ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরায় স্বজন ও বন্ধুবান্ধবরা আনন্দে আত্মহারা

ভারত জয় শেষে মায়ের কোলে ফিরলেন কাটার মাস্টার মুস্তাফিজ

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২ জুন ২০১৬

ভারত জয় শেষে মায়ের কোলে ফিরলেন কাটার মাস্টার মুস্তাফিজ

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) শেষে মঙ্গলবার রাতে মায়ের কোলে ফেরেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাতক্ষীরার কৃতী সন্তান কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি রাত এগারোটায় গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান। তাকে পেয়ে তার বাবা আবুল কাশেম, মা মাহমুদা বেগমসহ আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান। আত্মীয়স্বজন আর বন্ধুদের সামাল দিয়ে মুস্তাফিজ ঘুমাতে যান রাত সাড়ে তিনটায়। আর বুধবার সকাল থেকেই বৃষ্টি। তাই ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরিই হয়েছে দ্য ফিজ খ্যাত কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমানের। ঘুম থেকে ওঠার পরপরই প্রথমে মা মাহমুদা খাতুনসহ পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীদের হাতে অনেকটা বাধ্য হয়েই মিষ্টিমুখ করতে হয়েছে তাকে। এরপর বাড়ির উঠানে বের হতেই অপেক্ষমাণ সংবাদ কর্মীদের ক্যামেরা দেখে দেন ভোঁ দৌড়। এক দৌড়ে ঢুকে যান ঘরের ভেতরে। এর আগে মঙ্গলবার ঢাকা থেকে নভো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সন্ধ্যা সাতটা ১৮ মিনিটে যশোর বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান আইপিএলের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়। এ সময় বিমানবন্দরে অপেক্ষমাণ ছিলেন মুস্তাফিজুরের বাবা আবুল কাশেম, খালু আনিসুর রহমান, বড় ভাই মোকলেছুর রহমান পল্টুসহ তার বন্ধুরা। বাবাকে ছেলের কিনে দেয়া নতুন গাড়ি নিয়ে মুস্তাফিজকে আনার জন্য বিকেলে তারা কালীগঞ্জের তেঁতুলিয়া গ্রাম থেকে যশোর বিমানবন্দরে যান। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর খালু আনিসুর রহমান মুস্তাফিজকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পরে সেখানে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে রওনা দেন সাতক্ষীরা উদ্দেশে। রাত পৌনে দশটার দিকে তিনি শহরের কামালনগর এলাকায় খালু আনিসুর রহমানের বাড়িতে যান। এ সময় তাকে একনজর দেখার জন্য কামালনগরে জড়ো হয় হাজারো মুস্তাফিজ ভক্ত। সেখানে খালুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কাটিয়ে রওনা দেন কালীগঞ্জের তেঁতুলিয়ার উদ্দেশে। বুধবার সকালে সাংবাদিকদের দেখে মোস্তাফিজ ঘরের মধ্যে পালিয়ে গেলেও পরে স্থানীয় তারালী ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক ছোটর অনুরোধে বের হয়ে আসেন ঘর থেকে। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হ্যাঁ, না বাদে আর কোন কথাই বলেননি তিনি। আইপিএলে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ ও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে বলেন, ভাল। আর সতীর্থদের বাংলা শেখানোর বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, তারা ইচ্ছা করে শিখেছে। মা মাহমুদা খাতুন বলেন, ওর জন্য দুপুরে দেশী মুরগি ও খিচুড়ি রান্না করা হয়েছে। ও দেশী মুরগি খেতে পছন্দ করে। আর মুস্তাফিজ বলেন, মা যা রান্না করে তাই ভাল লাগে। এদিকে, বুধবার সকালে জনতা ব্যাংক উজিরপুর শাখার গ্রাহক দ্য ফিজ মুস্তাফিজুর রহমানকে সংবর্ধনা দিতে আসেন শাখা ব্যবস্থাপক শেখ শামীম আহম্মেদসহ অন্যান্য কর্মকর্তা। একটি ফ্রিজসহ উপহারের পশরা নিয়ে আসেন কোকাকোলা কোম্পানির কালীগঞ্জ উপজেলা রিসোর্স অফিসার হাবিবুর রহমান। তবে বাড়ি থেকে বের হওয়া একটু কষ্টসাধ্য বলে জানালেন মুস্তাফিজের সেজ ভাই মোখলেছুর রহমান পল্টু। বললেন, বিসিবির নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাছাড়া কোন জায়গায় গেলে সবাই ঘিরে ধরে। সুস্থভাবে চলাফেরা করাটা দায় হয়ে যায় আমাদের। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, আইপিএলে ভাল পারফর্ম করার জন্য সাতক্ষীরার কৃতী সন্তান মুস্তাফিজুর রহমানকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেয়ার একটা প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল। কিন্তু বিশেষ কারণে তা বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে কোন সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনার বিষয়টি আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মুস্তাফিজুর রহমানের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তাকে মিষ্টিমুখ করানো হবে বলে জানানো হয়।
×