ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কিশোরগঞ্জে হন্তারক মা মানসিক ভারসাম্যহীন দাবি স্বজনদের

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ৭ মার্চ ২০১৬

কিশোরগঞ্জে হন্তারক  মা মানসিক ভারসাম্যহীন  দাবি স্বজনদের

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ, ৬ মার্চ ॥ তিন মেয়েসন্তান জন্মের পর মায়ের কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে ছেলেসন্তান। এ নিয়ে স্বামী ও বাবার বাড়ির লোকজনের মধ্যে আনন্দের কমতি ছিল না। কিন্তু কেবল বাদসাধে এক ধরনের ‘মানসিক রোগ’। এ অবস্থায় এক সময় গর্ভধারিণী মায়ের-ই শিশুসন্তানকে হত্যার নেশায় পেয়ে বসে। শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের প্যারাভাঙ্গা গ্রামে নিজ হাতে মা তার দেড় বছরের শিশুসন্তান মাহাথীর মোহাম্মদকে ধারালো দা দিয়ে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় প্যারাভাঙ্গার শিশুটির নানাবাড়িতে ও জেলার করিমগঞ্জের গুজাদিয়া ইউনিয়নের টানমিতে চলছে মাতম। দুই পরিবারের লোকজন কোনভাবেই নিষ্পাপ শিশুসন্তান হারানোর শোক সইতে পারছে না। ভারাক্রান্ত হৃদয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাও নিয়েছেন। রবিবার সকালে নিহতের নানাবাড়ি সদরের মারিয়া ইউনিয়নের প্যারাভাঙ্গায় গিয়ে দেখা গেছে বাড়িজুড়ে উৎসুক লোকজনের ভিড়। প্রতিবেশীরা বার বার মূর্ছা যাওয়া শিশুটির নানি দোলেনা আক্তারকে (৬০) সান্ত¡না দেয়ার চেষ্টা করছেন। এদিকে হত্যাকা-ের পর পরই মানসিক ভারসাম্যহীন মা সালমা আক্তারকে হত্যায় ব্যবহৃত দাসহ আটক করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে শিশুটির বাবা কৃষক আবুল কালাম বাদী হয়ে ওই দিন রাতেই স্ত্রীর বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। রবিবার দুপুরে আসামিকে পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে। আদালতে মামলার একমাত্র আসামি শিশুটির মা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে বলে জানা গেছে। নিহত মাহাথীর মোহাম্মদের খালা রিমা আক্তার ও প্রতিবেশীরা জানায়, মা সালমা আক্তার মানসিক রোগী থাকলেও সংসার জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোন বিষয়ে দ্বন্দ্ব ছিল না। তাদের সংসারে নিহত শিশু ছাড়াও তিন মেয়ে রয়েছে। তাদের মধ্যে বড় মেয়ে অষ্টম শ্রেণী, মেজো মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ও ছোট মেয়ে পাঁচ বছর বয়সের। বিয়ের পর প্রথম মেয়েসন্তান জন্মের পর পরই সালমার মানসিক রোগ ধরা পড়ে। তখন থেকেই এক ধরনের পাগলামি শুরু করে। তবে পরিবার বা প্রতিবেশী কারও সঙ্গে তিনি কোন বিষয়ে বিরোধে যেতেন না। তিন মেয়ের পর ছেলেসন্তান জন্মের পর তিনি আবারও মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। এর আগেও স্বামীর বাড়িতে থাকা অবস্থায় শিশুটিকে পানিতে ফেলে হত্যার চেষ্টা চালান।
×