ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মোহামেডান-গাজী গ্রুপ এগিয়ে যাওয়ার লড়াই আজ

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ৬ মে ২০১৬

মোহামেডান-গাজী গ্রুপ এগিয়ে যাওয়ার লড়াই আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়ানডে ও টি২০তে বাংলাদেশের সেরা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার দল কলাবাগান ক্রীড়া চক্র (কেসি) কী একটি জয়ও পাবে না? টানা তিন ম্যাচ হারের পর মাশরাফির দলকে নিয়ে এ প্রশ্নই উঠছে। সেই প্রশ্নের উত্তরও বোধহয় আজই মিলে যাবে। টানা তিন ম্যাচে হারা ক্রিকেট কোচিং স্কুলের (সিসিএস) মুখোমুখি হবে কলাবাগান কেসি। যে ম্যাচটিতে তিন ম্যাচেই হারা দুই দলের লড়াই হবে। আর তাতে মাশরাফির দলের জয়ের সম্ভাবনাই বেশি। জিতলেই চার ম্যাচে এক জয় পাবে মাশরাফির দল। আর ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে হোঁচট খেলে দীর্ঘশ্বাস আরও দীর্ঘায়িত হবে মাশরাফি এ্যান্ড গংয়ের। উল্টো সিসিএস বাজিমাত করে নেবে। দুই দুর্বল দলের মধ্যকার কঠিন লড়াইয়ের আশা যেখানে করা হচ্ছে, সেখানে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড ও গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের মধ্যকার এগিয়ে যাওয়ার লড়াই হবে। দুই দলই তিন ম্যাচে দুটি করে জয় পেয়েছে। আজ যে দল জিতবে, তারাই পয়েন্ট তালিকায় এগিয়ে যাবে। এমন দিনে তিন ম্যাচে তিন পয়েন্ট পাওয়া লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের মুখোমুখি হবে এক ম্যাচেও না জেতা আরেক দুর্বল দল কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমি (সিএ)। মাশরাফি যেখানেই হাত দেন সেখানেই সোনা ফলে যায়। এ কথা একরকম প্রচলনই হয়ে গেছে। নির্ধারিত ওভারে ২০১৪ সালটি জাতীয় দলের জন্য খুবই খারাপ যাচ্ছিল। শুধু হারই হচ্ছিল নিয়তি। এমন মুহূর্তে ২০১৪ সালের শেষদিকে মাশরাফির কাঁধে নেতৃত্ব তুলে দেয়া হয়। মাশরাফি অধিনায়ক হতেই বদলে যায় বাংলাদেশ দলের চেহারা। একের পর এক ম্যাচে শুধু জয়ই ধরা দেয়। এমনই অবস্থা হয়Ñ ২০১৫ সালে বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার সঙ্গে পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজেও জিতে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। এরপর বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের নেতৃত্ব মাশরাফিকে দেয়া হয়। সাদা-মাটা একটি দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো কোন রসদ ছিল না। কিন্তু মাশরাফি কী সুন্দরভাবে, নেতৃত্বগুণ দেখিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে শিরোপা এনে দেন। তখন থেকে মাশরাফি যেন প্রতিটি দলেরই কাক্সিক্ষত নেতায় পরিণত হন। কিন্তু এরপরও এবার ‘প্লেয়ার্স বাই চয়েজে’ মাশরাফিকে নেয়ার আগ্রহ দেখানো দল মিলেনি। শেষপর্যন্ত দুর্বল দল গড়া কলাবাগান কেসিই মাশরাফিকে দলে ভেড়ায়। অধিনায়কের দায়িত্বও স্বাভাবিকভাবে তার কাঁধেই তুলে দেয়া হয়। তখন আবার প্রশ্ন উঠতে থাকে, মাশরাফি কী তাহলে কলাবাগান কেসিকেও চ্যাম্পিয়ন করিয়ে দেবেন? বাস্তবতা হলো, এটি ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগ। চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্য দিয়েই এগিয়ে যেতে হয়। চাইলেই দুর্বল দল নিয়ে ভাগ্যের জোরে শুধু চ্যাম্পিয়ন হওয়া যায় না। কলাবাগান কেসি টানা তিন ম্যাচে হেরেই মূলত সেই রেশ থেকে অনেক আগেই ছিটকে গেছে বলা চলে। তিন ম্যাচে হারের পর দলের কাছ থেকে তো আর বাকি সব ম্যাচে জেতার আশা করা যায় না। সুপার লীগে খেলার সম্ভাবনাও কলাবাগান কেসির নেই বললেই চলে। কিন্তু জয় তো মিলতে পারে। তিন ম্যাচ পর সেই কাক্সিক্ষত জয়ের দেখা পাওয়ার সুযোগ তাই আজ। সিসিএসকে হারাতে পারলেই হয়। সিসিএসকেই যদি হারাতে না পারে কলাবাগান কেসি, তাহলে অন্য দলগুলোকে কিভাবে হারাবে? সেই জয়ের আশাতেই আজ নামবে মাশরাফির দল। দেখা যাক, শেষপর্যন্ত সেই অধরা জয়টি মিলে কিনা? না আরও অপেক্ষা বাড়ে। আজ আসলে যে তিনটি ম্যাচ হবে, এর মধ্যে মাশরাফির দলের দিকেই সবার নজর থাকবে। জাতীয় দলের অধিনায়ক যে এখনও জয় পাননি। তবে দলের সমর্থকদের হিসেব আলাদা। তারা শুধু নিজের দলের দিকেই তাকিয়ে থাকেন। আর সেই দলগুলোর মধ্যে অন্যতম মোহামেডান আজ খেলতে নামবে। তিন ম্যাচ খেলে চতুর্থ ম্যাচে গাজী গ্রুপের বিপক্ষে লড়াই করবে। ম্যাচটিতে জিতলেই গত তিন ম্যাচের দুটিতে জেতায় ৬ পয়েন্ট পাবে মুশফিকুর রহীমের মোহামেডান। আর হারলে গাজীর অবস্থানও যেহেতু একই, দলটি তখন ৬ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়বে। ব্যাটিংয়েই মূলত নজর বেশি থাকবে। দুই দলেরই দুই সেরা ব্যাটসম্যান আছেন। মোহামেডানের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম দুর্দান্ত ব্যাটিং করছেন। কমপক্ষে অর্ধশতক ছাড়া সাজঘরেই ফিরেন না। একটি আছে শতকও। আর গাজী গ্রুপের এনামুল হক বিজয়ও ঝলক দেখাচ্ছেন। মুশফিক যেখানে এক শতক ও দুই অর্ধশতকসহ তিন ম্যাচে ২২৭ রান করেছেন, সেখানে বিজয়ও তিন ম্যাচে এক শতক ও এক অর্ধশতকসহ ২০৯ রান করেছেন। মোহামেডানে মুশফিকের সঙ্গে গাজী গ্রুপের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন শ্রীলঙ্কান উপুল থারাঙ্গা। উল্টোদিকে, শামসুর রহমান শুভ, মেহেদী হাসান, পাকিস্তানের সাঈদ আনোয়ার জুনিয়র মোহামেডানের বিপদ ঘনিয়ে আনতে পারেন। বিকেএসপিতে রূপগঞ্জ ও কলাবাগান সিএ’র ম্যাচে রূপগঞ্জই ফেভারিট। কলাবাগান সিএ এখন পর্যন্ত একটি ম্যাচেও জিততে পারেনি। আবার দলটি তরুণদের নিয়ে গড়া, দুর্বল দল। সেই তুলনায় রূপগঞ্জে সৌম্য সরকার, জুনায়েদ সিদ্দিকী, মোহাম্মদ মিঠুন, আসহার জাইদি, মোশাররফ হোসেন রুবেল আছেন। বল হাতে আবু হায়দার রনি, আলাউদ্দিন বাবু, তাইজুল ইসলামরা রয়েছেন। সেই তুলনায় মেহেদী হাসান মিরাজ, মাহমুদুল হাসানরাই কলাবাগান সিএ’র ভরসা। তাতেই বোঝা যাচ্ছেÑ রূপগঞ্জেরই জয়ের পাল্লা ভারী।
×