ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অনন্য রেজা করিম

রিচা চাড্ডার এগিয়ে চলা

প্রকাশিত: ০৭:৩০, ৯ জুন ২০১৬

রিচা চাড্ডার এগিয়ে চলা

বলিউডে এখন বায়োপিক মুভির হিড়িক চলছে। আলোচিত, স্মরণীয়-বরণীয়, বিতর্কিত ব্যক্তিদের বাস্তব জীবনের নাটকীয় ঘটনাবলীকে উপজীব্য করে একের পর এক সিনেমা হচ্ছে বলিউডে। যা দেখতে দর্শক উৎসাহী হচ্ছেন কখনও, আবার কখনও তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তারপরেও বায়োপিক ধাঁচের ছবি নির্মাণ থেমে নেই, চলছে। চলতি সপ্তাহে মুক্তি পাচ্ছে ‘ক্যাবারেট’ ছবিটি। এটি বায়োপিক মুভি হিসেবে ঘোষণা দেননি নির্মাতা। তবে এক সময়ের আলোচিত জনপ্রিয় সাড়া জাগানো নর্তকী অভিনেত্রী হেলেনের বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি হিসেবে ‘ক্যাবারেট’ কে আখ্যা দিচ্ছেন কেউ কেউ। ছবিটি প্রযোজনা করেছেন মহেশভাট তনয়া পূজা ভাট। তিনিও এ বিষয়ে পরিষ্কারভাবে কিছু খুলে বলেননি। তবে একজন ক্যাবারে নর্তকীর জীবনের নানা ঘাত প্রতিঘাতে, চড়াই-উৎরাই এর গল্প দর্শকদের আলোড়িত করবে, যে চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে নিজেকে পুরোপুরি ঢেলে দিয়েছিলাম, ‘ক্যাবারেট,’ স্রেফ একটি নাচগান সর্বস্ব হালকা সিনেমা নয়, এর মাধ্যমে কিছু সামাজিক বক্তব্য এবং কঠিন বাস্তবতা তুলে ধরার চেষ্টা রয়েছে, কথাগুলো এ ছবির নায়িকা রিচা চাড্ডার। তিনি এ ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ‘ক্যাবারেট’ ছবিতে তার অভিনীত চরিত্রটি এক নাইটক্লাব নর্তকীর, নাইট ক্লাবে যারা নেচে গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করে সেইসব মেয়েদের জীবনের সুখ দুঃখ আনন্দ বেদনা স্বপ্ন দুঃস্বপ্নের অনেক জানা অজানা বিষয় তুলে ধরা হয়েছে ‘ক্যাবারেট’ ছবিতে। অনেক বছর আগে মধুর ভা-ারকারের তেমনি এক ছবি ‘চাঁদনী বার’ এ একজন বার ড্যান্সারের ভূমিকায় অভিনয় করে কমেডি দুর্দান্ত চমক সৃষ্টি করেছিলেন মেধাবী অভিনেত্রী টাবু। বলিউডে ২০০৮ সাল থেকে আছেন রিচা চাড্ডা। তার অভিষেক হয়েছিল সিনেমা ‘ওয়ে লাকি! লাকিওয়ে’র মাধ্যমে। বলিউডে ভিন্নধারার সিনেমা নির্মাণে আগুয়ান পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপের ‘গ্যাংস অব ওয়াসিপুর’ এ সর্বপ্রথম নাগমা খাতুন চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয়ের মাধ্যমে সবার গভীর মনোযোগ আকর্ষণ করেন রিচা। তখনই তিনি প্রমাণ করে দিয়েছিলেন নিজের যোগ্যতা। ‘গ্যাংস অব ওয়াসিপুর’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য রিচা ফিল্মফেয়ার ক্রিটিকস অ্যাওয়ার্ড এ সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারটি নিজের ঝুলিতে পুরেছিলেন। এরপর ‘ফুকরে,’ ‘গলিয়ো কী রাসলীলা-রামলীলা,’ ‘মাসান,’ ম্যায় আউর চার্লিস,’ ‘চক এ্যান্ড ডাস্টার,’ এবং সর্বশেষ ‘সর্বজিৎ,’ ছবিতে তাকে দেখা গেছে গুরুত্বপুর্ণ নারী চরিত্রে। প্রতিটিতেই রিচা তার অভিনীত চরিত্রে অসাধারণত্বের প্রকাশ ঘটিয়েছেন। বলিউডের গতানুগতিক গ্ল্যামারাস রোমান্টিক নায়িকার খোলসে নয়, একজন যথার্থ ভাল অভিনেত্রী হিসেবে নিজের সক্ষমতা প্রমাণে সচেষ্ট ছিলেন তিনি। কয়েক সপ্তাহ আগে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সর্বজিৎ’ ছবিতে রিচা চাড্ডাকে দেখা গেছে সর্বজিৎ-এর বিরহকাতর দুঃখী স্ত্রী সুখপ্রীত এর ভূমিকায়। পর্দায় স্বল্পকালীন উপস্থিতি হলেও রিচার অপূর্ব অভিনয় দর্শক সমালোচক সবার অকুণ্ঠ প্রশংসা অর্জন করেছে। জানা গেছে, ‘সর্বজিৎ’ এ রিচা অভিনীত অনেক দৃশ্য সম্পাদনার টেবিলে বাদ দেওয়া হয়েছে এ ছবির প্রধান তারকা ঐশ্বরিয়া রাইকে হাইলাইট করতে। এ জন্য ঐশ্বরিয়ার বিশেষ চাপ ছিল। কাটছাটের পরেও ‘সর্বজিৎ’ ছবিতে রিচা পর্দায় যতক্ষণ ছিলেন তাতেই আবিষ্ট করেছেন সবাইকে। ‘অভিনীত চরিত্রটিকে যথার্থভাবে ফুটিয়ে তুলতে আমি সচেষ্ট থাকি সব ছবিতেই, ‘সর্বজিৎ এ ছিলাম একইভাবে, আমাকে দর্শক যতটা দেখার সুযোগ পেয়েছেন তাতেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। অনেক প্রশংসা শুনছি সবার মুখে, আমি সার্থক, আমি খুশি, বলেন রিচা চাড্ডা। তাকে আগামীতে দেখা যাবে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘দেবদাস’ নিয়ে বলিউড নির্মাতা সুধীর মিশ্রের ভিন্নতর প্রচেষ্টা ‘আউর দেবদাস’ ছবিতে। এখানে পার্বতীরূপে আসছেন রিচা। এচাড়াও অনুরাগ কাশ্যাপের নতুন একটি সিনেমায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন তিনি। মূলত রিচাকে বলিউডে লাইম লাইটে আনতে অনুরাগ অনেক বড় অবদান রেখেছেন। আবার অনেক দিন পর তার কোন সিনেমায় অভিনয় করতে পারাটাকে চমৎকার অভিজ্ঞতা হিসেবে বিবেচনা করছেন বলিউডের এই গুণী অভিনেত্রী। পাঞ্জাবের অমৃতসরে জন্ম হলেও রিচা বেড়ে উঠেছেন দিল্লী শহরে। মঞ্চনাটক এবং মডেলিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে বলিউডে পা রেখেছিলেন। নিজেকে সব ধরনের সিনেমায় গ্রহণযোগ্য করে তুলতে সচেষ্ট তিনি। তারপরও এই সময়ে বলিউডের ভিন্ন ধারার সিনেমায় শক্তিশালী অভিনেত্রীরূপে সর্বমহলে পরিচিত এবং জনপ্রিয় করে তুলতে সক্ষম হয়েছেন ২৯ বছর বয়সী রিচা চাড্ডা। বলিউডে নিজেকে যোগ্য করে তুলতে গিয়ে নানামুখী চাপের কথা স্বীকার করে রিচা বলেন, একজন সাধারণ মেয়েকে হয়ত তেমন চাপের মধ্যে কাটাতে হয় না সময়, কিন্তু শো বিজে বিশেষ করে বলিউডে নিজেকে ফিট করে তুলতে বিভিন্ন জনের কথা রাখতে গিয়ে আমি যে ধরনের পীড়নের শিকার হয়েছি তাতে মানসিক ভারসাম্য হারানোর অবস্থা হয়েছে আমার। যে কারণে খাবার গ্রহণের অনীহা নিদ্রাহীনতা, অস্থিরতার মধ্যে আমাকে দিন পার করতে হয়েছে।
×