ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার;###;সম্ভুনাথ দাসের জবানবন্দী

সলেমান ও ইদ্রিস আলীর সহায়তায় পাক আর্মি ২০ জনকে হত্যা করে

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৮ জুলাই ২০১৬

সলেমান ও ইদ্রিস আলীর সহায়তায় পাক আর্মি ২০ জনকে হত্যা করে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত শরীয়তপুরের সোলায়মান মোল্লা ওরফে সলেমান মৌলভী ও ইদ্রিস আলী সরদারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের নবম সাক্ষী সম্ভু নাথ দাস জবানবন্দী প্রদান করেছেন। জবানবন্দীতে সাক্ষী বলেন, আসামি সোলায়মান মোল্লা ও ইদ্রিস আলী সরদারের সহায়তায় রাজাকার ও পাকিস্তানী আর্মিরা ললিত মোহন কু-ু ও সুরেশ গুণ ওরফে শুক্রাই গুণসহ ২০ জনকে হত্যা করে। আর ১৫ জন মহিলাকে ক্যাম্পে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়। জবানবন্দী শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষ্যর জন্য আজ বৃহস্পতিবার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বুধবার এ আদেশ প্রদান করেছে। এ সময় ট্রাইব্যুনালে সাক্ষীকে সাক্ষ্যদানে সহায়তা করেন প্রসিকিউটর (সাবেক জেলা জজ) হƒষিকেশ সাহা, প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামিপক্ষে জেরা করেন এ্যাডভোকেট গাজী এমএইচ তামিম। সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম সম্ভু নাথ দাস। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৭৬ বছর। আমার ঠিকানা গ্রাম- ধানুকা, থানা- পালং, জেলা- শরীয়তপুর। ১৯৭১ সালে আমি পালং তুলাষার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতাম। আমি ১৯৯৯ সালে অবসরগ্রহণ করি। আমি বর্তমানে একটি ওষুধের দোকানের ব্যবসা করি। ১৯৭১ সালের ২২ মে বিকেল আনুমানিক ৩টার দিকে রাজাকার আসামি মোঃ সোলায়মান মোল্লা ওরফে সলেমান মৌলভী ও ইদ্রিস আলী সরদারসহ আরও কয়েকজন রাজাকার ও পাকিস্তানী আর্মি পালং থানার কারাভোগ ও মধ্যপাড়া গ্রাম আক্রমণ করে। তখন তারা গুলি করে ওই গ্রামের আনুমানিক ২০০ লোককে হত্যা করে। ওই ঘটনার পর দুই গ্রামের অনেক বাসিন্দা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে আমাদের গ্রামে আসে এবং আমি তাদের কাছ থেকে ঘটনার বিষয় জানতে পারি। পরের দিন ২৩ মে বেলা আনুমানিক ১১টার দিকে আসামিদ্বয়সহ তাদের সঙ্গীয় রাজাকার ও পাকিস্তান আর্মি মালোপাড়া আক্রমণ করে ৩০-৩৫ জন মহিলা ও পুরুষকে আটক করে মাদারীপুরের এর আর হাওলাদার জুট মিলের আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। আটককৃত মহিলাদের তিন দিন আটক রেখে ধর্ষণ করা হয় আর পুরুষদের হত্যা করা হয়। এর কয়েকদিন পর জানতে পেরে আমি মালোপাড়ায় যাই। ওই ঘটনায় ধর্ষিতা যোগমায়া মালো ও বিজয়া মালো এবং তাদের আত্মীয়স্বজনদের নিকট থেকে ওই ঘটনা বিস্তারিত জানতে পারি। এ ঘটনায় আমাদের এলাকার অধিকাংশ হিন্দু ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
×