ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যারিস্টার রাজ্জাক ও চৌধুরী মঈনুদ্দিনের অনুসারীরাই এসব হামলার মূল বাস্তবায়নকারী ॥ মিছবাহুর চৌধুরী

গুলশান-শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলা সুদূরপ্রসারী জামায়াতী চক্রান্তের অংশ

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ১৪ জুলাই ২০১৬

গুলশান-শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলা সুদূরপ্রসারী জামায়াতী চক্রান্তের অংশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জামায়াতে ইসলামীর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলা হয়েছে অভিযোগ করেছে ইসলামী ঐক্যজোট। জোটের চেয়ারম্যান আলহাজ মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, লন্ডনে অবস্থানরত দলটির নেতা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ও পলাতক যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মঈনউদ্দিনের অন্ধ অনুসারীরা এসব হামলার মূল পরিকল্পনাকারী। জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জনমতকে সৃষ্টিতে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ইসলামী মহাসম্মেলন করার ঘোষণাও দিয়েছে ইসলামী ঐক্যজোট। বুধবার রাজধানীর একটি রেস্তরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মিছবাহুর রহমান চৌধুরী জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে কর্মসূচী ঘোষণা করেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মনিরুজ্জামান রাব্বানী, অতিরিক্ত মহাসচিব ফিরোজ আহমেদ আতিক, দলের সিনিয়র নেতা মাওলানা মাহদুম হোসেন, মাওলানা কাজী মাসুদুর রহমান ও মাওলানা আসাদুল্লাহ তাহের সিদ্দিকী। গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় এবং ৭ জুলাই ঈদের দিন সকালে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের কাছে নজিরবিহীন হামলা চালায় জঙ্গীরা। গুলশানের হামলার জন্য আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আইএসের দায় স্বীকারের খবর এলেও শোলাকিয়ার ঘটনায় তা আসেনি। পুলিশ বলছে, দুই ঘটনায়ই আইএস নয়, নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন জেএমবি জড়িত। সংবাদ সম্মেলনে মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেন, গত ৪০ বছরের মধ্যে একদিনের জন্যও স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থামায়নি। আমি আজ অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, এই জঙ্গী হামলা আন্তর্জাতিক কোন কারণে নয় বরং জামায়াত-শিবিরের সুদীর্ঘ পরিকল্পনার অংশ। তাদের ষড়যন্ত্রের কেন্দ্রীয় স্থান লন্ডন। ব্যারিস্টার রাজ্জাক ও চৌধুরী মঈনউদ্দিনের কিছু অন্ধ অনুসারী লন্ডন থেকে বাংলাদেশে জঙ্গী হামলার পরিকল্পনা তৈরি করে। এসব হামলার কারণে বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা জামায়াতের বিরুদ্ধে অবস্থানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে মনে করেন তিনি। বিএনপির কর্মী ও সমর্থকরা বুঝতে পেরেছেন, জামায়াতী বেড়াজালে আবদ্ধ খালেদা জিয়াকে উদ্ধার করতে হবে। তাই তারা দিন দিন জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে অবস্থানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যে কারণে জামায়াত তাদের সর্বশেষ আঘাত হানা শুরু করেছে। এই আঘাতের অংশ হিসেবে গুলশান ও শোলাকিয়ায় জামায়াত ইতিহাসের জঘন্য জঙ্গী হামলা চালায়। তিনি আরও বলেন, আমরা আগেই বলেছিলাম কওমী মাদ্রাসার কিছুসংখ্যক ছাত্রকে জামায়াত ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু সর্বনাশী হামলা করাবে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত তরুণ-যুবকদের দিয়ে ভাবিনি। তাদের (জামায়াত) ষড়যন্ত্রের কেন্দ্রস্থল হলো লন্ডন। দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদ-াদেশ পাওয়া চৌধুরী মঈন উদ্দিনের কিছু অন্ধ অনুসারী লন্ডনে বসে বাংলাদেশে জঙ্গী হামলার চক্রান্ত করবে এ কথাও আমরা বহুবার বলেছি। বাস্তবেও সেটিই ঘটেছে। গত ৪০ বছরের মধ্যে একদিনের জন্যও স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থামায়নি উল্লেখ করে মিছবাহুর রহমান বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের বছর দু’য়েক পর এই ব্যারিস্টার রাজ্জাক ও চৌধুরী মঈন উদ্দিন রাজাকারকুল শিরোমণি গোলাম আযমের নির্দেশে আরাকান থেকে বাংলাদেশে হামলা চালানোর ষড়যন্ত্র করেছিল। এই হামলার উদ্দেশ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী জামায়াত নেতারা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে গভীর আঁতাত গড়ে তোলে। বাংলাদেশে সব জঙ্গী সংগঠনের মাদার অর্গানাইজেশন জামায়াত উল্লেখ করে মিছবাহুর রহমান বলেন, যে সমস্ত তরুণ ধরা পড়ছে, তাদের জেএমবি, হিযবুত তাহ্্রীর অথবা আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সদস্য হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এদের সবার মাদার অর্গানাইজেশন যে জামায়াত, সে কথা বলা হচ্ছে না। কর্মসূচী ॥ মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে মাসব্যাপী কর্মসূচী ঘোষণা করেন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে ৩০ জুলাই ঢাকায় ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশ, ১ আগস্ট ওলামা মাশায়েখ সম্মেলন, ৬ আগস্ট ঢাকায় মা’ সমাবেশ ও ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায় মহাসম্মেলন।
×