নিজস্ব সংবাদদাতা, নারায়ণগঞ্জ, ১৪ মার্চ ॥ আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় দায়ের একটি মামলায় নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের গাড়িচালক ইব্রাহিমের ভাই ইউসুফ হোসেন ও লাশ উদ্ধার ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী বন্দর উপজেলার আলীনগর এলাকার মোহাম্মদ হোসেন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা করেন। অন্যদিকে নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী মামলার বাদি সেলিনা ইসলাম বিউটিকে জেরা করেছেন আসামিপক্ষের চার আইনজীবী। তবে র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদ ও নূর হোসেনের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা উচ্চ আদালতে যে রিভিশন মামলা দায়ের করেছেন, সেটি শুনানির অপেক্ষায় থাকায় তারা বাদি সেলিনা ইসলাম বিউটির জেরা মূলতবী রাখার আবেদন জানান। আদালত আগামি ২১ মার্চ পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছে। সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
জানা যায়, সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও এমএম রানাসহ আটক ২৩ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। একটি মামলার বাদি সেলিনা ইসলাম বিউটি হাজির থাকলেও শুরুতে র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদ ও নূর হোসেনের আইনজীবীরা দু‘টি মামলায় উচ্চ আদালতে যে রিভিশন দায়ের করেছেন, সেটি শুনানির অপেক্ষায় থাকায় তারা ফের সময় প্রার্থনা করেন। আদালত তা মঞ্জুর করে। পরে আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় জামাতা বিজয় কুমার পালের মামলায় নিহত ইব্রাহিমের ভাই ইউসুফ হোসেন ও লাশ উদ্ধারের প্রত্যক্ষদর্শী বন্দর আলীনগর এলাকার মোহাম্মদ হোসেন আদালতে সাক্ষ্য দেন। পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, সাত খুন মামলার অভিযোগপত্রে মোট একশ’ ২৭জনকে সাক্ষি দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে দুই হত্যা মামলার দুই বাদির সাক্ষ্য গৃহীত হয়েছে।
এদিকে তারেক সাঈদের আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া জানান, এই মামলার অভিযোগপত্র থেকে কোয়াসমেন্ট চেয়ে উচ্চ আদালতে ফৌজদারী রিভিশন মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেটি উচ্চ আদালতে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। আজ শুনানি মূলতবী রাখার আবেদন জানালে আদালত তা মঞ্জুর করে। সাত খুনে দায়ের দু’টি মামলায় বাদিপক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন জানান, নারায়ণগঞ্জের সাত খুন নিষ্ঠুর ঘটনার মামলা। অথচ এই মামলার বিচার ভন্ডুল করার জন্য একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে। র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ সাঈদ ও নূর হোসেনের পক্ষে বার বার মামলাটি বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো বাদির জেরা পেছানো হলো। আমরা আশা করছি, আগামি ধার্য্য তারিখে মামলার কার্যক্রম পেছাতে কোন অজুহাত দাঁড় করানো হবে না।