ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কাজী সেলিম

সুন্দরবন ॥ দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ

প্রকাশিত: ০৭:৩৬, ২২ এপ্রিল ২০১৬

সুন্দরবন ॥ দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ

(পূর্ব প্রকাশের পর) এই পন্টুনের মাধ্যমেই পারাপার হয় পর্যটক, যাত্রী, মৎস্যবহনকারী চিংড়ির সামগ্রী। এই পন্টুনের মাধ্যমে নদীর মধ্যস্থলে অপেক্ষমাণ লঞ্চ বা বোটে ছোট নৌকার মাধ্যমে পন্টুন হয়ে সুন্দরবন ভ্রমণকারীদের ওঠানামা করতে হয়। পর্যটকদের জন্য লঞ্চ বা বোটগুলো পন্টুনে ভিড়ে না বা পর্যটকদের উঠানো বা নামানো হয় না। এই ওঠানামা করতে গিয়ে দেশী-বিদেশী পর্যটক বিশেষ করে বয়স্ক পুরুষ-মহিলা শিশুদের জীবনের ওপর অঘটন ঘটার সম্ভাবনাই বেশি। এই বিষয়টির প্রতিকার বা আধুনিকীকরণের অভিভাবক যথা, অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং পর্যটন মন্ত্রণালয় ও কর্পোরেশনের যৌথ সদিচ্ছার প্রচ- অভাব পরিলক্ষিত হয়। মংলাঘাটের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় নদীর তীরে শুধু সুন্দরবন ভ্রমণের পর্যটকদের সুবিধা ও নিরাপত্তার জন্য ও পর্যটকদের বহনকারী যানবাহন পার্কিংসহ সর্বপ্রকার সুবিধাদি, যথা সংক্ষিপ্ত বিশ্রামাগার, রেস্তোরাঁ, টয়লেট, তথ্যকেন্দ্রসহ একটি নৌ টার্মিনাল এবং তার সন্নিকটেই আধুনিক বিশাল একটি নৌ পন্টুনের ব্যবস্থা করা উচিত। যাতে সুন্দরবন ভ্রমণরত দেশী-বিদেশী পর্যটকগণ আরাম-আয়েশের সঙ্গে সড়ক পথে মংলা পৌঁছে যন্ত্রণাদায়ক অপেক্ষা বা ঝুঁকিপূর্ণ পন্টুনের পরিবর্তে নির্ঝঞ্ঝাট ও নির্বিঘেœ তাদের নির্ধারিত লঞ্চ বা বোটে আরোহণ করে সুন্দরবনে যাত্রা শেষে আবার ফিরে এসে মংলাঘাটে নিরাপদে ও আরামে অবতরণ করতে পারেন। এই বিশেষ পার্কিং ও পন্টুন টার্মিনালের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও গাইড নিয়োগ করা উচিত। এই পার্কিং ও নৌ-টার্মিনালে পর্যটন কর্পোরেশনের সুন্দরবন ভ্রমণ সংক্রান্ত ও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্যাদিতে পরিপূর্ণ একটি তথ্যকেন্দ্র, দক্ষ চটপটে ২-৪ জন মেয়ে-পুরুষ গাইড ভ্রমণরত পর্যটকদের প্রয়োজনীয় তথ্য ও সাহায্য-সহযোগিতা প্রদানের জন্য অবিলম্বে নিয়োগ করা উচিত। কারণ যশোর থেকে মংলা পর্যন্ত, এমনকি যশোর বিমানবন্দরসহ পথিমধ্যে পর্যটন, বাংলাদেশ বিমান বা বন বিভাগের কোন তথ্যকেন্দ্রের অবস্থান বা অস্তিত্ব চোখে পড়েনি। অথচ এই ধরনের প্রয়োজনীয় তথ্যকেন্দ্রসহ উল্লিখিত সুযোগ-সুবিধার প্রয়োজনীয়তার উপলব্ধি করে সুন্দরবন ভ্রমণকারী অসংখ্য দেশী-বিদেশী পর্যটকদের সুবিধার্থে ও তাদের স্বার্থে বহু পূর্বেই উল্লিখিত সকল সুব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত ছিল। যে সকল দেশী-বিদেশী পর্যটক যশোর-মংলার দীর্ঘ সড়ক পথ অতিক্রম করে সময় নষ্ট না করে স্বল্পসময়ে যশোর বিমানবন্দর হতে ছোট বিমানযোগে মংলা পর্যন্ত যেতে আগ্রহী, তাদের সুবিধার্থে মংলা নদী তীরবর্তী সুবিধাজনক স্থানে এবং উল্লিখিত পর্যটক নৌ টার্মিনালের নিকটবর্তী স্থানে একটি ‘এয়ার স্ট্রিপ’ বা ছোট বিমান অবতরণ ও উড্ডয়নের (ছোট হাল্কা ধরনের বিমানের জন্য) বিমানবন্দর নির্মাণ করা উচিত। ফলে কম সময়ের মধ্যে ভ্রমণকারী পর্যটকগণ আরামে সুন্দরবন গমন ও ভ্রমণ শেষে আবার মংলা নৌ-টার্মিনাল হতে বিমানযোগে যশোর বিমানবন্দরে অবতরণ করে পরবর্তী বিমানযোগে ঢাকা প্রত্যাবর্তন করতে পারবেন। এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যৌথ প্রচেষ্টা, ব্যবস্থাপনা ও ত্বরিত কার্যকরী পদক্ষেপে, রাতারাতি পর্যটকদের জন্য সুগম ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। (চলবে)
×