ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ৪ উইকেটে জিতল বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ১৬ জানুয়ারি ২০১৬

জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ৪ উইকেটে জিতল বাংলাদেশ

মোঃ মামুন রশীদ ॥ শুরুটা সবসময়ই জরুরী। গোড়াতেই গলদ হলে সবকিছুই ভজঘট পেকে যায়। গত বছরের শুরুটা হয়েছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপে আফগানিস্তান ‘জুজু’ জয় করে। তাই বছরটাই শুধু সাফল্যম-িত থেকেছে। টানা জয়ে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে সেরা বছর কাটিয়েছে টাইগাররা। এবারও বছরের প্রথম ম্যাচেই জয় দিয়ে শুরু হলো। যদিও টি২০ ফরমেটে দল তেমন ভাল অবস্থানে না থাকায় জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে সাফল্য পাওয়া নিয়ে সন্দিহান ছিল দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। আর প্রথম টি২০ ম্যাচে শুক্রবার জিম্বাবুইয়ে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৬৩ রান তোলার পর শঙ্কাটা আরও বেড়েছিল। কারণ এর আগে একবারই টি২০ ক্রিকেটে ১৬০-এর বেশি রান তাড়া করে জিতেছিল টাইগাররা। তবে সব শঙ্কাকে পেছনে ফেলে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ৪ উইকেটে হারিয়েছে জিম্বাবুইয়েকে। ১৮.৪ ওভারেই লক্ষ্য টপকে যায় টাইগাররা ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান তুলে। মাশরাফি বিন মর্তুজার দল ৪ ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে ১-০ ব্যবধানে। ৯ বছর আগে (২৮ নবেম্বর ২০০৬) খুলনার এই ভেন্যুতে জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধেই প্রথম টি২০ খেলেছিল বাংলাদেশ, জয় দিয়েই যাত্রাটা শুরু হয়েছিল। এরপর আর এ মাঠে কোন টি২০ খেলাই হয়নি। সেই ম্যাচের মতোই আবার গতকাল শুক্রবার টস হারল বাংলাদেশ। সেবার আগে ব্যাটিং পেয়েছিল বাংলাদেশ, এবার পায় বোলিং। এ ম্যাচে খেলা উভয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে মাত্র তিনজন করে ৯ বছর আগের ম্যাচও খেলেছিলেনÑ বাংলাদেশের হয়ে মাশরাফি, সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহীম এবং জিম্বাবুইয়ের হয়ে এলটন চিগুম্বুরা, হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও শন উইলিয়ামস। শুক্রবার বাংলাদেশের পক্ষে অভিষেক হয় নুরুল হাসান সোহান ও শুভাগত হোমের। ব্যাটিংয়ের শুরুটা বাংলাদেশী বোলারদের তুলোধুনো করার মধ্য দিয়ে দুর্দান্তভাবে করেছেন দুই জিম্বাবুইয়ে ওপেনার মাসাকাদজা ও ভুসি সিবান্দা। টি২০ ক্রিকেটে নিজেদের উদ্বোধনী জুটিতে ১০১ রানের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েন তারা। সাকিব এসে ব্রেক থ্রু দেন ৪৬ রান করা সিবান্দাকে তামিম ইকবালের ক্যাচে পরিণত করে। কিন্তু ততোক্ষণে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে গেছে জিম্বাবুইয়ে। দারুণ ব্যাটিং করা হ্যামিল্টনকে অবশ্য রান আউটের খপ্পরে পড়তে হয়েছে। ৫৩ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৭৯ রানের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস খেলে তিনি ফিরে যাওয়ার পরেই আর বিশাল সংগ্রহ পায়নি জিম্বাবুইয়ে। শেষ ৪ ওভারে মাত্র ২১ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমান ১৯তম ওভারে টানা দুই বলে এলটন চিগুম্বুরা (৩) ও লুক জঙ্গেকে (০) বোল্ড করে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরির পাশাপাশি বাংলাদেশকেও খেলায় ফেরান। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে ১৬৩ রান তোলে জিম্বাবুইয়ে। ২০০৭ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ১৬৪ রান তাড়া করে ৬ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। নিজেদের এ ম্যাচের আগ পর্যন্ত ১৩ জয়ের মধ্যে রান তাড়া করে ৯ বার জেতার রেকর্ড বলছিল আবারও জয় পাবে টাইগাররা। কিন্তু একই সঙ্গে ১৬০-এর বেশি রান তাড়া করার রেকর্ড একটি থাকায় শঙ্কাটা ছিলই। আর শুরুতেই সৌম্য সরকারের (৭) সাজঘরে ফিরে যাওয়াতে বিপদ উঁকি দিচ্ছিল। তামিমও ২৪ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৯ রান করে আউট হন। তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ১০০ ছক্কা হাঁকানোর গৌরব দেখিয়েছেন এদিন। টি২০ ক্রিকেটে ১১, ওয়ানডেতে ৬২ ও টেস্টে ২৭ ছক্কা তামিমের। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মুশফিকের ছক্কা ৯২টি। দ্রুতই ফিরে যান শুভাগত হোম (৬)। টি২০ স্পেশালিস্ট সাব্বির রহমান ৩৬ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৪৬ রানের ইনিংস খেলে এবং মুশফিকুর রহীম ২৬ ও মাহমুদুল্লাহ ৭ রানে ফিরে গেলে বিপাকেই পড়ে বাংলাদেশ। তবে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব বল হাতে তেমন সুবিধা না করতে পারলেও ব্যাট হাতে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। ১৩ বলে ২০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। ৮ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটে ১৬৬ রান তুলে জয় পায় টাইগাররা।
×