ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শায়লা শারমিন ঈশিতা

নারীবান্ধব প্রযুক্তি নারী-প্রতিকূল প্রযুক্তি

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ২২ জানুয়ারি ২০১৬

নারীবান্ধব প্রযুক্তি নারী-প্রতিকূল প্রযুক্তি

৩৬তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিলাম, পথে যখন যাচ্ছি তখন হঠাৎ শুনতে পেলাম একজন বলছেন- ‘কেন্দ্র খুঁজে পাচ্ছেন না? গুগল ম্যাপ-এ দেখে নিন, পেয়ে যাবেন।’ অনেকেই পরীক্ষা কেন্দ্র খুঁজছিলেন, তাদের উদ্দেশ্যেই একজন বললেন। শুনে পুলকিত হলাম। কম্পিউটার সাইন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রী হিসেবে প্রযুক্তির ব্যবহার ছড়াতে দেখা আমার জন্য বেশি আনন্দদায়ক। আবার একইভাবে কষ্টদায়ক ব্যাপার ঘটে যখন দেখি এই প্রযুক্তির ব্যবহার কীভাবে হয়রানির সম্মুখীন করছে আমাদের, বিশেষ করে নারীদের। প্রকৃতপক্ষে নারীসমাজ হয়রানির স্বীকার বা ভুক্তভোগী হয় বেশি। সব কিছুরই ভাল এবং মন্দ দিক থাকে। মন্দ দিকটা যেন আমাদের আক্রান্ত করতে না পারে সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকাটা জরুরী। আমরা সহজেই আমাদের সকল তথ্য ইন্টারনেটে প্রকাশ হতে দিই। সহজেই বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করি অচেনা মানুষদের। এসব কারণেই সহজে মন্দ লোকের ফাঁদে পড়েন নারীরা। আমাদের তথ্য ব্যবহার করে হয়রানি করা সহজ হয়ে যায়। আমি বলছি না যে এমন না করলে কেউ বিব্রতকর অবস্থায় পড়ত না। কিন্তু বলতে দ্বিধা নেই, এমন না হলে নারী হয়রানির সুযোগ কমে আসতে পারে অনেকাংশেই। প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ওতপ্রোতভাবে। প্রতিদিন ফেসবুক, টুইটার, গুগল, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইউটিউব ইত্যাদি ব্যবহার করে পৃথিবীকে মাত্র কয়েক ক্লিকেই জেনে নিচ্ছি আরও গভীরভাবে। আর অন্যদিকে নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনকে সবার মাঝে উন্মুক্ত করে দিয়ে কিছু মন্দ মানুষকে তাদের বিকৃত মনোবাসনা চরিতার্থ করার সুযোগ করে দিচ্ছি। শরীরের রোগ-জীবাণু থেকে বাঁচতে আমরা কিছু সতর্কতা অবলম্বন করি, তাতে পুরোপুরি রোগমুক্ত জীবন কাটানোর নিশ্চয়তা না থাকলেও অনেক বড় ক্ষতি থেকে বাঁচা যায়। তেমনই প্রত্যেকটি বিষয়ের ভাল এবং খারাপ দিকটা নজরে রেখে এগোনো গেলে বিপদ এড়িয়ে চলা সম্ভব হয়। নারীদেরকে অবশ্যই বেশি বেশি প্রযুক্তিকে সঙ্গে নিয়ে চলতে শিখতে হবে, ব্যক্তিগত তথ্যের অবাধ আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে এবং এভাবেই নারীসমাজ প্রযুক্তিকে সুন্দরভাবে ব্যবহার করে সামনে এগিয়ে যাবে, -এটাই আমার কামনা।
×