ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আসামি গুন্নুর জামিন নাকচ

মিতু হত্যার নেপথ্যের নায়কের পরিচয় মেলেনি

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৭ জুলাই ২০১৬

মিতু হত্যার নেপথ্যের নায়কের পরিচয় মেলেনি

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ এসপি বাবুল আক্তারের পতœী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকা-ের নেপথ্যের মূল নায়ক কে- তা নিয়ে তদন্ত সংস্থা ডিবি এখনও কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেনি। মিতুকে হত্যার জন্য অস্ত্রের যোগানদাতা ভোলাইয়া ও তার সহযোগী মনির হোসেনও তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে এ ব্যাপারে কোন তথ্য দেয়নি। এর আগে প্রথম দফায় মূল শূটার ওয়াসিম ও আনোয়ার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়েছে। পুলিশের কাছে ওয়াসিম গুলি করে মিতুকে হত্যার কথা স্বীকার করলেও আদালতে বলেছে সে ফাঁকা গুলি করেছে। কিন্তু আনোয়ার বলেছে, ওয়াসিমই মূল শূটার। ওয়াসিমের সঙ্গে বর্তমানে পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী পলাতক কিলিং মিশনের নেতৃত্বদানকারী মুসাও ছুরিকাঘাত এবং গুলি করেছে। এ হত্যা মামলার অপর দুই আসামি নবী ও রাশেদ পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে। মুসার কোন হদিস নেই। তার পরিবার বলেছে মুসাকে পুলিশই ধরে নিয়ে গেছে। কিন্তু পুলিশ বলেছে, মুসাকে তারা ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে। উল্লেখ্য, মুসার নেতৃত্বে ৭ সদস্যের কিলিং মিশন মিতু হত্যাকা- সম্পন্ন করে। এ নিয়ে দেশজুড়ে চাঞ্চল্য উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ফলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজি এবং পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা চট্টগ্রামে আসেন। হত্যাকা-ের তদন্ত সংক্রান্ত আলাদা আলাদা ৫টি কমিটি করে দেন। এসব কমিটি গঠনের পর সাঁড়াশি অভিযানে হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত সকলেই পুলিশের হেফাজতে চলে আসে। এদের কাউকে কাউকে ঢাকায় নিয়ে বাবুল আক্তারের মুখোমুখি করার কথাও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে স্বীকার করেছেন। তবে এর মধ্যে মুসা ছিল কি ছিল না তা পুলিশ কাউকে জানায়নি। মিতু হত্যাকারী নেপথ্যের আসল নায়ক কে তা অনুদঘাটিত রয়েছে। পুলিশের সূত্রগুলো বলেছে, যেহেতু মুসার মাধ্যমে এ হত্যাকা- সংঘটিত হয়েছে, সেহেতু মুসাই জানে কার নির্দেশে সে মিতু হত্যা মিশন সম্পন্ন করেছে। যেহেতু পুলিশের মতে, মুসা আত্মগোপনে রয়েছে তাকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত এ রহস্য উদঘাটন সম্ভব নয়। অথচ, অপরাপর সূত্রগুলো বলছে, মুসাকে ঘটনার পরপরই পুলিশ হেফাজতে নিয়ে আসার পর সবকিছু স্বীকার করেছে সে। এমনকি নেপথ্যের নায়কের মুখোশও উন্মোচন করেছে। কিন্তু এরপরের পরিস্থিতি আর কেন এগোয়নি তা রহস্যময় হয়ে আছে। মিতুর স্বামী এসপি বাবুল আক্তারকে নিয়েও পরিষ্কার সরকারী কোন বক্তব্য নেই। তিনি ঢাকায় আছেন। গুন্নুর জামিন আবেদন নাকচ ॥ এদিকে মিতু হত্যাকা- সংক্রান্ত মামলায় গ্রেফতার সাবেক শিবির নেতা আবু নসর গুন্নুর জামিন আবেদন নাকচ করেছে আদালত। গত ৫ জুন মিতু হত্যার পর হাটহাজারী থেকে গুন্নুকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার গুন্নুর পক্ষে জামিন আবেদনের শুনানি হয় দায়রা জজ-এর আদালতে। উভয় পক্ষের দীর্ঘ শুনানি শেষে মহানগর দায়রা জজ মোঃ শাহে নুর গুন্নুর আবেদন নাকচ করে দেন। গত ৭ জুন হাটহাজারীর মুসাবিয়ার মাজার থেকে গভীর রাতে গুন্নুকে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করে। তাকে পুলিশ রিমান্ডে নেয়। রিমান্ডে তার কাছ থেকে কোন তথ্য উদঘাটন করা যায়নি। গুন্নুর পরিবারের পক্ষ থেকে মাজার কেন্দ্রিক বিরোধ নিয়ে তাকে এ মামলায় কৌশলে ফাঁসানো হয়েছে বলে সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। শুধু তাই নয়, মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে পুলিশ এ কাজ করেছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
×