ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

নায়করাজের জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি

প্রকাশিত: ০৭:১৪, ২৩ জানুয়ারি ২০১৬

নায়করাজের জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি

গৌতম পাণ্ডে ॥ বাংলা চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক। কয়েক প্রজন্ম তাঁকে নায়ক থেকে শুরু করে এই সময়ে একজন সফল অভিনয়শিল্পী হিসেবেও দেখছেন। চলচ্চিত্র জীবনে তিনি যেমন নায়ক, প্রযোজক কিংবা পরিচালক হিসেবে সফলতার চূড়ান্ত শিখরে পৌঁছেছেন, ঠিক তেমনি ব্যক্তি জীবনেও নায়করাজ সফল হয়েছেন। চলচ্চিত্রাঙ্গনে নায়করাজ এমনই একজন ব্যক্তিত্ব যার নাম শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারণ করেন সব শিল্পী কলাকুশলী। আজ শনিবার তাঁর ৭৫তম জন্মদিন। নায়করাজের জন্মদিনকে ঘিরে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও বেতার কেন্দ্র বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। এছাড়া জন্মদিনে বিকেল তিনটায় বিএফডিসিতে পরিচালক সমিতি নায়করাজকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাবেন । এরপর নায়করাজ চলে যাবেন রাজধানীর উত্তরায় ‘রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্স’-এ। সেখানে ‘রাজলক্ষ্মী বণিক সমিতি’ বিকেল সাড়ে ৪টায় তাকে শুভেচ্ছা জানাবেন। তারপর পুরো সময়টি তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই কাটাবেন। এ প্রসঙ্গে নায়করাজ রাজ্জাক বলেন, যার যার অবস্থান থেকে যে যেভাবে পারছেন আমার ৭৫-তম জন্মদিন উদ্যাপন করছেন। আমি সবার প্রতি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ। আমি আমার সকল ভক্ত দর্শক, আমার সারা বাংলার মানুষের প্রতিও কৃতজ্ঞ। সবাই দোয়া করবেন যাতে ভালো থাকি, সুস্থ থাকি। ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতার টালিগঞ্জের নাকতলা মহল্লায় রাজ্জাকের জন্ম। মাত্র ৮ কিংবা ৯ বছর বয়সে বাবা আকবর হোসেন ও মা নেসরুন্নেসা মারা যান। তিন ভাই, তিন বোনের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবার ছোট। টালিগঞ্জের ফিল্মপাড়া আর রাজ্জাকের বাড়ি একই জায়গায়। ছোটবেলা থেকেই কানন দেবী, বসন্ত চৌধুরী, ছবি বিশ্বাসদের দেখে দেখে বড় হয়েছেন তিনি। তাদের জনপ্রিয়তায় মুগ্ধ হয়ে তিনিও মনে মনে বলতেন, একদিন আমি তাদের মতো বড় অভিনেতা হবো। টালিগঞ্জের বড় বড় স্টুডিও ছিল তাদেরই এলাকায়। সেখানে নিয়মিত যাতায়াত ছিল নায়করাজের। সেখানে আড্ডাও দিতেন তিনি। তারই নাট্যগুরু পীযুষ বোস পরে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে বিখ্যাত হন। তার সঙ্গে আড্ডা দিতে টালিগঞ্জ স্টুডিওতে যেতেন তিনি। এভাবে যেতে যেতে চলচ্চিত্রে ছোটখাটো কিছু চরিত্রে অভিনয় করে ফেলেন রাজ্জাক। তার মেজদা আবদুল গফুরের সঙ্গেও কিছুটা জানাশোনা ছিল আবদুল জব্বার খানের। তার সঙ্গে পরবর্তীতে দেখা হয়। তিনি তার নির্মিতব্য ‘উজালা’ চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক হিসেবে রাজ্জাককে নিয়োগ দেন। ঢাকায় এসেও রাজ্জাক অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন। ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে তিনি ৫০ টিরও বেশি নাটকে অভিনয় করেন। তারই বন্ধু জহিরুল হক, খান জয়নুল, খসরু, নোমান, আলী ইমাম, আলতাফ হোসেনের পরিচালনায় নাটকে অভিনয় করেছেন। মজিবুর রহমান মজনু নামের আরেক বন্ধু ছিল তার। তিনিও নাটক পরিচালনা করতেন। যাই হোক, জহির রায়হান তার দেয়া আশ্বাস অনুযায়ী তিনি রাজ্জাককে ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে সুচন্দার বিপরীতে নায়ক হিসেবে কাষ্ট করেন। চলচ্চিত্রের কাজ শেষ হলো। মুক্তিও পেল। ব্যবসা সফল হলো। সেই সঙ্গে রাজ্জাককে পূর্ব পাকিস্তানের দর্শক সানন্দে গ্রহণ করে নেয়। দর্শকের ভালবাসা আর নির্মাতাদের স্নেহ রাজ্জাককে আর পেছনে তাকাতে দেয়নি। সময়ের বিবর্তনে ঢালিউডে নায়করাজের আসন অর্জন করে নেন রাজ্জাক। জন্মদিনে নায়করাজের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।
×