ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

জয় বাংলা কনসার্টে সাতই মার্চের ভাষণের রঙিন সংস্করণ

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৮ মার্চ ২০১৬

জয় বাংলা কনসার্টে সাতই মার্চের ভাষণের রঙিন সংস্করণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলছে স্বাধীনতার মাস মার্চ। সোমবার ছিল বাংলার ইতিহাস বদলে দেয়া ঐতিহাসিক সাতই মার্চ। একাত্তরের এই দিনে বঙ্গবন্ধুর সেই কালজয়ী ভাষণে বাঙালী জাতি পেয়েছিল পথের দিশা। জাতির জনকের অনবদ্য ভাষণের মধ্য দিয়ে পেয়েছিল মুক্তির ঠিকানা। জাতির জনকের বলা- এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রামের পথরেখায় জাতি পেয়েছিল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক এই দিনটি উপলক্ষে বসন্ত বিকেলে আর্মি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় জয় বাংলা শিরোনামের কনসার্ট। সুরের এ আয়োজনে তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে উচ্চারিত হয়েছে বাঙালিত্বের অহঙ্কারের কথা। গান শোনার পাশাপাশি হাজার হাজার তরুণ শ্রোতা-দর্শক দেখেছে ঐতিহাসিক সাতই মার্চের ভাষণের রঙিন সংস্করণ। ভারত থেকে বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে সাদা-কালো সংস্করণের ভাষণটিকে বর্ণিল করে দেখানো হয়। সঙ্গীতানুষ্ঠানটির আয়োজন করে সেন্টার ফর রিসার্চ এ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)। বিনা দর্শনীর কনসার্টটি উপভোগ করার জন্য প্রায় ৩০ হাজার তরুণ ওয়েবসাইট থেকে রেজিস্ট্রেশন করে। সেই তরুণদের আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মুখরিত হয়েছে সঙ্গীতায়োজনটি। স্টেডিয়াম পরিপূর্ণ এই হাজার হাজার তরুণের মধ্যে গান শুনতে হাজির হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। গানে গানে বলা হয়েছে জয় বাংলা স্লোগানের কথা। সুরের সঙ্গে লাল-সবুজের আতশবাজি সঙ্গীতানুষ্ঠানটিতে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা। বিশেষ দিনে দেশের তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা উজ্জীবিত করতে এ কনসার্টের আয়োজন করা হয়। দেশের প্রথিতযশা ও জনপ্রিয় শিল্পীরা কনসার্টে নিজেদের গানের পাশাপাশি গেয়ে শোনান স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অমর গানগুলো যা তারা উৎসর্গ করেছিল দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের যারা ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবনবাজি রেখেছিল। তারুণ্যকে উদ্দীপ্ত করা আয়োজনটিতে অংশ নেয়া ব্যান্ড দলগুলো ছিল ওয়ারফেইজ, শিরোনামহীন, ক্রিপ্টিক ফেইট, লালন, শূন্য, নেমেসিস ও আর্বোভাইরাস। বিকেল থেকে রাত অবধি বেজেছে সুরের অনুরণন। কনসার্টটির বিশেষ আকর্ষণ ছিল ওয়ারফেইজের কণ্ঠে জর্জ হ্যারিসনের বিশ্বখ্যাত ‘বাংলাদেশ’ গানটি। প্রতিটি ব্যান্ডদলই স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্রে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রচারিত অনুপ্রেরণামূলক গানগুলো গেয়ে শোনায়। তবে সবচেয়ে বড় চমক ছিল যখন বড় পর্দায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটির রঙিন সংস্করণ দেখানো হয়। গান শুনতে আসা শ্রোতারা নতুন কিছু দেখার আনন্দে হয়ে ওঠেন আত্মহারা। সবার মাঝে বয়ে যায় একাত্তরের সেই চেতনা জাগানিয়া শিহরণ। আয়োজনটি বিকেলে শুরু হলেও দুপুর থেকেই আর্মি স্টেডিয়ামের চারপাশে ভিড় জমায় তরুণ শ্রোতারা। তবে ঘটেনি কোন বিশৃঙ্খলা। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সুশৃঙ্খলভাবে মাঠে ঢুকে নিয়েছেন সুরের আস্বাদ। প্রথমেই মঞ্চে আসে আর্বোভাইরাস। গেয়ে শোনায় ‘হারিয়ে যাও’ ও ‘জ্বালো আগুন জ্বালো’। ধনধান্য পুষ্পভরা আমাদের এই বসুন্ধরা গানটি গেয়ে প্রথমেই শ্রোতাদের মাঝে দেশাত্মবোধ ছড়িয়ে দেয় নেমেসিস। এরপর দলটি গেয়ে শোনায় ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি বাংলাদেশের নাম’, ‘কোথাও আছে যে’ ও ‘কবে’। ব্যান্ডদল শূন্য গেয়ে শোনায় ‘শত আশা’সহ বেশ কয়েকটি গান। সাতই মার্চের ভাষণ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা ॥ ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা পেয়েছিল বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের সেই চেতনাকে শিশুদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সাতই মার্চের ভাষণ উপলক্ষে সোমবার বাংলাদেশ শিশু একাডেমি শিশুদের নিয়ে শাহ্বাগ থেকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি পর্যন্ত জাতীয় পতাকা নিয়ে আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করে।
×