ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

অধ্যাপক রেজাউল হত্যাকাণ্ড

রাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলন শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন, স্মারকলিপি

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২৬ এপ্রিল ২০১৬

রাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলন শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন, স্মারকলিপি

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী/রাবি সংবাদদাতা ॥ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকীর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিভিন্ন বিভাগ ও সংগঠনের পক্ষ থেকে মানববন্ধন, শোক-মিছিল, অবস্থান ধর্মঘট ও সমাবেশ করা হয়। আন্দোলন কর্মসূচীতে রেজাউল করিমের পরিবারের সদস্যরাও অংশ নেন। শিক্ষক হত্যার দ্রুতবিচার দাবিতে সোমবারও কোন বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। বিভাগের অফিস খোলা থাকলেও তালাবদ্ধ ছিল শ্রেণীকক্ষ। অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মকর্তা যোগ দেন রাবি শিক্ষক সমিতি আয়োজিত মানববন্ধনে। সকাল ১০টায় শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে থেকে শোক মিছিল বের করেন ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে শিক্ষক সমিতি আয়োজিত মানববন্ধনে মিলিত হয়। পরে বেলা ১২টায় শহীদুল্লাহ কলা ভবনের ১৫০ নম্বর কক্ষে বিভাগের পক্ষ থেকে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। শোকসভায় নিহত শিক্ষক অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকীর সহধর্মিণী হোসনে আরা শিলা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার স্বামী বুদ্ধিজীবী ছিল বলেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। বাজারে আলুু-পটোল বিক্রি করলে তিনি খুন হতেন না। আমরা তার হত্যাকা-ের বিচার নিয়েও শঙ্কায় আছি। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান থাকবে আপনি সিদ্দিকী হত্যার বিচার করুন।’ অধ্যাপক রেজাউল করিমের মেয়ে রিজওয়ানা হাসিন শতভি রাবির ইংরেজী বিভাগ থেকেই মাস্টার্স করেছেন। বাবা ছিলেন এই বিভাগেরই অধ্যাপক। বাবার স্মৃতিচারণ করে শতভি বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরি হলেই তিনি রাগ করতেন। বাসায় রাগারাগি করতেন কিন্তু আমাকে কিছু বলতেন না। এতটাই আমাকে ভালবাসতেন। সেই মানুষটাকে দিনের আলোতে কুপিয়ে হত্যা করা হলো। কেউ দেখল না। খুনীদেরও ধরা গেল না। এটা কী করে সম্ভব! তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন মিডিয়ায় আমার বাবাকে নাস্তিক হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। ওনাকে ব্লগার বলা হচ্ছে। এসব বন্ধ করুন। তিনি সংস্কৃতিমনা ছিলেন। কিন্তু ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন। প্রযুুক্তি সম্পর্কে বাবার ন্যূনতম ধারণাও ছিল না। ব্লগে লেখালেখির তো কোন প্রশ্নই আসে না। যারা এ গুজব ছড়িয়েছে তারাও খুনীদের চেয়ে কম অপরাধী নয়। শোকসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইংরেজী বিভাগের সভাপতি ড. মাসউদ আক্তার, অধ্যাপক জহুরুল হক, শেহনাজ ইয়াসমীন, রাবি উপাচার্য অধ্যাপক মিজানউদ্দিন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান প্রমুখ। শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন ॥ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় শিক্ষক হত্যাকা-ের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে মানববন্ধন করে শিক্ষক সমিতি। সমাবেশে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ আজম শান্তনুর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন মিশ্র, সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. হাসিবুল আলম প্রধান, ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক রকীব আহমেদ, কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী জাহিদুর রহমান প্রমুখ।
×