ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে কীটনাশক ছাড়াই চাষাবাদ

আঙ্গিনায় বিষমুক্ত সবজি

প্রকাশিত: ০৩:৫২, ৯ মার্চ ২০১৬

আঙ্গিনায় বিষমুক্ত সবজি

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ লেবুতলা ইউনিয়নের কোদালিয়া গ্রামের বর্গাচাষী লিয়াকত আলীর স্ত্রী আনজুরা জানান, ঘরের আঙিনার দুই কাঠা পরিত্যক্ত জমিতে তিনি ১৩ রকমের সবজি চাষ করেছেন। কেঁচোসার, মেহগিনির তেল ও খৈল ব্যবহার করেছেন ক্ষেতে। আরেক গৃহবধূ নাজমা বেগম জানালেন, স্বামীর কাছ থেকে দুই কাঠা জমি নিয়ে তিনি এখন ১৩ ফসলি চাষে নেমেছেন। কোন ধরনের কীটনাশক ছাড়াই এই সবজি চাষ থেকে গ্রামের অন্য নারীরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। শুধু নারী নয়, গ্রামের পুরুষদেরও বিষমুক্ত সবজি চাষে উদ্বুব্ধ করছেন তারা। শুধু আনজুরা বা নাজমা বেগম নন, লেবুতলা ইউনিয়নের ১১৬ কিষানী বাড়ির আঙিনায়, পতিত জমিতে ১৩ ধরনের সবজি চাষ করছেন। আর এই সবজি চাষে তারা ব্যবহার করছেন কেঁচোসার, মেহগিনির তেল ও খৈল। এর আগে এই কিষানীদের বিষমুক্ত সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করে প্রশিক্ষণ দিয়েছে উন্নয়ন সংস্থা উলাসী সৃজনী সংঘ। একই সাথে প্রথমবার চাষের জন্য তাদের সবজি বীজ, কেঁচোসার, মেহগিনির তেল ও খৈল প্রদান করা হয়েছে। এই কিষানীদের উৎপাদিত সবজি তারা নিজেরা খেয়ে বিক্রিও করছেন। বিষমুক্ত সবজির ভাল দাম পেতে বাজারজাতকরণেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইউপি মেম্বর ওয়াসিম জানান, বাড়ির উঠোনে কোন ধরনের কীটনাশক ছাড়াই সবজি চাষ করে নারীরা দেখিয়ে দিয়েছে। এখন পুরুষরাও মাঠে কীটনাশক ছাড়া কিভাবে সবজি চাষ করা যায় তার খোঁজ নিচ্ছে। উলাসীর বাজার সংযোগ কর্মকর্তা খুশনুর জাহান স্বপ্না জানান, এখানকার নারীদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে আমরা ১০ নারীকে যুক্ত করেছি। নির্বাহী পরিচালক খন্দকার আজিজুল হক মনি জানান, বাড়ির পতিত জমির আঙিনায় বিষমুক্ত সবজি চাষের পরিকল্পনাটি আমরা এমনভাবে করেছি যে পুরো এলাকাটা নিরাপদ খাদ্য আন্দোলনে রূপ নেয়। তিন বছর পর আমাদের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তারা আর কীটনাশক ব্যবহারে ফিরে যেতে পারবে না। মোটিভেশনটা সেভাবে দেয়া হচ্ছে। এদিকে কিষানীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হল বহুবিধ ফসল চাষাবাদ বিষয়ক কৃষক মাঠ দিবস। লেবুতলা ইউনিয়নের কোদালিয়া গ্রামের ইউপি মেম্বর ওয়াসিমের বাড়ির আঙিনায় অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে বক্তব্য দেন উলাসী সৃজনী সংঘের সমন্বয়কারী সুলতানা রাজিয়া, ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম সমন্বয়কারী মশিয়ার রহমান, বাজার সংযোগ কর্মকর্তা খুশনুর জাহান স্বপ্না, জীবন জীবিকা উন্নয়ন কর্মকর্তা কৃতিদীপ্ত বালা প্রমুখ।
×