স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় চলচ্চিত্র নীতিমালার খসড়ায় নানা অসঙ্গতির কথা তুলে ধরে তা দ্রুত সংশোধনের তাগিদ দিয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা, প্রযোজক ও চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের নেতারা। তাদের অভিযোগ, খসড়া নীতিমালায় ইতিবাচক বিভিন্ন দিক থাকলেও বেশ কিছু অযৌক্তিক বাধ্যবাধকতা চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। সম্প্রতি তথ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা সংশোধনে গঠিত বিশেষ কমিটি জাতীয় চলচ্চিত্র নীতিমালা পরিবর্তন ও সেন্সর বোর্ডের নাম বদলে ফিল্ম সার্টিফিকেশন বোর্ড রাখার খসড়া প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। এই প্রস্তাবের পক্ষে বেশিরভাগ প্রযোজক-পরিচালকরা থাকলেও বিকল্প ধারার নির্মাতারা বলছেন, চলচ্চিত্র সংসদ ও স্বাধীন নির্মাতাদের প্রণোদনা না দেয়ায় স্বতন্ত্র শিল্পমাধ্যম হিসেবে চলচ্চিত্রকে গড়ে তুলতে এ নীতিমালা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারবে না। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজার প্রস্তাবিত নীতিমালাকে ইতিবাচক মন্তব্য করলেও কয়েকটি ক্ষেত্রে আপত্তির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, চলচ্চিত্র নীতিমালায় নানা বিধিনিষেধ নিয়ে আমাদের আপত্তির কথা বিশেষ কমিটিকেও বলেছি। বিশেষ করে রাষ্ট্রের নানা দুর্নীতি, প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের অপকর্ম নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে যে অযৌক্তিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে সে বিষয়টা বলেছি। এছাড়াও চলচ্চিত্র নির্মাণ সংক্রান্ত বেশ কিছু ইস্যুতে আমরা আমাদের দাবি জানিয়েছি। গুলজার চলচ্চিত্রে গ্রেডেশন সিস্টেম চালুর উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, কোন চলচ্চিত্রটি কোন বয়সী মানুষের জন্য উপযোগী, তা আসলেই নির্ধারণ করে দেয়া উচিৎ। এটি ভাল উদ্যোগ। প্রবীণ চলচ্চিত্রকার ও প্রযোজক কাজী হায়াৎ সিনেমা হল সংস্কার ও চলচ্চিত্র খাতে সরকারি অনুদানের পরিমাণ আরও বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন। পরিচালক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য বদিউল আলম খোকনের মতে, নীতিমালা তৈরির আগেই পরিচালকদের জানাতে হবে কী ধরনের চলচ্চিত্র অনুমোদনযোগ্য হবে। নীতিমালা পরিবর্তনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সমিতির যুগ্ম মহাসচিব এস এ হক অলিকও। তিনি বলেন, ডিজিটাল চলচ্চিত্রের জন্য নতুন নীতিমালা প্রণয়ন খুব দরকার ছিল। জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজের মতে, অনুমতি নিতে গিয়ে চলচ্চিত্রের প্রচার ঝুলে যেতে পারে। তিনি বলেন, আমার চলচ্চিত্রের শূটিং আমি যে মডেলের রেড ক্যামেরায় করব, সে মানের ক্যামেরা তো বিএফডিসিতে নেই। বিএফডিসির ইকুইপেমেন্টের উপর আমার আস্থা নাই থাকতে পারে। এক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলে আমি মানব না। নীতিমালায় চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কমিটির সদস্যদের ভূমিকা কী হবে, তারা কীভাবে সরকারি অনুদান পাবেন সে সম্পর্কে নীতিমালায় সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা থাকা উচিৎ বলে মত জানিয়েছেন চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির সাবেক আহ্বায়ক ও সেন্সর বোর্ডের রিভিউ কমিটির সদস্য নাসিরউদ্দিন দিলু।