ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শেষ হলো নাট্যচক্রের নাট্যোৎসব সপ্তবর্ণা

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ৪ জুন ২০১৬

শেষ হলো নাট্যচক্রের  নাট্যোৎসব সপ্তবর্ণা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিকেল থেকেই গানে গানে মুখরিত হয়ে ওঠে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার বহিরাঙ্গন। বিকেলে সঙ্গীত পরিবেশনা শেষে সন্ধ্যায় নাট্য প্রদর্শনীর মাধ্যমে শেষ হলো নাট্যদল নাট্যচক্র আয়োজিত সপ্তবর্ণা নাট্যোৎসব। দলের সহ-সভাপতি নাট্যকার ও নির্দেশক গোলাম সারোয়ার নির্দেশিত সাতটি নাটক নিয়ে জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে সপ্তাহব্যাপী এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার ছিল উৎসবের শেষ দিন। নাট্য প্রদর্শনীর আগে সন্ধ্যায় ছিল উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠান । সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাংবাদিক কামাল লোহানী। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম এবং বিশিষ্ট নাট্যকার, নির্দেশক ও অভিনেতা মামুনুর রশীদ। সভাপতিত্ব করেন নাট্যক্রের সভাপতি নাট্যব্যক্তিত্ব ম হামিদ। অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন নাট্যকার ও নির্দেশক গোলাম সারোয়ার। সমাপনী আলোচনা শেষে মঞ্চস্থ হয় নাট্যচক্র পরিবেশিত নাটক ভদ্দরনোক। মলিয়েরের রচনা অবলম্বনে প্রযোজনাটির রূপান্তরের পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন গোলাম সারোয়ার। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেচেন তনিমা হামিদ, রবিউল মাহমুদ, ম. হামিদ, শামীম আহামেদ, মানজারুল আলম, পরিমল কুমার পাল, রিমা প্রমুখ। সুরাশ্রিত রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী ॥ এক আয়োজনে স্মরণ করা হলো বাঙালীর মননের দিশারী দুই কবিকে। জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে জানানো হলো শ্রদ্ধাঞ্জলি। সুরে সুরে সাজানো হয় কবিযুগলকে নিবেদিত আয়োজন। সঙ্গে ছিল কবিতা আবৃত্তি ও শ্রুতিনাটক। শুক্রবার বিকেলে গান-কবিতার সম্মিলনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা ইউনিভার্সিটি এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন। অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের এ্যালামনাই ফ্লোর মিলনায়তন। অনুষ্ঠানের শুরুতে ছিল সংক্ষিপ্ত কথন। দুই কবিকে নিবেদিত শুভেচ্ছা আলোচনায় অংশ নেন এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন কর্মকার, শিক্ষা ও গ্রন্থাগার বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম ও রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী ফাহিম হোসেন চৌধুরী। আলোচনায় রঞ্জন কর্মকার বলেন, বাঙালীর সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা কিংবা সংকটে যাপিত জীবনের নিত্যসঙ্গী রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল। তাঁরা হয়ে আছেন অনুপ্রেরণার উৎস, আলোর দিশারী ও শক্তির আঁধার। সেই সুবাদে মুক্তিযুদ্ধের সময়ও রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের গান শুনে আমরা শক্তি ও সাহস অর্জন করেছি। তাঁদের সৃষ্টির অনুপ্রেরণায় শত্রুর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছি দ্বিধাহীন চিত্তে। সাংস্কৃতিক পরিবেশনা পর্বের শুরুতেই পরিবেশিত হয় নজরুলের সৃষ্টি অবলম্বনে শ্রুতিনাটক খুকু ও কাঠবিড়ালী। উপস্থাপন শিশু সংগঠনের অন্তরঙ্গের শিল্পীরা। নজরুলের সব্যচাচী কবিতাটি পাঠ করেন কাদের তালুকদার। এরপর ছিল রবীন্দ্রসঙ্গীত ও নজরুলসঙ্গীত পরিবেশনা। শুরুতেই সুর ছড়ান রোকাইয়া হাসিনা নীলি। রবীন্দ্রনাথকে আশ্রয় করে সুললিত কণ্ঠে গেয়ে শোনানÑ সখী, ভাবনা কাহারে বলে/সখী, যাতনা কাহারে বলে ...। এছাড়াও তিনি পরিবেশন করেন ‘আমার পরান যাহা চায়’ ও ‘তোমার চরণে’। নজরুলকে আশ্রয় করে ইয়াসমিন মুশতারী গেয়ে শোনান খেলিছো এ বিশ্বলয়ে/বিরাট শিশুর আনমনে/প্রলয় সৃষ্টি তব পুতুল খেলা ...। তাঁর পরিবেশিত অন্য গানগুলোর শিরোনাম ছিল ‘আমি চিরতরে দূরে চলে যাব’, ‘শাওন আসিল ফিরে’ ও ‘শাওন রাতে যদি স্মরণে আসে মোরে’। কণ্ঠশীলনের স্মরণে রবীন্দ্র-নজরুল ॥ রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলকে স্মরণ করল আবৃত্তি সংগঠন কণ্ঠশীলন। ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনের রমেশচন্দ্র দত্ত স্মৃতি মিলন কেন্দ্রে শুক্রবার সন্ধ্যায় রবীন্দ্রনাথের ক্ষণিকা কাব্যগ্রন্থের কিছু কবিতা নিয়ে হয় প্রথম পরিবেশনা। নজরুলের নানা ধরনের কবিতার সংকলন ছিল দ্বিতীয় পরিবেশনায়। ‘হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ, চেতনায় নজরুল’ ॥ শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা প্লাজার দোতলায় ‘হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ, চেতনায় নজরুল’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলার মুখ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় সাজানো অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল ও বুলবুল মহলানবীশ। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সাইফুল আজম বাশার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সন্জীব দাস অপু। আলোচনা শেষে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীমের সঞ্চালনায় সাংস্কৃতিক আয়োজনে সংগঠনের শিল্পীরা রবীন্দ্রসঙ্গীত ও নজরুলসঙ্গীত পরিবেশন করেন। টিএসসিতে দিনব্যাপী ফল উৎসব ॥ দেশী ফল নিয়ে শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে দিনব্যাপী ফল উৎসব। বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় সাংস্কৃতিক সংগঠন দৃষ্টি এ ফল উৎসবের আয়োজন করে । টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ায় সকাল সাড়ে ১০টায় ২৩তম এ ফল উৎসব শুরু হয়। ফল উৎসবে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অর্ধশতাধিক ফলের প্রদর্শনী হয়। ২৩ জন দুস্থ শিশুর হাতে ফলের ঝুড়ি তুলে দিয়ে উৎসব উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বি মিয়া। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ওসমান গনী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক রূপা চক্রবতী ও দৃষ্টির উপদেষ্টা সি এম কয়েস সামি। সভাপতিত্ব করেন দৃষ্টির সভাপতি মোশাররফ হোসেন। বঞ্চিত শিশুদের মধ্যে ফল বিতরণ, শিশু চিত্রাঙ্কন ও সাংস্কৃতিক আয়োজনে মুখর ছিল সারা দিন। ক্যাফেটিরার বারান্দায় অনুষ্ঠিত হয়েছে শিশুদের অঙ্কন প্রতিযোগিতা। উৎসবে দুই শতাধিক শিশু অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিরা টি. এস. সিতে ফলজ বৃক্ষরোপণ করেন। গণসঙ্গীত উৎসব ॥ শেরপুর থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, ‘ছিড়ে ফেল দৃঢ় হাতে চক্রান্তের জাল’Ñ এ সেøাগানকে ধারণ করে শেরপুরে দু’দিনব্যাপী ‘বৃহত্তর ময়নসিংহ জেলা গণসঙ্গীত উৎসব’ শুরু হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উৎসব আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সভাপতি, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুস। এর আগে নেতৃবৃন্দ শহীদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন এবং মঞ্চে পরিবেশিত হয় সূচনা সঙ্গীত। উদ্বোধনী ভাষণে গোলাম কুদ্দুস বলেন, সংস্কৃতি জাতির পরিচয় নির্ণায়ক। সুষ্ঠু সাংস্কৃতিক চর্চা মানুষের চেতনা ও বোধকে জাগ্রত করে। তাই তৃণমূল পর্যন্ত সাংস্কৃতিক চর্চার বিস্তৃতি ঘটাতেই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় দেশের বৃহত্তম ১৯ জেলায় গণসংঙ্গীত উৎসব হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদিচ্ছায় সংস্কৃতির দিক থেকেও বাংলাদেশ আজ অনেকটাই অগ্রসরমান। কিন্তু একটি উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী মানুষের সাংস্কৃতিক চেতনায় কুঠারাঘাতের মাধ্যমে মূল্যবোধকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, সুষ্ঠু সাংস্কৃতিক চর্চা ছাড়া মৌলবাদের
×