ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্মরণকালের বাম্পার ফলন, দামও ভাল বেজায়- খুশি কৃষক

রংপুর অঞ্চলে আলু নয়, যেন সোনা ফলেছে এবার

প্রকাশিত: ০৪:২০, ১৩ মার্চ ২০১৬

রংপুর অঞ্চলে আলু নয়, যেন সোনা ফলেছে এবার

মানিক সরকার মানিক, রংপুর ॥ আলু তো নয়, যেন সোনা ফলেছে এবার রংপুর অঞ্চলের কৃষকের হৃদয়ে। স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদন হয়েছে এবার এ অঞ্চলে। অন্যান্য বছরের মতো বীজ, সার, কীটনাশকের সঙ্কট তো নাই-ই, ছিল না কোন রোগ বালাই আর ঘন কুয়াশায় ঢাকা প্রকৃতিরও কোন বিরূপতা। আর এতেই যেন সোনা হয়ে দেখা দিয়েছে সব তরিতরকারির সাথেই মিশে যাওয়া এই গোল আলু। বীজ সার কীটনাশক সঙ্কট ও রোগ বালাই না থাকা এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলু প্রধান এই রংপুর অঞ্চলে এবারই প্রথম এমন বাম্পার ফলন হয়েছে আলুর। দামও অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশ ভাল থাকায় কৃষকরা এখন বেজায় খুশি। তারা বলছেন, এমন দাম পেলে আগামীতে তারা আলু আবাদের প্রতি আরও বেশি উৎসাহিত হবেন। কৃষি বিভাগও বলছে একই কথা, এবারের প্রকৃতিতে শীত কুয়াশা না থাকার কারণেই উৎপাদন যেমন ভাল হয়েছে, তেমনি ভাল দাম পাচ্ছেন কৃষকরা। সবমিলেই এবার আলু যেন সোনা হয়ে দেখা দিয়েছে কৃষকের হৃদয়ে। রংপুরের আঞ্চলিক কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় ৯১ হাজার ৯২১ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে কৃষকরা নিজেরাই তা বাড়িয়ে নিয়ে যায় ৯৪ হাজার ১৬০ হেক্টরে। এ পরিমাণ জমি থেকে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৮ লাখ ৬ হাজার ২৪৮ মেট্রিক টন আলু। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ রংপুর অঞ্চলের উদ্যান বিশেষজ্ঞ খোন্দকার মোঃ মেসবাহুল ইসলাম জানান, এখনও পুরোপুরি আলু উত্তোলন শেষ হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে এবার উৎপাদন ২০ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে। যা অতীতের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যাবে। রংপুরের সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদনকারী এলাকা নব্দীগঞ্জ, কল্যাণী, দেউতি, বড়দরগা, পীরগাছা, নজিরেরহাট, মমিনপুর এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, কৃষকরা পরিবার পরিজন নিয়ে আলু উত্তোলনের উৎসবে মেতে উঠেছে। সরেয়ারতল এলাকার কৃষক রমজান আলী, জয়নাল আবেদীন জানালেন, আলু তোলা নিয়ে তারা এত ব্যস্ত যে, হাত ধুয়ে ভাত খাবার সময় পর্যন্ত এখন তাদের নেই। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি কাজ করছেন তারা। এই আলু তোলা শেষ হলেই শুরু হবে বোরোর চারা রোপণের কাজ। তারা জানালেন, অন্যান্য বছর ৮০ কেজির আলুর বস্তা জাত ভেদে বিক্রি হতো ৪ থেকে ৬শ’ টাকা দরে। কিন্তু এবার তা বিক্রি হচ্ছে ৭শ’ থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত। এ কারণে কৃষক ও উৎপাদনকারীরা বেজায় খুশি। তাদের ধারণা দাম আরও বাড়বে। আর এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে আলু আবাদে আরও বেশি উৎসাহিত হবেন তারা।
×