ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আজ মহাঅষ্টমী রামকৃষ্ণ মিশনে হবে কুমারী পূজা

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ২১ অক্টোবর ২০১৫

আজ মহাঅষ্টমী রামকৃষ্ণ মিশনে হবে কুমারী পূজা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ শারদীয় দুর্গোৎসবের তৃতীয় দিন। মহাঅষ্টমী, প্রতিবছরের মতো এবারও মহাঅষ্টমীতে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে অনুষ্ঠিত হবে কুমারীপূজা। রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনে আজ মহাঅষ্টমীর দিন পূজা শুরু হবে সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে। ১১টায় কুমারীপূজা ও দুপুর ১টা ৩৬ মিনিটে সন্ধিপূজা আরম্ভ হবে। এদিকে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীতে দুটি পূজাম-প পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি হিন্দুধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শারদীয় শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। দেবী পূরাণে কুমারীপূজার সুষ্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। দুর্গা মাতৃভাবের প্রতীক আর কুমারী নারীর প্রতীক। কুমারীর মধ্যে মাতৃভাব প্রতিষ্ঠাই এ পূজার মূল লক্ষ্য। শাস্ত্র অনুসারে সাধারণত এক বছর থেকে ১৬ বছরের সুলক্ষ্মণা কুমারীকে পূজা করা হয়। বয়স ভেদে কুমারীর নাম হয় ভিন্ন। ব্রাহ্মণ অবিবাহিত কন্যা অথবা অন্য গোত্রের অবিবাহিত কন্যাকেও পূজার বিধান শাস্ত্রে রয়েছে। শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস দেব বলেছেন, শুদ্ধা কুমারীতে ভগবতীর বেশি প্রকাশ। কুমারীপূজার মাধ্যমে নারী জাতি হয়ে উঠবে পূত-পবিত্র ও মাতৃভাবাপন্ন। প্রত্যেকে শ্রদ্ধাশীল হতে হবে নারী জাতির প্রতি। ১৯০১ সালে ভারতীয় দার্শনিক ও ধর্মপ্রচারক স্বামী বিবেকানন্দ সর্বপ্রথম কলকাতার বেলুড় মঠে নয়জন কুমারীপূজার মাধ্যমে এর পুনঃপ্রচলন করেন। তখন থেকে প্রতিবছর দুর্গাপূজার অষ্টমী তিথিতে এ পূজা চলে আসছে। পূজার আগ পর্যন্ত কুমারীর পরিচয় গোপন রাখা হয়। এছাড়াও নির্বাচিত কুমারী পরবর্তী সময়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন আচার-অনুষ্ঠান করতে পারে। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির কেন্দ্রীয় পূজাম-পে সকাল ৮টা ৪০ মিনিটের মধ্যে দেবীর মহাঅষ্টম্যাদি কল্পারম্ভ ও মহাঅষ্টমী বিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধিপূজা অনুষ্ঠিত হবে সকালে। দুপুরে বিতরণ করা হবে মহাপ্রসাদ। দুর্গোৎসবের দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার সারাদেশে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় মর্যাদায় উদ্যাপিত হয়েছে মহাসপ্তমী। নবপত্রিকা স্থাপনের মধ্যদিয়ে মহাশক্তি আনন্দময়ীর পূজা শুরু হয়। মহাসপ্তমীতে ষোড়শ উপচারে অর্থাৎ ষোলটি উপাদানে দেবীর পূজা হয়। সকালে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদান করা হয়। সেই সঙ্গে দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্থানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে দেবীর পূজা করেন ভক্তরা। সকালে পূজা শুরু হলেও দুপুরের পর থেকে ম-পগুলোতে ঢল নামে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের। শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাই নন, সব ধর্মের দর্শনার্থীরাই ম-পে ম-পে প্রতিমা দেখতে ভিড় করেন। বনানী পূজাম-পে মঙ্গলবার রাত আটটায় পরিদর্শনে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি পূজায় আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলেন খোঁজ-খবর নেন। এর আগে সারাদিনই পূজা-পুষ্পাঞ্জলি প্রদান প্রসাদ বিতরণ করা হয়। সন্ধায় এক ঘণ্টার আরতী প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। আজ বুধবার বনানী ম-পে সকাল ৮টা ৪০ থেকে ৯টা ২৮ মিনিট পর্যন্ত সন্ধিপূজার মাধ্যমে শুরু হবে মহাঅষ্টমীর আচার। সকালে ভক্তরা দেবী দুর্গার ভক্তিতে করবেন অঞ্জলি প্রদান। আর জাগতিক কল্যাণার্থে দেবীমাতার প্রতি ভক্তিভরে প্রসাদ গ্রহণ করবেন। সন্ধ্যায় ৬টা থেকে সাতটা পর্যন্ত আরতী প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। আজ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সন্ধ্যা ৭টায় যাবেন বনানী ম-প পরিদর্শনে। আর রাত আটটায় বিএনপির প্রতিনিধি দল আসবেন ম-পে। এরপর শিশু কিশোরদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। রমনা কালীমন্দির, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, স্বামীবাগ লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম, ধানম-ি কলাবাগান মাঠ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, বাংলাবাজার পূজা কমিটি, নর্থব্রুক হল রোড, প্রতিদ্বন্দ্বী পূজাম-প, তাঁতীবাজার পূজা কমিটি, শঙ্ঘমিত্র শাঁখারীবাজার, পাণিটোলা, বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান কমিটি, হাজারীবাগ সুইপার কলোনি, মিরপুর কেন্দ্রীয় মন্দির, আজিমপুর সার্বজনীন পূজাম-প বনানী পূজাম-প, গৌতম মন্দির, ভোলাগিরি আশ্রমসহ বিভিন্ন পূজাম-পে পুষ্পাঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ, সন্ধ্যা আরতীসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
×