ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার;###;তাহের আলীর জবানবন্দী

হোসাইন ও মোসলেমের নেতৃত্বে ৩৪ হিন্দুকে হত্যা করা হয়

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২০ জুলাই ২০১৬

হোসাইন ও মোসলেমের নেতৃত্বে ৩৪ হিন্দুকে হত্যা করা হয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুই রাজাকার সৈয়দ মোঃ হোসাইন ও মোঃ মোসলেম প্রধানের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ষষ্ঠ সাক্ষী মোঃ তাহের আলী জবানবন্দী প্রদান করেছেন। জবানবন্দী শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য বুধবার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, রাজাকার সৈয়দ মোঃ হোসাইন ও মোঃ মোসলেম প্রধানের নেতৃত্বে নিকলী বাজার হতে ৩৪-৩৫ জন হিন্দুকে আটক করা হয়। পরে ওই ৩৪ জন হিন্দুকে শ্মশান খোলা নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। সাক্ষীকে জবানবন্দীতে সহায়তা করেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ। আসামি পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট আব্দুস সোবহান তরফদার। সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম মোঃ তাহের আলী, আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৫৯ বছর। আমার ঠিকানা ঃ গ্রাম- কামারহাটি, থানা- নিকলী, জেলা-কিশোরগঞ্জ। আমি বর্তমানে ব্যবসা করি। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল আনুমানিক ১৫ বছর। আমি চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আনুমানিক ২-৩ মাস পর আসামি সৈয়দ মোঃ হোসাইনের নেতৃত্বে আনুমানিক ৫০ জন রাজাকার কিশোরগঞ্জ থেকে নিকলী আসে। তারা নিকলী আসার পরে থানা সদরে চারটি ব্যাংকার তৈরি করে। সাক্ষী আরও বলেন, একাত্তরের আশ্বিন মাসের ৬ তারিখ সন্ধ্যার কিছু পূর্বে আমি নিকলী থানার সংলগ্ন নিকলী বাজারে অবস্থান করছিলাম। তখন আমি দেখতে পাই যে, ওই রাজাকাররা আনুমানিক ৩০-৩৫ জন হিন্দু টুপি পরা লোককে দামপড়া থেকে ধরে এনে নিকলী থানায় আটক করে রাখে। আসামি সৈয়দ মোঃ হোসাইন ওই রাজাকারদের কমান্ডার হিসেবেও পরিচিত ছিল। ওই লোকদের থানায় আটক রাখার পর রাজাকাররা খুবই তৎপর হয়। তখন আমি আমাদের বাড়িতে চলে আসি। ওইদিন রাত আনুমানিক আটটা সাড়ে আটটার দিকে আমাদের উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত শ্মশানখোলা থেকে প্রচ- গোলাগুলির শব্দ ও মানুষের আর্তচিৎকার শুনতে পাই। ওই সময় আমি এবং আমাদের পরিবারের সদস্যগণ ভয়ে আমাদের বাড়িতেই মাটিতে শুয়ে পড়ি। পরদিন সকাল আনুমানিক ৭টা ৮টার দিকে আমিসহ অনেক লোক শ্মশান ঘাটে গিয়ে ৩৪ জনের লাশ পড়ে থাকতে দেখি। তাদের মাথায় টুপি ছিল। যে ৩০-৩৫ হিন্দুকে আগের দিন ধরে নিকলী থানায় আটকে রাখা হয়েছিল তাদেরই শ্মশান খোলা গুলি করে হত্যা করা হয়। আমি তাদের মধ্যে পূর্ব থেকে ২-৩ জনকে চিনতাম।
×