ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের ১১৮ সংগঠন নিয়ে জঙ্গী তৎপরতা চালাচ্ছে জামায়াত

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ৯ আগস্ট ২০১৫

দেশের ১১৮ সংগঠন নিয়ে জঙ্গী তৎপরতা চালাচ্ছে জামায়াত

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর থেকে ॥ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বলেছেন, স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দল জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হলেও তারা আওয়ামী জাতীয়তাবাদী জামায়াতে ইসলামী নামে নতুন দল করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখবে। সারাদেশে আত্মঘাতী বোমা হামলা, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও নাশকতার ব্যাপকতার মাধ্যমে দেশে একটি অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে বিনিয়োগের চরম অবনতি ঘটিয়ে জঙ্গীরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র করছে। তাদের এ ষড়যন্ত্রের দোসর হচ্ছে জামায়াত-শিবির, হেফাজতসহ ১১৮ মৌলবাদী জঙ্গী সংগঠন। শনিবার বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির উদ্যোগে দিনাজপুরে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আঞ্চলিক সেমিনারে এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত। ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি, সাম্প্রদায়িকতা-মৌলবাদ-জঙ্গীবাদ-আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আঞ্চলিক সেমিনারে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল বারকাত ৮২ পৃষ্ঠার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অর্থনীতি সমিতির অন্যতম সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মামুনের সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দীন আহমেদ, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি চিত্ত ঘোষ এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সমিতির নির্বাহী সদস্য হাবিবুল ইসলাম বাবুল। সেমিনারে পঠিত দীর্ঘ প্রবন্ধে ড. আবুল বারকাত বলেন, দারিদ্র্য মাপার যন্ত্র ঠিক কি না তা আগে না ঠিক করে দারিদ্র্যের হার কমেছে তা বলা ঠিক নয়। অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর ও সাম্প্রদায়িক মুক্ত সমাজ গঠনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আদর্শ নিয়েই একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। দেশে ১১৮ জঙ্গী সংগঠন নানাভাবে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ আমাদের কারও কোন বিকার নেই। রাষ্ট্র নির্বিকার। তাই আজ জঙ্গী ও মৌলবাদীদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ কর্মকা- সাধারণ মানুষের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। তিনি বলেন, বিচারের রায় কেনাবেচা হচ্ছে। দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার-নির্যাতন দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। জামায়াতের নেতৃত্বে জঙ্গীরা সংঘবদ্ধ হয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছে। দেশের একমাত্র সংগঠিত রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী। তাই তাদেরকে যুদ্ধাপরাধের জন্য নিষিদ্ধ করলেও তারা আওয়ামী জাতীয়দাবাদী নামে নতুন দল করে রাজনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাবে। তিনি বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি দিন দিন ব্যাপকতা লাভ করায় হত্যা, নির্যাতন, জুলুম, হামলা বেড়েই চলছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য গঠিত দু’টি ট্রাইব্যুনাল ৫৯৪ মামলা বিচারের জন্য গ্রহণ করেছেন। যার মোট আসামি সংখ্যা ২৩৭৬। যেভাবে মামলার কার্যক্রম চলছে তাতে ৫৯৪ মামলার নিষ্পত্তি করতে ৫শ’ বছর সময় লাগবে। বিচার বিলম্বিত হওয়া বিচারহীনতার শামিল। তাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম শেষ করার ব্যাপারে সরকারকে অবিলম্বে নতুন করে পরিকল্পনা করতে হবে। পৃথিবীর কোন দেশে যুদ্ধাপরাধীদের রায়ের বিরুদ্ধে আপীলের সুযোগ নেই। অথচ আমাদের দেশে সে সুযোগ রাখা হয়েছে। প্রবন্ধে ড. বারকাত বলেন, মৌলবাদী গোষ্ঠীর নানা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক ২০১৪ সালে আড়াই হাজার কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে। আর ৩৪ বছরে এদের নিট মুনাফার পরিমাণ ৭০ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা। ১১৮ জঙ্গী সংগঠন এ অর্থ নিয়ে সারাদেশে জঙ্গীবাদ ও মৌলবাদের পক্ষে কাজ করে নিজেদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করছে। তিনি বলেন, আমরা চোরের জন্য ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেনি। মুক্তিযোদ্ধাদের সার্টিফিকেট দেয়া উচিত হয়নি।
×