ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টুঙ্গিপাড়ায় শিশু সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী

সমৃদ্ধশালী দেশ গড়লেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ১৮ মার্চ ২০১৬

সমৃদ্ধশালী দেশ গড়লেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে

নিজস্ব সংবাদদাতা, গোপালগঞ্জ, ১৭ মার্চ ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো শিক্ষা যা কেউ কখনও কেড়ে নিতে পারে না। আজকের শিশুরাই আগামী দিনের কর্ণধার। তাই জীবনে বড় হতে হলে মন দিয়ে লেখাপড়া শিখতে হবে। অভিভাবক ও শিক্ষকদের কথা শুনতে হবে। গুরুজনদের মান্য করতে হবে। শৃঙ্খলা বজায় রেখে চলতে হবে। নিয়মানুবর্তিতা জানতে হবে। খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক চর্চা ও পড়ালেখার প্রতি আরও বেশি আত্মনিয়োগ করতে হবে। মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। স্বাধীন দেশের একজন সুনাগরিক হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। দেশ ও দেশের মানুষকে ভালবাসতে হবে। দেশকে একটি সমৃদ্ধিশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আর তাহলেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৭তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস ২০১৬ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু মাজার কমপ্লেক্সের পাবলিক প্লাজায় আয়োজিত শিশু সমাবেশে ভাষণ দানকালে শিশু-শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হবে, একটি উন্নত দেশ হবে, সমৃদ্ধ দেশ হবে। ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ হবেÑ এটাই ছিল জাতির পিতার স্বপ্ন। আমাদের কাজ হচ্ছে জাতির পিতার স্বপ্নকে পূরণ করা। জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আজকে আমরা স্বাধীন জাতি। স্বাধীন জাতি হিসেবে আমরা বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছি, আত্ম-পরিচয়ের সুযোগ পেয়েছি। এ স্বাধীনতা একদিনে আসেনি। এর জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম করতে হয়েছে। সমগ্র বাঙালী জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে হয়েছে এবং সেটা করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ স্বাধীনতা সংগ্রামে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ অনেক মানুষ জীবন দিয়েছেন। জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি- ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছেন, দু’লাখ মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠিত হয়েছে। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্ব বাঙালী জাতিকে ধাপে ধাপে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছিল। আজকে যদি দেশ স্বাধীন না হতো, তাহলে আমরা বাঙালী হিসেবে বিশ্বে কোন মর্যাদা পেতাম না- এ ভূখ- আমরা পেতাম না- এ দেশ আমরা পেতাম না। আমরা যে বাঙালী জাতি, আমাদের যে স্বাধীন সত্তা আছে, সেই উপলব্ধিটুকুও আমাদের হতো না- চিরদিন পরাধীনতার নাগপাশে আমাদের আবদ্ধ থাকতে হতো। আমাদের চেতনায় জাগ্রত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। সেই আন্দোলন-সংগ্রাম করতে তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় কাটাতে হয়েছে কারাগারে। বার বার মৃত্যুমুখে দাঁড়াতে হয়েছে। ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে তাঁকে, এমনকি তাঁকে ফাঁসি দিয়ে হত্যাচেষ্টাও করা হয়েছে। কিন্তু তিনি অদম্য সাহসী ছিলেন। তাঁর যে নীতি ও আদর্শ, তাতে সদা অটল থাকতেন এবং লক্ষ্য স্থির করে এগিয়ে গেছেন। দাদির কাছ থেকে শোনা গল্পের উদ্ধৃতি দিয়ে শেখ হাসিনা ছোট্ট সোনমণিদের উদ্দেশে আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ছোটবেলা থেকেই শিশুদের প্রতি অত্যন্ত দরদি ছিলেন। যে সমস্ত দুস্থ দরিদ্র ছেলেমেয়ে পয়সার অভাবে স্কুলে যেতে পারত না, তাদের জন্য তিনি সমিতি করে, মুষ্ঠি ভিক্ষা করে ওইসব গরিব ছেলেমেয়েকে সাহায্য করতেন। স্কুলে গিয়ে বই কিনতে পারে না এমন দরিদ্র কাউকে পেলে নিজের বই তাকে দিয়ে দিতেন। সেই সময়ে রাস্তাঘাটহীন দূর-দূরান্ত থেকে যারা আসত, তাদের তিনি নিজের ছাতা, গায়ের কাপড়-চোপড় দিয়ে দিতেন। এ জন্য তার জামা-কাপড়, ছাতা বার বার কিনতে হতো। স্কুল ছুটির পর অনেক দরিদ্র শিক্ষার্থীবন্ধুদের বাড়িতে এনে নিজের খাবার ভাগাভাগি করে খেতেন। এ জন্য দাদা-দাদিও কোনদিন তাঁকে কিছু বলেননি। একবার দুর্ভিক্ষের সময় নিজের গোলা থেকে ধান বের করে এনে গরিব ও অসহায় মানুষদের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর মধ্যে যে দেশপ্রেম জাগ্রত ছিল এবং গরিব ও সাধারণ মানুষের প্রতি তাঁর যে ভালবাসা সে দৃষ্টান্ত ছোটবেলা থেকেই ছিল এবং এভাবেই ছোটবেলা থেকে তিনি মানুষকে দিয়ে দিয়ে মানুষের মাঝে প্রস্ফুটিত হচ্ছিলেন। মানুষকে ভালবাসা, মানুষকে জানা, মানুষের জন্য কাজ করাÑ এটাই ছিল তাঁর স্বপ্ন। এ প্রসঙ্গে বিদেশী সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টের দু’টি প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর দেয়া উত্তরের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় গুণ হলো, তিনি এদেশের মানুষকে ভালবাসতেন; আর সবচেয়ে বড় দোষ হলো তিনি সবচেয়ে বেশি ভালবাসতেন এদেশের মানুষকে। যে কারণে তিনি বড় হয়ে এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন, জেল-জুলুম খেটেছেন। বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন। সাধারণ মানুষের কষ্ট, দুঃখ-দুর্দশা, অভাব অত্যন্ত কাছে থেকে তিনি দেখেছেন। সেই থেকেই তাঁর মধ্যে অনুভূতি কাজ করেছে যে, এদেশের মানুষের জন্য কিছু করতে হবে। কষ্ট, দুঃখ-দুর্দশা, অভাব থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে হবে। শিক্ষা-চিকিৎসা-বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই দরিদ্র মানুষগুলোর জন্যই তিনি সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন। এ মানুষগুলোর কথা তুলে ধরতে গিয়েই তিনি তখন তদানীন্তন সরকারগুলোর রোষানলে পড়েন। বার বার তিনি গ্রেফতার হন। বাবা শেখ মুজিব ও ছোট ভাই শেখ রাসেলের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে শেখ হাসিনা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং বলেন, স্কুল জীবনে, কলেজ জীবনে বা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেও আমার বাবাকে আমরা সেভাবে কাছে পাইনি। তাঁকে দেখতে চাইলে যেতে হয়েছে জেলগেটে। মাসে ১৫ দিনে ১ দিন দেখা করতে পেরেছি। যখন তিনি এদেশের মানুষের মুক্তিসহ ৬ দফা দিলেন, তখন তিনি জেলখানায় বন্দী ছিলেন। সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টেÑ দীর্ঘ ৫টি মাস আমরা জানতাম না তিনি কেমন আছেন বা কী অবস্থায় আছেন। ছোট্ট রাসেলের মাত্র ২ বছর বয়সের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু ৬ দফা দিলেন এবং তারপর থেকেই তিনি কারাগারে এবং ’৬৯ পর্যন্ত তিনি বন্দী। বঙ্গবন্ধু তাঁর বাবা-মা, ছেলেমেয়ে ও পরিবারকে গভীরভাবে ভালবেসেছেন; কিন্তু সেই ভালবাসা ছাপিয়ে গেছে দেশের মানুষের প্রতি ভালবাসায়। দেশের মানুষের প্রতি ভালবাসাই তাকে এতবড় আত্মত্যাগ করতে প্রেরণা ও শক্তি যুগিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সন্তান হিসেবে গর্ববোধ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু একটা জীবনে একটা দেশ ও একটা জাতিকে স্বপরিচয়ের সুযোগ করে দিয়েছেন। একটা সাফল্য এনে দিয়েছেন এদেশের মানুষকে। মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় এবং বিজয়ী জাতি হিসেবে বাঙালীকে তিনি প্রতিষ্ঠিত করেছেন এই পৃথিবীতে। এর থেকে বড় গর্বের আর কী হতে পারে। তবে আমাদের দুর্ভাগ্য, যারা এদেশের স্বাধীনতা চায়নি এবং যাদের আমরা যুদ্ধ করে পরাজিত করেছি তারাই সেই পরাজয়ের প্রতিশোধ নিয়েছে ’৭৫-এর ১৫ আগস্টে। মাত্র ১৫ দিন আগে আমি ও আমার বোন রেহানা বিদেশে যাই। এরপর আর আমাদের দেশে ফিরতে দেয়া হয়নি। ৬ বছর আমাদের প্রবাসে কাটাতে হয়েছে। এরপর আওয়ামী লীগ যখন আমাকে সভানেত্রী নির্বাচন করল, তখন দেশে এসে শুধু একটাই চিন্তা হলো, যে জাতির জন্য আমার বাবা আত্মত্যাগ করে গেছেন, সে জাতির জন্য কিছু করতে হবে। শেখ হাসিনা আরও বলেন, সেদিন শুধু একজন রাষ্ট্রপতিকেই হত্যা করা হয়নি; একই সঙ্গে কয়েকটি পরিবারের ১৮ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এখানেই তারা ক্ষান্ত হয়নি। এরপর ৩ নবেম্বর, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে যেসব নেতা মুক্তিযুদ্ধ করে আমাদের দেশের বিজয় এনে দিয়েছেন তাদের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকা- ঘটিয়ে দেশের স্বাধীনতার চেতনা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। ২১ বছর এদেশের মানুষ বঞ্চিত ছিল নিজের ইতিহাস জানা থেকে। কিন্তু আজকে দিন বদলেছে। আমরা চাই আমাদের দেশের মহান সংগ্রামের সঠিক ইতিহাস আমাদের ছেলেমেয়েরা জানবে এবং এই চেতনা ধারণ করবে যে, এ জাতি বিজয়ের জাতি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সেই বিজয়ের পতাকা আমাদের হাতে তুলে দিয়ে গেছেন। আজ তিনি আমাদের মাঝে নেই। যে ঘাতক ও ষড়যন্ত্রকারীর দল, যারা তাঁকে আমাদের মাঝ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে, এদেশের মানুষকে গণহত্যা করেছে, মা-বোনদের লাঞ্ছিত করেছে, হানাদার পাকিস্তানীদের দোসর ছিল এবং স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, যারা যুদ্ধাপরাধী, তাদেরও বিচার হচ্ছে। আর তাদের বিচার হচ্ছে বলেই আজকে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের ষড়যন্ত্র এখনও চলছে; কিন্তু এখন সে ষড়যন্ত্র আর এদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন আমাদের একটি শিক্ষিত জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে। তারই আদর্শ বুকে ধারণ করে আমরা সরকারে এসে আমাদের ছেলেমেয়েদেরও বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে শিক্ষা দিচ্ছিÑ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলছি। কম্পিউটার শিক্ষা, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমসহ আধুনিক প্রযুক্তিতে শিক্ষা দিয়ে তাদের জ্ঞান, মনন ও বিকাশের সুযোগ করে দিচ্ছি। প্রতিটি শিশুর মাঝে যে প্রতিভাগুলো রয়েছে, সে প্রতিভা যাতে বিকশিত হতে পারে সে সুযোগ আমরা তৈরি করে দিচ্ছি এবং আমরা তা পালন করে যাব। তাই ছেলেমেয়েদের মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতিও তিনি বিশেষ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত নাগরিক, তাদের উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এ বিশ্বটি হলো প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব। এ বিশ্বে টিকে থাকতে হলে নিজেদের সেভাবে গড়ে তুলতে হবে। জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে আমাদের এগিয়ে চলতে হবে। ভাষণের শেষ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানান, যাতে জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে আমরা একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি। এর আগে সকাল ১০টা ১৯ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথকভাবে জাতির জনকের সমাধিবেদিতে ফুল দিয়ে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করেন। এ সময় সশস্ত্রবাহিনীর নেতৃত্বে তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল তাদের অনার গার্ড প্রদর্শন করে। এরপর রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু ভবনে রক্ষিত মন্তব্য বহিতে স্বাক্ষর করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দলের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর সমাধিবেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, উপদেষ্টাম-লীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া, চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম এমপি, নারী ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহম্মদ আবদুল্লাহ, হাবিবুর রহমান সিরাজ, রেড-ক্রিসেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন, নাজমা আক্তার ও ফরিদুন্নাহার লাইলীসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক চৌধুরী এমদাদুল হক, প্রাক্তন সভাপতি রাজা মিয়া বাটু, সহ-সভাপতি রুহুল আমীন শেখ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুৎফর রহমান বাচ্চু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও গোপালগঞ্জ পৌর-মেয়র কাজী লিয়াকত আলী লেকু, আওয়ামী লীগ নেতা সালাউদ্দীন পান্না, এসএম আক্কাস, কোটালীপাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি এ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র জয়ধর, সাধারণ-সম্পাদক এসএম হুমায়ূন কবির, উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান হাওলাদার, পৌর-মেয়র এইচ এম অহেদুল ইসলাম, টুঙ্গিপাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ আব্দুল হালিম, সাধারণ সম্পাদক আবুল বশার খায়ের, উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফা, পৌর-মেয়র শেখ আহমদ হোসেন মির্জা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আকরামুজ্জামান আকরাম, জেলা যুবলীগ সভাপতি জিএম সাহাবুদ্দিন আযম, সাধারণ-সম্পাদক এমবি সাইফ (বি মোল্লা), জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিকসহ অন্য নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এরপর স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ দলীয় বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর সমাধিবেদিতে ফুল দিয়ে তাদের নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। পরে ঢাকার উদ্দেশে রাষ্ট্রপতিকে বিদায় জানিয়ে বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী যোগ দেন বঙ্গবন্ধু মাজার কমপ্লেক্সের পাবলিক প্লাজায় আয়োজিত জাতীয় শিশু সমাবেশে। এর আগেই সেখানে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শে জীবন গড়ার প্রত্যয় নিয়ে ঢল নামে শিশু-কিশোর ও স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত শিশু-সমাবেশে সভাপতিত্ব করে ছোট্ট শিশু প্রতিনিধি রাফিয়া তুর জামান। শিশু প্রতিনিধি ঋত্বিক জিদান তার স্বাগত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসকে পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানায়। সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার জিল্লার রহমান ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক খলিলুর রহমান। শিশু-সমাবেশে বক্তব্য দান শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের হাতে ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেন। এছাড়া কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ার দুস্থ মহিলাদের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেন। পরে তিনি দর্শক সারিতে গিয়ে বসে শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের অংশগ্রহণে ‘মুজিব মানে মুক্তি’ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। অনুষ্ঠানের শেষে তিনি পুনরায় স্টেজে গিয়ে শিশুদের সঙ্গে ফটো-সেশনে যোগ দেন। পরে তিনি সেখানে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র ও জেলা প্রশাসন আয়োজিত ৩ দিনব্যাপী গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করেন এবং মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। এরপর তিনি সরাসরি চলে যান বঙ্গবন্ধু ভবনে। সেখানে তিনি জোহরের নামাজ আদায় ও মধ্যাহ্নভোজ শেষে বেলা ৩টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।
×