ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত থেকে ১৪০ মে.ও. বিদ্যুতসহ দশ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১০ মার্চ ২০১৬

ভারত থেকে ১৪০ মে.ও. বিদ্যুতসহ দশ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ভারত থেকে ১৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুত ক্রয়ের দুটি প্রস্তাবসহ দশটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারী ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির বৈঠকে এসব প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে মোট ১০টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে ভারত থেকে বিদ্যুত আমদানির দুটি প্রস্তাব রয়েছে। এর একটি হচ্ছে- সরকার-টু-সরকার পর্যায়ে ভারতের ত্রিপুরা থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি করা। পাঁচ বছর মেয়াদে ত্রিপুরা থেকে বিদ্যুত ক্রয়ে প্রতি কিলোয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুতের দাম পড়বে বাংলাদেশী টাকায় ৬ টাকা ২৬ পয়সা। এরপর প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে ট্যারিফ বাড়বে। পাঁচ বছরে বিদ্যুত আমদানিতে ব্যয় হবে ২ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা। তিনি জানান, এছাড়া দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় লিমিটেড টেন্ডারিং পদ্ধতিতে ভারতের খোলা বাজার থেকে দুই বছর মেয়াদে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি করার একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৪ টাকা। অতিরিক্ত সচিব জানান, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মূল নদীশাসন কাজ সংলগ্ন উজানে মাওয়া পুরাতন ফেরিঘাট থেকে কান্দিপাড়া-যশোলদিয়া বরাবর ১ হাজার ৩০০ মিটার নদীতীর প্রতিরক্ষামূলক কাজ বাস্তবায়ন করা হবে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে। প্রকল্পটির সিঙ্গেল সোর্স ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে মোট ব্যয় হবে ৩৯২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। বৈঠকে ১ হাজার ৯১০ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যুত ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০-এর আওতায় ‘ইন্সটলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপ লাইন’ প্রকল্পের আওতায় জার্মানি পরামর্শক মেসার্স আইএফএল কন্সালটিং ইঞ্জিনিয়ার্সের অনুকূলে ৩৬ মাসের প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট (পিএমসি) এবং সংশ্লিষ্ট সেবার নতুন পেমেন্ট টার্মসহ কার্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এজন্য এছাড়াও একই প্রকল্পের অনুকূলে আগে অনুমোদিত ৭ দশমিক ১৮৪ মিলিয়ন ইউরোসহ মোট ৭ দশমিক ৩৯৮ মিলিয়ন ইউরো সংশোধিত মূল্যে কার্যাদেশ এবং চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বৈঠকে গাজীপুর-আজমতপুর-ইটাখোলা আঞ্চলিক মহাসড়কের চরসিন্দুরে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৬২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স জন্মভূমি-দি নির্মাতা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। বৈঠকে ‘বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার (নিউ ধলেশ্বরী-পুংলি-বংশাই-তুরাগ-বুড়িগঙ্গা রিভার সিস্টেম)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে নিউ ধলেশ্বরী নদীর দুটি স্থানে ও পুংলি নদীর একটি স্থানে সর্বমোট ৪০ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার খনন কাজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ‘খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড’-এর মাধ্যমে বাস্তবায়নের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। এ কাজে ‘অফটেক রিভার ড্রেজিং’-এর আওতায় নিউ ধলেশ্বরী নদীর অফটেক (-) দশমিক ৩৫০ কিলোমিটার থেকে শূন্য কিলোমিটার পর্যন্ত মেইন্টেনেন্স ড্রেজিংয়ের আওতায় নিউ ধলেশ্বরী নদীর শূন্য (০) কিলোমিটার থেকে ২ দশমিক ২০ কিলোমিটার এবং পুলিং নদীর ২ দশমিক ২০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে খনন করা হবে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৬৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এছাড়া বৈঠকে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার ‘কুর্ণিবাড়ি থেকে চন্দনবাইশা পর্যন্ত যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণসহ বিকল্প বাঁধ নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কুর্ণিবাড়ি এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় ৫ দশমিক ৯ কিলোমিটার (বিআরআই ১২৪.৯ থেকে ১৩০.৮ কিলোমিটার) যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ কাজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ‘ডকইয়ার্ড এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড’- কে দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ২৬৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা। বৈঠকে গঙ্গা বাঁধ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও ডিটেইলড ইঞ্জিনিয়ারিং কাজের জন্য নিয়োগকৃত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দ্বিতীয় সংশোধিত চুক্তি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আগে চুক্তিমূল্য ছিল ৪১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। তা থেকে কমে নতুন চুক্তিমূল্য দাঁড়িয়েছে ৪১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এছাড়া রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সৌদি আরব থেকে দেড় লাখ টন ডিএপি সার আমদানির একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক দর অনুযায়ী সারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
×