ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টর্নেডোতে ৬ গ্রাম লণ্ড ভণ্ড

প্রকাশিত: ০৪:২২, ১৯ জুলাই ২০১৬

টর্নেডোতে ৬ গ্রাম লণ্ড ভণ্ড

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ গৌরনদী উপজেলা বার্থী ইউনিয়নে ছয়টি গ্রাম রবিবার রাতে আকস্মিক টর্নেডোর আঘাতে ল-ভ- হয়ে গেছে। ওইসব গ্রামের অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে গাছ উপড়ে প্রায় একঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এছাড়া বরিশাল পল্লী বিদ্যুত সমিতির ৩৩ কেভি লাইনের তিনটি খুঁটি ভেঙ্গে ও বিভিন্ন এলাকার ২০টি স্থানে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে, দুটি ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে বিদ্যুত সরবরাহ বিছিন্ন রয়েছে। অংসখ্য গাছপালা ও পানবরজের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রবিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বার্থী ইউনিয়নের কটকস্থল, গোরক্ষডোবা, বড়দুলালী, তারাকুপি, উত্তর বাউরগাতি, পশ্চিম বাউরগাতি গ্রামের ওপর দিয়ে দুই মিনিট স্থায়ী টর্নেডোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। টর্নেডোর আঘাতে ইউপি সদস্য বজলুর রশিদদের বসতঘরসহ আধাপাকা ২৫টি এবং গোয়ালঘর ও রান্না ঘরসহ আরও ২৫টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। ঘর ও গাছচাপা পড়ে ওইসব গ্রামের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে তারেক মাঝি, কালিপদ মজুমদার, অমল মজুমদার, মৃত্যুঞ্জয় রায়, সুবল দাস ও নিরঞ্জন ম-লকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বরিশাল পল্লী বিদ্যুত সমিতি-২ এর গৌরনদী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ফজলুল হক জানান, টর্নেডোর আঘাতে বিদ্যুত বিভাগের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৩৩ কেভির প্রধান লাইনের দুটি খুঁটি ভেঙ্গে গেছে। বিভিন্ন এলাকার আরও ২০টি স্থানের তার ছিঁড়ে দুটি ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে গেছে। ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে জানান, টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আবারও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী, রাজিবপুর ও সদর উপজেলার শতাধিক চর ও দ্বীপ চরের ৩০ হাজার মানুষ। তলিয়ে গেছে পাট, সবজি, কলাসহ আমন বীজতলা। এসব এলাকার কাঁচা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য এরশাদুল আলম জানান, পানি নামতে না নামতে আবারও বন্যার পানি বাড়ি-ঘরে ঢুকে পড়েছে। এ অবস্থায় ছেলেমেয়ে ও গবাদিপশু নিয়ে মানুষ আবারও দুর্ভোগে পড়েছে। উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বি এম আবুল হোসেন জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আবারও চরাঞ্চলের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও বন্যা দেখা দেয়ায় বন্যাকবলিত মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানায়, ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার, তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার, দুধকুমোরের পানি নুন খাওয়া পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। পদ্মায় পানি বৃদ্ধি ॥ শঙ্কায় মানুষ স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে জানান, পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রাজশাহী নগরী ঘেঁষা বেশ কিছু এলাকা ও বাঘা উপজেলার চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে নদী তীর ভাঙ্গন। নগরীর বুলনপুর ও পঞ্চবটি এলাকায় পদ্মা নদীর বাঁধের কিছু অংশ এরই মধ্যে ধসে গেছে। এ নিয়ে চিন্তিত নদীপাড়ের মানুষ। এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙ্গন শঙ্কায় নগরীর বুলনপুর এলাকায় পুলিশ লাইনের সামনে পানির মধ্যেই দায়সারাভাবে ব্লক বসানোর কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এলাকাবাসীর অভিযোগ শুষ্ক মৌসুমে বসে থেকে বর্ষায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পানির মধ্যে ব্লক বসানোর কাজ শুরু করে শুধু অর্থই অপচয় করা হচ্ছে। অপরদিকে বাঘা উপজেলার চরাঞ্চলের মানুষ অব্যাহত নদী ভাঙ্গনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। চকরাজাপুর চরের মানুষ নদী ভাঙ্গনের কারণে মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে শুরু করেছে। অনেকে এসে উঁচু এলাকায় কুড়েঘর নির্মাণ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে চরাঞ্চলের দুই শতাধিক পরিবার নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিযুল আযম বলেন, ভাঙ্গনকবলিত মানুষদের জন্য গত বছর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা এসেছিল। তবে এবার বরাদ্দ এখনও আসেনি। এলে দেয়া হবে বলে তিনি জানান। বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুল ইসলাম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্ব বাঁধ নির্মাণের, তারা এ বিষয়ে দেখভাল করে। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। নদী ভাঙ্গনের বিষয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে জানানো হবে।
×