ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন বছরে আশার ডানা -স্বদেশ রায়

প্রকাশিত: ০৪:০১, ৭ জানুয়ারি ২০১৬

নতুন বছরে আশার ডানা  -স্বদেশ রায়

সুভাষ বোস তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্তের সঙ্গী কর্নেল হাবিবকে বলেছিলেন, তিনি ‘জন্মগত আশাবাদী’। তাই বিধ্বস্ত ভারতীয় ন্যাশনাল আর্মির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তিনি আবার ভারত স্বাধীন করার নতুন পথ খুঁজে পাওয়ার জন্য প্লেনের সিঁড়িতে রেখেছিলেন বীরের পদক্ষেপ। যে ছবি কখনই বলে না একজন পরাজিত মানুষ, একজন আশাহীন মানুষ। সুভাষ বোসের সব থেকে প্রিয় কবি, বাঙালীর বিদ্রোহী মনের প্রকাশভূমি কাজী নজরুল ইসলামও সুভাষ বোসের থেকে কম জন্মগত আশাবাদী ছিলেন না- তাই তাঁর গলায় শোনা যায় আশার চূড়ান্ত প্রকাশ। তিনি জাহান্নামের আগুনে বসে পুষ্পের হাসির দৃঢ়তা দেখিয়েছেন। জন্মগত আশাবাদীর আরেকটি পেইন্টিং শুধু আমরা দেখি না, গোটা পৃথিবী দেখে। এই পেইন্টিংয়ের রং ও রেখার কাজ সবই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মুখ। ১৯৭১-এর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে তাঁকে গ্রেফতার করার পরে গ্রেফতার অবস্থায় তার একটি ছবিই দেখা যায়। তিনি বসে আছেন তাঁর দু’পাশে দাঁড়ানো পাকিস্তানী সেনারা। তাঁর ওই মুখের দিকে তাকিয়ে ওই মুখের, ঠোঁটের প্রতিটি রেখা পড়ার চেষ্টা করেছি জীবনে বহুবার। এখনও অনেক গভীর রাতে ছবিটি দেখি। পৃথিবীর সর্বোচ্চ আশাবাদ, দৃঢ়তা প্রকাশের যে শব্দগুলো জানা আছে তার কোন শব্দই ওই মুখ বা ঠোঁটের একটি রেখাকে প্রকাশ করতে পারে বলে মনে হয় না। বরং মাঝে মাঝে কিছু উজ্জ্বল তরুণকে বলি, এই ছবির রেখার মাঝে জীবনের আশাবাদ ও দৃঢ়তা খোঁজার চেষ্টাই নিজের জীবনকে আশাবাদী করার অনেক বড় পথ। আসলে এ এক চিরকালের ছবি, যেখানে ডাক দিয়ে যায়, ‘আমার জীবনে লভিয়া জীবন জাগো রে সকল দেশ।’ আমরা সাধারণ মানুষ, তবুও মানুষ, তাই স্বপ্ন, আশাবাদী মন, দৃঢ়তা কিছুটা হলেও সঙ্গে ফেরে, নইলে তো আর মানব জীবন হয় না- সে জীবন হয়ে যায় দোয়েলের, ফড়িংয়ের বা সাগরকূলে জন্মানো কোন কাঁটাফুলের। তাই সাধারণ মানুষ হিসেবে ২০১৬ সালে দেশকে ঘিরে স্বপ্ন দেখতে, আশাবাদী হতে মনটা কার না আকুল হয়! যেমন এই ২০১৬-এর শুরু থেকে মনে হচ্ছে, ২০১৬-এর শেষটি এমন হোক, দেশের প্রতি উপজেলায় মানুষ প্রতিদিন নাটক দেখুক। ২০১৬-এর ভেতর দেশের প্রতিটি উপজেলায় তৈরি হোক একটি করে নাট্যমঞ্চ। সংস্কৃতিমন্ত্রী নাটকের মানুষ, গডোর প্রতীক্ষায় তাঁর অভিনয় দেখে কখনও অভিনয় মনে হতো না, মনে হতো সত্যি কেউ গডোর জন্য প্রতীক্ষা করছেন। ওয়েটিং ফর গডোর বেশ কিছু মঞ্চায়ন দেখার সুযোগ হয়েছে, আমাদের সংস্কৃতিমন্ত্রীর অভিনয়কে সে সব অভিনয় খুব বেশি হারাতে পারবে বলে মনে হয় না। যাহোক, গডোকে কেউ জানে না। তাই হয়ত গডোকে পাওয়া যায় না। কিন্তু উপজেলার নাট্যমঞ্চ কী তা সকলে জানেন। তাই ২০১৬-তে আশা- বছর ঘুরতেই উপজেলার মঞ্চগুলোতে আলো-ছায়ার পর্দা নামুক। নাটক মানুষের জীবনকে কোথায় নিয়ে যায়, তা আমাদের সংস্কৃতিমন্ত্রী আমার মতো ক্ষুদ্র সাংবাদিকের থেকে হাজার গুণ বেশি জানেন, নাটক নিয়ে তার লেখাপড়ার শত মাইল দূরেও আমি নেই। তবে একজন মানুষ হিসেবে বলতে পারি, মঞ্চনাটক মানুষের হৃদয়ে, মস্তিষ্কে যেখানে নাড়া দেয় তা অচিন্তনীয়। আজ যে মুহূর্তে আমাদের সোশ্যাল ও মেন্টাল ডেমোগ্রাফি বদলে যাচ্ছে নানান কারণে। জীবনের সংস্কৃত আচরণের ক্ষেত্রগুলো যখন ধর্মের নামে এক ধরনের উগ্র আচরণ দখল করে নিচ্ছে সে সময়ে বাঙালী সংস্কৃতিকে রক্ষা, বাঙালী সংস্কৃতিভিত্তিক জাতীয় জীবন গড়ার জন্য ২০১৬-তে এই মঞ্চের আশা নিশ্চয়ই কোন ঘুম ঘোরের স্বপ্ন নয়। পাশাপাশি আরও আশাবাদী হতে ইচ্ছা করে- গ্রাম, উপজেলা থেকে শুরু করে এই মহানগরী সর্বত্র যে নাচ শেখার, গান শেখার, ছবি আঁকা শেখার জোয়ার ছিল ওই জোয়ারে যে ভাটার টান এসেছে আমাদের সংস্কৃতিমন্ত্রী ওই ভাটার স্রোতকে বীর হাতে ফিরিয়ে আনবেন। ২০১৬-তে আবার দেশের ছেলেমেয়েদের শরীর ছন্দে নাচুক, কণ্ঠে উঠুক সুর, হাতের তুলি করুক খেলা। কারণ, এ তো সত্য, ভায়োলিন না বাজালে তো আইনস্টাইন হওয়া যায় না। আর আইনস্টাইন না হলে তো পৃথিবী বদলায় না। সভ্যতার নতুন যুগ আসে না। ২০১৬-এর এই শুরুতে তেমনি আশা করতে ইচ্ছা করে আমাদের শিক্ষামন্ত্রী শুধু বছরে একদিন বই উৎসব করবেন না। তিনি সারা বছরের বইয়ের ব্যবস্থা করবেন। তিনি অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন, রাজপথের মানুষ। তিনি জানেন, বাঙালী জীবন বড়ই দিবসে বাঁধা, সারা বছরের নয়। তাই সারা বছরের বই ছাত্রদের শুধু নয়, দেশের মানুষের হাতে আসবে। নতুন বছরে আশাবাদী হতে ইচ্ছা করে, আমাদের শিক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, এনবিআরের ঈগল চোখের হিসাবীরা সবাই বসে মিটিং করবেন। সেখানে শুধু আয়করের অর্থের হিসাব নয়, ক্লাসের বাইরের পড়ার বইয়ের উপযোগিতা, আনন্দ এবং মানবসম্পদ সৃষ্টির কত বড় মাধ্যম এগুলো নিয়ে আলাপ করে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। এর আর্থিক উপযোগিতাও হিসাব করতে পারেন। তারপরে সহজ একটি পথ বের হয়ে যাবে। যে পথ বেয়ে দেখা যাবে বিশ্বায়নের এ যুগে সারা বিশ্বের বই আমাদের হাতে, সন্তানের হাতে সহজে চলে আসছে, যা পথ খুলে দেবে শিক্ষিত প্রজন্ম সৃষ্টির। তাই ২০১৬-তে আশাবাদী হতে ইচ্ছা করে আমাদের শিক্ষামন্ত্রী শুধু পাস করাবেন না, শিক্ষিত জাতি উপহার দেবেন। কারণ, শিক্ষামন্ত্রী তো শুধু ছাত্রদের নন, তিনি আমাদের সকলের- সকলকে প্রতিনিয়ত শিক্ষিত হবার ও শিক্ষিত রাখার সকল পথ তিনি খুলবেন। এই পথ খোলার জন্য ভিন্ন ভাষার বইয়ের অনুবাদও বড় বেশি প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধুর আমলে অনেক শক্তিশালী করা হয়েছিল বাংলা একাডেমির অনুবাদ শাখা। কবি নূরুল হুদাদের মতো প্রতিভাবান ও ইংরেজী সাহিত্যের ছাত্ররা সেদিন বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে সে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। কেন সে পথ এগোয়নি তা সকলে জানেন। ১৫ আগস্ট সব বদলে দেয়। এখন নূরুল হুদাদের নেতৃত্ব দেয়ার বয়স চলে যাচ্ছে, তাঁদের নেতৃত্বে আধুনিক শিক্ষিত তরুণদের নিয়ে আবার তো খোলা যেতে পারে বিশ্বের দুয়ার। ২০১৬-তে শিক্ষামন্ত্রী, সংস্কৃতিমন্ত্রীর কাছে জাতি এমন আশা করতেই পারে! ২০১৫ শেষ হলো দেশে পৌরসভা নির্বাচনের ভেতর দিয়ে। এই নির্বাচনী প্রচারের সময় টিভি পর্দায় দেশের অনেক পৌরসভার অবস্থা দেখার সুযোগ হলো? দেখা গেল অনেক পৌরসভার বিশাল এলাকায় এখনও শহরের ছোঁয়া লাগেনি। পৌরসভার মূল উদ্দেশ্য কিন্তু মানুষের জীবনে শহরের সুযোগ-সুবিধা আনা। পরিবর্তিত বিশ্বে দেশের যত বেশি মানুষকে শহরের সুযোগ-সুবিধার ভেতর আনা যাবে ততই দেশ নানান সুবিধা পাবে। ২০১৬-তে তাই আশাবাদী হতে চাই আরেকটি নতুন বছর আসার আগেই স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এই পৌরসভাগুলোকে পরিপূর্ণ শহরের উপাদানে গড়ে তুলবেন। সেভাবে তিনি পৌরপিতাদের কাজ করাবেন। কাজ করলে যে কাজ কত দ্রুত করা যায় সে তো ঢাকার মেয়র আনিসুল হককে দেখে বোঝা যাচ্ছে। এ দেশে কাজ করতে গেলে যে কত ভাল মানুষকে পাশে পাওয়া যায় তারও উদাহরণ কিন্তু ঢাকার আরেক মেয়রের কাজের সময় দেখা গেল। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পরিচ্ছন্ন নগরীর উদ্যোগ নিয়েছেন। দেশের মানুষ দেখতে পেল তার পাশে র‌্যাবপ্রধান বেনজির আহমেদকে। র‌্যাবপ্রধান বেনজির আহমেদের দেশপ্রেম ও সততা নিয়ে এই কলামে লিখেছিলাম। সে লেখার ঘটনায় আর নাই গেলাম। ভবিষ্যত বলবে। তবে আবার যখন র‌্যাবপ্রধান বেনজির আহমেদকে পরিচ্ছন্নতার অভিযানে অভিযাত্রী দেখি তখন সত্যি আনন্দে শুধু বুক ভরে ওঠে। দেশের এমন সন্তানদের ভালবাসতে শ্রদ্ধা করতে বলি তরুণদের। কারণ, দেশপ্রেম থাকলে একটি পেশাকে যে কতটা বিস্তৃত ক্ষেত্রে নিয়ে যাওয়া যায় তা তিনি দেখালেন। আমরা দেশের বাইরে গেলে দেখি, মানুষ প্রেগননসি লেবারে পুলিশকে ডাকে। তার প্রশংসা করে আমরা লিখি। ২০১৫-এর শেষে বাংলাদেশে দেখা গেল শহর পরিচ্ছন্নে এলিট পুলিশ। একি আমাদের গর্ব নয়! সত্যি যে কাজ হচ্ছে তার প্রমাণ পেলাম ২০১৬ সালের শুরুতে। জানতে পারলাম আর দিনে ময়লা ফেলা নয়, ময়লা সিটি কর্পোরেশন রাতেই নেবে। তাই স্থানীয় সরকারমন্ত্রী যদি মনে করেন তিনি সব পৌরসভাকে ২০১৬-এর ভেতর শহরের যাবতীয় উপাদান দেবেন- খুব কঠিন কিছু নয়। তিনি সবাইকেই পাশে পাবেন। সর্বোপরি পাশে পাবেন শেখ হাসিনাকে। যাকে নিয়ে এখনও শেষ কথা বলার সময় আসেনি। কিন্তু তিনিও তো আরেক জীবন্ত জন্মগত আশাবাদী। যুদ্ধ-অপরাধী মুক্ত, নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতু- একি অবিশ্বাস্য আশাবাদের চরম প্রকাশ নয়? দেশের কৃষিমন্ত্রী দেশকে ধান্যে ও পুষ্পে শোভিত করেছেন। দেশের মানুষের খাদ্যের সঙ্গে ফল দেয়ার তাঁর আন্তরিকতা আছে। বিদেশী অনেক ফল বাংলাদেশে উৎপাদন এখন সম্ভব করেছেন। কিন্তু মূল সমস্যা ফল উৎপাদনের জমি। ২০১৬-তে কি আশাবাদী হতে পারি না, এই ফল উৎপাদনের জমির সমস্যা কেটে যাক। আমাদের পার্বত্য এলাকায় ফল উৎপাদনের বিস্তীর্ণ জমি আছে। দেশের উপজাতি ভাই-বোনরা নিজেদের আলাদা মনে না করে এবং পার্বত্য এলাকাকে আলাদা মনে না করে ২০১৬-তে শুভবুদ্ধিতে ভর করে মিশে যাক দেশের সকল প্রান্তে- সকল মনে। আর দেশের নদীতে যেমন জলজ ফসল হচ্ছে, সমতলে যেমন সমতলের ফসল হচ্ছে পাহাড়ে তেমনি দেশের জন্যই ফসল হোক। শুধু উপজাতি ভাই-বোনরা নয়, পাশাপাশি শুভবুদ্ধিতে ভর করুক দেশের পরিবেশজীবী ও এনজিওজীবীরা। তারা বিনা পরিশ্রমে বিদেশী অর্থে জীবন ধারণের পরিবর্তে পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবন ধারণে অভ্যস্ত হোক এ ২০১৬-তে। উস্কানি দেয়া বন্ধ করুক উপজাতিদের। এর সঙ্গে সঙ্গে দেশের পূর্তমন্ত্রীও ২০১৬-তে দেশের গ্রামগুলোকে আধুনিক করার কাজ শুরু করবেন এমন আশাবাদী কি দেশের মানুষ হতে পারে না। যার ফলে আগামীতে গ্রামে পরিকল্পিত বাসস্থান হবে। পাওয়া যাবে অনেক উঁচু জমি যেখানে ফল, মসলাসহ অনেক কিছু উৎপাদন সহজ হবে। ২০১৫-এর শেষে দেখা গেছে শিল্পায়নে বাধা দেয়ার জন্য শিল্পাঞ্চলের জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে নেমেছিল একশ্রেণীর মিডিয়া ও এনজিওজীবী। ২০১৬-তে নিশ্চয়ই তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। তারা বুঝবেন, আগামী দিনের বাংলাদেশে শিল্পায়নের কত দরকার। পাশাপাশি প্রবীণ রাজনীতিবিদ শিল্পমন্ত্রীর কাছেও আশা করব, তিনি তার মেধা দিয়ে এ সমস্যার উত্তরণ ঘটিয়ে ২০১৬-কে শিল্পায়নের এক নব সূচনার বছর হিসেবে বাংলাদেশকে উপহার দেবেন। আমরা জানি সরকার এখন মেগা প্রজেক্ট নিয়ে ব্যস্ত। ২০১৬-তে আরেক আশাকে বাস্তবে যেন রূপ দেন শিল্পমন্ত্রী- সে আশা হলো ছোট ছোট শিল্প। উঠুক না ২০১৬-তে একটি স্লোগান, ‘একটি ঘর হোক একটি শিল্প’। যেমন এ সরকারের স্লোগান ছিল একটি বাড়ি একটি খামার। আগামীতে শিল্পেই বাঁচতে হবে বাংলাদেশকে। তাই ২০১৬ হোক না শিল্পের এই নতুন স্লোগান তোলার বছর। আসলে আশা নামক পরী মেয়েটির ডানা বড়ই দুরন্ত। তাকে উড়তে দিলে কেবলই দিগন্তরেখা পার হয়ে আরেক দিগন্তে যেতে চায়। কিন্তু পত্রিকার পাতা তো আর আকাশের মতো অসীম নয়। তাই এখানে আশার রেখাকে টেনে ধরতে হয়। আশার পাখাকে আজ আর উড়তে দেয়া নয় বরং একটি মাত্র আশার ঝাঁপি খুলে বাদবাকি আশা সারা বছরের জন্য রেখে দিয়ে শেষ করতে চাই। এই আশাটির সঙ্গে একটি ব্যথাও আছে। সে ব্যথাটি বুকের ভেতর কেমন যেন মোচড় দিয়ে ওঠে- যখন দেখি দেশের বামপন্থী দলগুলো ছোট থেকে আরও ছোট হয়ে যাচ্ছে। কেন হবে এমনটি? সোভিয়েত ইউনিয়নসহ কমিউনিস্ট বিশ্ব ভেঙ্গে গেছে বলে? কিন্তু বাংলাদেশ থেকে কি দারিদ্র্য চলে গেছে? বৈষম্য চলে গেছে? গণতন্ত্রও পারবে না, কমিউনিজমও পারবে না এই দারিদ্র্য শেষ করতে, এই বৈষম্যের অবসান ঘটাতে। এ সত্য পৃথিবীতে প্রমাণিত। এ দুইয়েরও সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু তাই বলে কি পথ খোঁজা বন্ধ করতে হবে? পৃথিবীতে দারিদ্র্য থাকবে, বৈষম্য থাকবে আর সকলে চোখ বুঝে থাকব- এই কি সভ্যতার বাণী! সমাজতন্ত্রের পথ ধরে দারিদ্র্য ও বৈষম্যের অবসান ঘটানোর পথে যারা চলেছিলেন- সমাজতান্ত্রিক বিশ্ব হেরে গেছে বলে কি পথ ছেড়ে দেবেন! তারা কি এই দারিদ্র্য ও বৈষম্য দূর করার জন্য নতুন পথ খুঁজবে না? তারা যদি না খোঁজে- ক্লান্ত পথিক হয়ে পথ ছেড়ে চলে যায় তার পরেও ২০১৬-তে আশাবাদী হতে হবে- ২০১৬ এর তরুণ তার নতুন প্রাণ নিয়ে নতুন পথ খুঁজবে। যে পথে সব দারিদ্র্যের, সব বৈষম্যের অবসান হবে। আজ না হোক আগামীতে হবে। তবু পথ চলতে হবে। থেমে থাকা নয়। পথ থেকে নেমে যাওয়া নয়। [email protected]
×