ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চলচ্চিত্রে নিয়মিত হতে চাই ॥ আহসানুল হক মিনু

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০১৬

চলচ্চিত্রে নিয়মিত হতে চাই ॥ আহসানুল হক মিনু

অভিনেতা, মুক্তিযোদ্ধা আহসানুল হক মিনু। চলচ্চিত্র, মঞ্চ ও টিভি নাটকে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে চলেছেন। বগুড়ার নাট্যদল এবং ঢাকার থিয়েটারের পক্ষ থেকে তিনি মঞ্চে এ পর্যন্ত ১২শ’ রজনী পার করেছেন। সম্প্রতি টিভির ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত আছেন গুণী এই অভিনয়শিল্পী। সাম্প্রতিক ব্যস্ততা প্রসঙ্গে তার সঙ্গে কথা হয়। সম্প্রতি অভিনয় ব্যস্ততা কেমন? আহসানুল হক মিনু : কয়েকটি টিভি সিরিয়ালের কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছি। এর মধ্যে তৌফিক হাসান ময়নার গল্প এবং এসএম শাহীনের নির্দেশনায় এটিএন বাংলার ‘সোনাভান’ নাটকটির ১৩ পর্বের শূটিং করেছি। এতে স্বাধীনতার পক্ষের একজন মানুষের চরিত্রে অভিনয় করছি। প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার রাত পৌনে ১০টায় বাংলা ভিশনে প্রচার হয় মুহম্মদ মামুন অর রশীদ রচিত এবং আল হাজেন পরিচালিত ‘লড়াই’। সাধন রায়ের নির্দেশনায় জিটিভির একটি নাটকে অভিনয় করছি। এছাড়া আরটিভিতে প্রতি সপ্তাহের শুক্র, শনি ও রবিবার রাত ৮-৫০ মিনিটে প্রচার হচ্ছে ধারাবাহিক নাটক ‘অলসপুর’। নাটকটি লিখেছেন মুহম্মদ মামুন অর রশীদ এবং নির্দেশনায় আল হাজেন। অভিনয় জগতে আসার প্রথম দিকের কথা বলুন আহসানুল হক মিনু : বগুড়ার আজিজুল হক কলেজের মোটামুটি একজন মেধাবী ছাত্র ছিলাম। কলেজে অনেক নাটকে অভিনয় করেছি। বলা যায় ছাত্রজীবন থেকেই অভিনয়ের প্রতি অদম্য এক ঝোঁক ছিল। যে কারণে দেশ স্বাধীনের পর পড়াশোনার চেয়ে অভিনয়েই তিনি বেশি মনোযোগী হয়ে যাই। বগুড়ায় ‘বগুড়া নাট্যগোষ্ঠী’ এবং ঢাকায় মমতাজ উদ্দীন আহমদের থিয়েটারের কর্মী হয়ে বিভিন্ন মঞ্চ নাটকে কাজ করি। আমি বগুড়া এবং ঢাকায় এখন পর্যন্ত আমি ১২শ’ রজনী মঞ্চে পার করেছি। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ সম্পর্কে বলুন আহসানুল হক মিনু : ১৯৭১ সালে সাত নম্বর সেক্টরে মেজর কাজী নুরুজ্জামানের অধীনে থেকে আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। সে সময় আমি ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিচ্ছিলাম। একপ্রকার বাবা মায়ের ইচ্ছের বিরুদ্ধেই স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। যুদ্ধের পর মায়ের সঙ্গে আর দেখা হয়নি। বাবা মারা যান যুদ্ধের পরের বছর। চলচ্চিত্রে অভিনয় সম্পর্কে বলুন আহসানুল হক মিনু : দীলিপ সোমের ‘শহর থেকে দূরে‘ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে আমার চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু। এরপর ফকরুল হাসান বৈরাগীর ‘স্বামীর ঘর’, আব্দুল লতিফ বাচ্চুর ‘হাতকড়া’ ও কাজী জহিরের ‘ফুলের মালা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করি। তারপর মঞ্চে কাজের প্রতি বেশি ব্যস্ত হওয়ায় চলচ্চিত্রে আর নিয়মিত সময় দেয়া হয়ে উঠেনি। দীর্ঘ বিরতির পর গৌতম ঘোষের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় দিয়ে আবার ফিরে আসি। এরপর তানভীর মোকাম্মেলের ‘চিত্রা নদীর পারে’ ও ‘লালসালু’, শহীদুল ইসলাম খোকনের ‘বাঙলা’, শেখ নিয়ামত আলীর ‘অন্য জীবন’, আবু সাইয়ীদের ‘অপেক্ষা’, গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘মনপুরা’, খালেদ মাহমুদ মিঠুর ‘গহীনে শব্দ’, গৌতম ঘোষের ‘মনের মানুষ’, নায়ক রাজ রাজ্জাকের ‘আয়না কাহিনী’, বাপ্পারাজের ‘কাতুর্জ’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করি। মুক্তির অপেক্ষায় আছে আমার অভিনীত নাবিল আশরাফ পরিচালিত ‘ভালোবাসার রঙধনু’ চলচ্চিত্রটি। মঞ্চে আর দেখা যায় না কেন? আহসানুল হক মিনু : টিভি নাটক নিয়ে এত ব্যস্ত থাকি যে মঞ্চে সময় দিতে পারি না। তাছাড়া বয়সের তো একটা ব্যাপার রয়েছে। টিভি নাটকের বর্তমান অবস্থা কেমন মনে হয়? আহসানুল হক মিনু : ভাল গল্পের অভাব। এজেন্সিগুলোর গোড়ামী এত বেশি যে, নাটক যা-ই হোক না কেন, তাদের কাছে বিজ্ঞাপনই মুখ্য। এ জন্যই নাটকের মান দিন দিন খারাপ হচ্ছে। নতুন যারা অভিনয়ে আসছে, তারা শুধু নিজেদের অহমিকা নিয়েই ব্যস্ত থাকে। নাটক ও বয়জ্যেষ্ঠ অভিনেতাদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নেই এবং অভিনয় শেখারও ইচ্ছে কম। অভিনয় নিয়ে আগামীর পরিকল্পনা কি? আহসানুল হক মিনু : আমার একান্ত ইচ্ছা রয়েছে চলচ্চিত্রে নিয়মিত হওয়া। নতুন নতুন ভাল কাজ করার ইচ্ছা সব সময়ই পোষণ করি। এছাড়া এই প্রজন্মের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে রাঙিয়ে রাখতে চাই। -গৌতম পাণ্ডে
×