ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

নীতি সহায়তার ঘোষণায় সূচকের উর্ধগতি

প্রকাশিত: ০৩:৩৮, ৮ মে ২০১৬

নীতি সহায়তার ঘোষণায় সূচকের উর্ধগতি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব ধরনের মূল্য সূচক বাড়লেও কমেছে লেনদেন। আলোচিত সপ্তাহে লেনদেন কমেছে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। তবে আলোচ্য সপ্তাহে মে দিবসের ছুটি থাকায় চার কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। সেই হিসেবে সার্বিকভাবে সেখানে গড় লেনদেন আগের তুলনায় বেড়েছে। ফলে পুঁজিবাজারে হারাতে থাকা বিনিয়োগকারীরা কিছুটা হলেও আশার আলো দেখতে পাচ্ছে। তবে ঢাকা স্টক একচেঞ্জের পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, পুঁজিবাজারে ভাল শেয়ার আসার কোন বিকল্প নেই। কিছু ভাল কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলেও আবারও বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে ঝুঁকে পড়বেন। বিনিয়োগকারীদেরও বোঝাতে হবে এখানে এলে ভবিষ্যতে ভাল হবে। কোন আশ্বাস হয় বাজারকে নিজের গতিতে চলতে দেয়াই সবার জন্য মঙ্গলের বলেও তিনি অভিমত দেন। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত সোমবারে পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বাড়তি বিনিয়োগ সমন্বয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সহায়তার বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়। সেখানে অতিরিক্ত বিনিয়োগে থাকা ১০টি ব্যাংককে পৃথক পৃথকভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আবেদন করতেও বলা হয়। মূলত এই ঘোষণার পরেই পুঁজিবাজারে সূচকের বড় ধরনের উর্ধগতি দেখা দেয়। একইসঙ্গে বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) সোমবারে বাজারের বড় মার্চেন্ট ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে লেনদেন বাড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলে। সব মিলে বাজার সংশ্লিষ্টদের সমন্বিত প্রয়াসে বাজারে সূচক ও লেনদেনের গতি বাড়ে। সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় জানা গেছে, একদিন ছুটি থাকার কারণে গত সপ্তাহে আগের সপ্তাহের চেয়ে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৩৫ কোটি ২০ টাকার। আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৭৪৫ কোটি ৯১ লাখ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৭৮১ কোটি ১২ লাখ টাকার। সার্বিক লেনদেন কমলেও গড় লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৩৬ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৩৫৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগের সপ্তাহের চেয়ে মোট লেনদেন বেড়েছে ২২ দশমিক ৫৩ শতাংশ। সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে ৬ দশমিক ৪২ শতাংশ। সপ্তাহের শুরুতে পতন হলেও বৃহস্পতিবারে ডিএসইর প্রধান সূচক সার্বিক সূচক বা ডিএসইএক্স সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ বা ১১১ দশমিক ১০ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই৩০ সূচক বেড়েছে ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ বা ৫২ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট। অপরদিকে, শরীয়াহ বা ডিএসইএস সূচক বেড়েছে ৩ দশমিক ১২ শতাংশ বা ৩১ দশমিক ৯৯ পয়েন্টে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩২৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২০১টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ১০০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫টির। আর লেনদেন হয়নি ৩ কোম্পানির শেয়ার। আলোচিত সপ্তাহে প্রকৌশল খাতে ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ ও ব্যাংক খাতে ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ গেইন বেড়েছে। আর পেপার এ্যান্ড প্রিন্টিং খাতে ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ, আইটি খাতে ১ দশমিক ২৮ শতাংশ ও সিরামিক খাতে দশমিক ৬০ শতাংশ গেইন কমেছে। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) আলোচিত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৯৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার। প্রধান সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। তালিকাভুক্ত মোট ২৬৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৬১টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ৭৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির।
×