শ’র একটু বেশি টাকা দেয়া হতো আর সরকারী কর্মচারীরা তখন পাঁচ শ’ টাকা পেতেন। সেই পাঁচশ’ টাকা এখন কয়েক হাজারে পৌঁছালেও তাদের মাত্র ১২৬০। কথাগুলো বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন ডাক বিভাগের ইডিএ হিসেবে কর্মরত প্রবীণ এই কর্মচারী। অতীতের কথা স্মরণ করে বলেন, একটা সময় ছিল চিঠি বিলি যারা করত বা চিঠি পৌঁছে দেয়া হলে খুশি হয়ে অনেকেই বখশিস দিত। বিশেষ করে কোন মানিগ্রাম বা চাকরির চিঠিগুলোতে পরিবারে খুশি আলোর মতো ছড়িয়ে পরত। আর যে চিঠি পৌঁছে দিত তার জন্য থাকত সাধ্যমতো বখশিশ। আর এখন তো চিঠিই নেই বলে আফসোসের সুর তার কণ্ঠে। এই কাজের ভাতার টাকা দিয়ে যাতায়াত খরচও হয় না বলেও জানান তিনি। হয়ত কিছু একটা উন্নতি হবে এই সকল কর্মচারীর এ আশায় বছরের পর বছর স্বল্প টাকার ভাতায় জীবন যৌবনের সুন্দর সময় পার করেছেন হাজারো কর্মচারী। তবে সবারই যেন আশার প্রদীপ নিভে আসছে। অবিভাগীয় এই কর্মচারীদের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল তাদের যেন একটি জাতীয় স্কেল দেয়া হয়, নয়ত ভাতার পরিমাণ বর্তমান যুগের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে করা হয়। যার কোনটিই না করার কারণে আশার প্রদীপ এখন সবার কাছেই নিভু নিভু। অবশ্য ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েই এদের এক দফা ভাতা বাড়ানো হয়েছে। সে কথা জানিয়েছেন একাধিক কর্মচারী। তবে ডাক বিভাগ বলছে, ডাক বিভাগের বিদ্যমান নিয়োগ বিধিমালার শর্তানুযায়ী এসকল কর্মচারী বা ইডিদের বিভাগীয় কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দানের বা সরকারী চাকরিতে স্থায়ীকরণের সুযোগ নেই। তবে এসকল অবিভাগীয় কর্মচারীদের বিদ্যমান ভাতা হতে শতভাগ বৃদ্ধি করার একটি প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন এবং সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছেন। সে হিসেবে তথ্য-প্রযুক্তির ছোঁয়া গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে দিতে পোস্ট অফিসগুলোও ই-সেবার আওতায় আনছেন। তবে ডাক বিভাগে যেসব পুরনো কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন তাদের বেশির ভাগই কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহারে পারদর্শী নন। যারা বিভাগীয় কিংবা জেলা শহরে আছেন তাদের ছাড়া গ্রামগঞ্জে রয়েছেন এমন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ডিজিটাল পদ্ধতির সঙ্গে অনেকেই পরিচিত নন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দক্ষ এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল না হলে ডাক বিভাগের পুরোপুরি ডিজিটালকরণ সম্ভব নয়। ইতোমধ্যেই সরকার ‘তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর গ্রামীণ ডাকঘর নির্মাণ’ প্রকল্প চলমান রেখেছে। এর আওতায় ১০০০টি ডাকঘরে ই-সেন্টার হিসেবে রূপান্তর করা হবে। ১৭৩টি ডাকঘরের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে যার অধিকাংশ নির্মাণ শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে অনেকগুলোই বিদ্যুত সংযোগ দিয়ে চালু করা হয়েছে। ডাক বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই প্রকল্প চলমান আছে এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলেও আবার ডাক বিভাগের সুদিন ফিরবে। ডাক বিভাগের হারানো ঐতিহ্য নিয়ে জনকণ্ঠের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে ডাক ভবনে খোলামেলা কথা বলেন ডাক বিভাগের মহাপরিচালক প্রবাস চন্দ্র সাহা। আশার বাণী শুনিয়ে তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। ডাক বিভাগ বর্তমানে যে অবস্থায় আছে এর চেয়েও ভাল কি করে সেবা দেয়া যায় এবং জনগণ সেবা পায় সে বিষয়ে আমরা আলোচনা চলমান রেখেছি। কেননা এটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মেলানোর বিষয়ে ডাক বিভাগের মহাপরিচালক জানান, আমরা ই-কমার্স নিয়ে একটি প্রস্তাবনা দিয়েছি আশা করছি ভবিষ্যতে ডাক বিভাগ আরও উত্তম সেবা দিতে পারবে। ডাক সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন পোস্ট অফিসগুলো এক সময় যে রকম সরগরম ছিল আরও আধুনিকভাবে সেবার মান নিয়ে এগিয়ে এসে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাবে ডাক বিভাগ। তবে এজন্য সময় লাগবে বলেও জানালেন তারা।
×