ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দুই ম্যাচ খেলেই শেষ মুস্তাফিজ!

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ২৭ জুলাই ২০১৬

দুই ম্যাচ খেলেই শেষ মুস্তাফিজ!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘এমআরআই করানো হয়েছে। যতদূর জেনেছি, সামান্য সমস্যাও আছে। আর সমস্যা থাকা মানেই হচ্ছে, মুস্তাফিজ আর খেলবে না।’-কথাগুলো বলেছেন বিসিবির এক পরিচালক। তার কথাতে স্পষ্ট, বাংলাদেশ ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান যে চোট পেয়েছেন, তা গুরুতর না হলেও সমস্যা আছে। আর সমস্যা থাকা মানেই হচ্ছে আর মুস্তাফিজের কাউন্টি ক্রিকেটে খেলা হচ্ছে না। তার মানে দুই ম্যাচ খেলেই কাউন্টি ক্রিকেটে এবার মুস্তাফিজের খেলা শেষ হয়ে গেল। তবে এখনই বাংলাদেশে আসছেন না মুস্তাফিজ। লন্ডনেই তার চিকিৎসা চলবে। আজ রয়াল লন্ডন ওয়ানডে কাপে সাসেক্সের খেলা রয়েছে। হোভে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে খেলবে সাসেক্স। ম্যাচটিতে মুস্তাফিজ খেলবেন কিনা এ নিয়েই জল্পনা-কল্পনা। যতদূর বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, মুস্তাফিজের খেলা হচ্ছে না। রয়াল ওয়ানডে কাপে সাসেক্সের যে অবস্থা তাতে এ ম্যাচটি হারলেই বিদায় ঘণ্টা বাজবে। এমন ম্যাচেও মুস্তাফিজকে হয়ত পাচ্ছে না সাসেক্স। ওয়ানডে কাপের চেয়ে ন্যাটওয়েস্ট টি২০ ব্লাস্টে সাসেক্সের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু ২৮ জুলাই যে হোভে গ্ল্যামরগানের বিপক্ষে সাসেক্সের শেষ ম্যাচটি রয়েছে, সেটিতেও মুস্তাফিজের না খেলার সম্ভাবনাই উজ্জ্বল। যতদূর জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকেই বলা হয়েছে, সামান্য সমস্যা থাকলেও যেন মুস্তাফিজকে না খেলানো হয়। সেই সমস্যা আছেও বলে জানা গেছে।বিসিবির পরিচালক, মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বললেন, ‘যতদূর জেনেছি, এমআরআই করানো হয়েছে। এরপর আর তেমন কিছু জানি না। যদি সমস্যা থাকে, তাহলে তো স্বাভাবিকভাবেই মুস্তাফিজ খেলবে না। মুস্তাফিজকে এমন অবস্থায় তো সাসেক্সই খেলাবে না।’ কাউন্টি ক্রিকেটের প্রতি দলই অনেক বেশি পেশাদার। কোন ক্রিকেটারের সামান্য ইনজুরি থাকলেও খেলানো হয় না। প্রতিটি ক্রিকেটারের জন্যই স্বাস্থ্য বীমাও থাকে। চিকিৎসার পুরো ব্যয় ভার তারাই করে। মুস্তাফিজের সঙ্গে যখন চুক্তি হয়েছে, তখন স্বাস্থ্য বীমাও করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী মুস্তাফিজের চিকিৎসা করাবে সাসেক্সই। তাছাড়া চোট যতটুকু আছে, তা সারানোর জন্য এরই মধ্যে সাসেক্স কাজ শুরু করে দিয়েছে। বাংলাদেশের চেয়ে ইংল্যান্ডেই মুস্তাফিজের ভাল চিকিৎসা হবে বলে বিসিবিও চাচ্ছে সেখানেই চিকিৎসা হোক। এ নিয়ে বিসিবির পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন সোমবারই বলেছিলেন, ‘যেহেতু ইংল্যান্ডে আমাদের থেকে আরও ভাল চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে, তাই আমরা এ সুযোগটা হাতছাড়া করব না। ও হালকা একটা ব্যথা অনুভব করছে সেটাই আমি জানি। আমাদের ওইভাবে বলা আছে যদি হালকা ব্যথা থাকে সেই ব্যথা নিয়ে খেলবে না। স্ক্যান বা এমআরআই যাই করাবে সেটা করার পর জানা যাবে ইনজুরিটা কেমন, সেরে উঠতে কত সময় লাগবে? কিন্তু এখনই দেশে আনার কথা ভাবছি না। যদি বড় কোন ইনজুরিও হয় তাহলে আমার মতে বোর্ডেরও উচিত ওই খানে রেখে ইনজুরিটা একেবারে সারিয়ে আনা উচিত।’ সুজন আরও জানিয়েছিলেন, ‘মুস্তাফিজ নতুন একটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে চেয়েছিল বোলিংয়ে, ওত নতুন নতুন কিছু শিখতে চায় ব্যথাটা হয় তো সেখান থেকেও আসতে পারে। আপনি যদি গত বছরটা দেখেন লম্বা একটা মৌসুম কাটিয়েছে। মানসিক চাপ অনেক ছিল। মানসিক চাপ থেকে শারীরিক চাপটা আসে আসলে। আপনি যখন বড় খেলা খেলবেন ছোটখাটো চোট হবে, আঙ্গুলে লাগবে, পায়ে লাগবে, ছোট ছোট ব্যথা হবে-এটা ক্রিকেটারদের হবেই।’ মুস্তাফিজের বেলাতে যেন একটু বেশিই হচ্ছে। সেই জানুয়ারি থেকে যখনই কোন সিরিজ বা টুর্নামেন্ট আসছে, হয় মাঝপথে নয়ত শুরু থেকেই ইনজুরিতে থাকছেন মুস্তাফিজ। কোন সিরিজ বা টুর্নামেন্টই পুরোপুরি খেলতে পারছেন না। জানুয়ারিতে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলতে পারেননি। পাকিস্তান সুপার লীগে (পিএসএল) খেলতে যেতে পারেননি। এশিয়া কাপ টি২০’র ফাইনালসহ দুটি ম্যাচ খেলতে পারেননি। টি২০ বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলা হয়নি। এমনকি সুপার টেনের একটি ম্যাচ খেলেননি। টি২০ বিশ্বকাপের পর আইপিএলেও শেষের দিকে একটি ম্যাচ খেলেননি। আইপিএল থেকে ফেরার পর পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় থেকে ইনজুরি মুক্ত হয়ে যখন কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে গেলেন, দুটি টি২০ ম্যাচ খেলেই আবার ইনজুরিতে পড়লেন। এই দুটি ম্যাচ খেলেই হয়ত এবার কাউন্টি মিশনও শেষ করতে হচ্ছে মুস্তাফিজকে।
×