ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সুনামগঞ্জে শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত

চলছে বাঁধ নির্মাণ

প্রকাশিত: ০৩:৩৭, ৬ মার্চ ২০১৬

চলছে বাঁধ নির্মাণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, সুনামগঞ্জ, ৫ মার্চ ॥ বিশ্বম্ভরপুরে ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে আড়াই কিঃ মিঃ বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজে চলছে ব্যাপক অনিয়ম। মনাই নদীর পাড়ের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের নামে তৈরি করছে আরেক নদী। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার স্বরূপগঞ্জ, চড়ারপাড়, পুরানগাও পুটিয়া গ্রামসহ পাঁচটি গ্রামের শতাধিক পরিবার। গর্ত করে নদী তৈরি করা হয়েছে শতাধিক পরিবারের ফসলি জমিতে, কেটে ফেলা হয়েছে আম গাছ, জাম গাছসহ বিভিন্ন জাতের ফলজ ও বনজ গাছ, ধ্বংস করে দিয়েছে তরমুজ, বেগুন, মরিচসহ বিভিন্ন জাতের সবজির ক্ষেত। কৃষকরা বাধা দেয়ায় তাদের চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন মিথ্যা মামলা ফেলে হয়রানি করার হুমকি দেয়া হচ্ছে। নামমাত্র বালি মাটি ফেলে নিম্নমানের কাজ করায় হুমকির মুখে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পুটিয়ার হাওড় ও বুড়বুড়ি হাওরের হাজার হেক্টর বোরো ফসল। হতাশায় হাওরপাড়ের কৃষকরা। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো জানায়, ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান হাসান এন্টারপ্রাইজের সাইড ম্যানেজার মোস্তফা, স্থানীয় প্রভাবশালী লোকমান, ময়দান ও পাউবোর কর্মকর্তা এসডি প্রদীপ, এসও রফিক সাধারণ জনগণকে চাঁদাবাজি মামলাসহ ভয়ভীতি দেখিয়ে এসব অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর। স্বরূপগঞ্জ গ্রামের আব্দুস ছাত্তার জানান, আমি গরিব মানুষ। কষ্ট করে আমার বাড়ির পাশে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট বানিয়েছিলাম কিন্তু সেটা ভেঙ্গে দিয়েছে। বাড়ির সামনে বাঁশের ঝাড় ছিল তা স্কেবেটর (মাটি কাঠার যন্ত্র) নামক দানব নামানোর জন্য ধ্বংস করে দিয়েছে সব। কিন্তু কোন ক্ষতিপূরণ দেয়নি আমাদের। বরং বাড়াবাড়ি করলে মামলার ভয় দেখাচ্ছে তারা। একই গ্রামের মাজেদা বেগম জানান, বাড়ির সামনে তিনটি গাছ ছিল তা কেটে ফেলেছে নিষেধ করলেও কোন বাধা মানেনি। সরেজমিন স্বরূপগঞ্জ গ্রামের কৃষকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, তাদের কষ্ট করে ফলানো বেগুন, তরমুজ, মরিচসহ বিভিন্ন জাতের সবজির ক্ষেত থেকে মাটি উত্তোলন করে পুটিয়া বেড়িবাঁধে মাটি ফেলা হয়েছে। কিন্তু আমাদের কোন বাধাই মানছে না। উল্টো আমাদের চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি প্রদর্শন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও রফিক, ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান হাসান এন্টারপ্রাইজের সাইড ম্যনেজার মোস্তফা ও তাদের স্থানীয় ক্যাডাররা। ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠানের সাইড ম্যানেজার মোস্তফা মিয়া এ বিষয়ে জানান, আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সঠিক নয়। জেলার অন্যান্য হাওড়ে যেভাবে বেড়িবাঁধ দেয়া হয়, আমরাও সেভাবে দিচ্ছি। মাটি না থাকায় বাঁধের পাশের জমি থেকে মাটি উত্তোলন করা হয়েছে। সেটা অফিস বুঝবে আমাদের কিছু করার নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আফসার উদ্দিন জানান, হাওড় এলাকায় আগাম বন্যা প্রতিরোধ ও নিষ্কাশন উন্নয়ন প্রকল্পের প্যাকেজ নং/১৫-১৬/৭৫ এর আওতায় পুঠিয়ার হাওড়ের আড়াই কিঃ মিঃ বাঁধের নির্মাণকাজ করার ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হয়েছে হাসান এন্টারপ্রাইজকে। মৌখিকভাবে অনেক অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×