ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রূপগঞ্জে সড়ক মেরামতের ৬০ লাখ টাকা আত্মসাত

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৪ জানুয়ারি ২০১৬

রূপগঞ্জে  সড়ক মেরামতের ৬০ লাখ টাকা আত্মসাত

নিজস্ব সংবাদদাতা রূপগঞ্জ, ৩ জানুয়ারি ॥ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন এলাকার এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়ক মেরামত কাজের ৬০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সওজের কর্মকর্তাসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। সড়ক মেরামত না করেই সওজের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিল উঠিয়ে নিয়েছে । নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ সূত্রে জানা গেছে, এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কের কাঞ্চন সেতু থেকে পূর্ব দিকে ৪ কিলোমিটার এলাকায় মহাসড়ক মেরামত করার জন্য চলতি অর্থবছরে সীমিত দরপত্র পদ্ধতির মাধ্যমে মেসার্স সাগর ট্রেডার্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়। ২০১৫ সালের ১০ নবেম্বর ৫৯ লাখ ৭৬ হাজার ১২ টাকায় কাজটি করার জন্য নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথের সঙ্গে চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করে ওই প্রতিষ্ঠান। চুক্তির পর থেকে ২৫ দিনের মধ্যে ওই কাজটি করার মেয়াদ ছিল। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠান সড়ক মেরামতের কাজ না করেই নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী একে সামছউদ্দিন আহাম্মদ, নারায়ণগঞ্জ সড়ক উপ-বিভাগ-২-এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিদ হোসেনকে ম্যানেজ করে ওই কাজের পুরো বিল করে নেয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে ওই বিল থেকে গত ২৯ ডিসেম্বর ৪০ লাখ টাকার চেক প্রদান করেন নির্বাহী প্রকৌশলী একে সামছউদ্দিন আহাম্মদ। স্থানীয় বাসিন্দা পরিবহন শ্রমিক-চালকদের কাছে সড়ক মেরামত কাজ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তারা জানান, গত ৪/৫ মাসের মধ্যে বাইপাস সড়কের কাঞ্চন সেতু থেকে পূর্ব দিকে ৪ কিলোমিটার এলাকায় কোন প্রকার মেরামতের কাজ হয়নি। সড়কের ওই অংশে বড় বড় গর্তের কারণে প্রায় সময়ই মালবাহী যানবাহন বিকল হয়ে পড়ছে। ঘটছে হতাহত ও দুর্ঘটনা। আর ধুলাবালিতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। গর্তের কারণে প্রতিদিন দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যানবাহন চালক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কাজের বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাগর ট্রেডার্সের মালিক শ্রী গোপাল জানান, গত ঈদের আগে তিনি সেখানে কাজ করেছেন । কাজের টেন্ডার কবে হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বাইরে আছি, কাগজ না দেখে বলতে পারব না। ৪০ লাখ টাকার বিল নেয়ার কথা তিনি অস্বীকার করেন। গত ২৯ ডিসেম্বর তার ওই কাজের ৪০ লাখ টাকার যে চেক সড়ক ও জনপথ দিয়েছে সেটা কার জানতে চাইলে তিনি আর কোন কথা না বলে মোবাইল ফোনের লাইন কেটে দেন । এ ব্যাপারে সড়ক উপ-বিভাগ-২-এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিদ হোসেন বলেন, গত বর্ষায় কাজ করা হয়েছে। কাজটির কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে গত ১০ নবেম্বর এবং ২৫ দিনের মধ্যে কাজ করার কথা, তাহলে কিভাবে ওই সময়ে কাজ শেষ দেখানো হলো প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমরা এভাবেই কাজ করি। কাজের বিল দেয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে মন্ত্রীও জানে, মনিটরিং টিমও জানে। সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×