ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আউশের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১১ লাখ হেক্টর জমি ॥ এবারও বাম্পার ফলনের আশা

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ১ আগস্ট ২০১৫

আউশের লক্ষ্যমাত্রা  প্রায় ১১ লাখ হেক্টর জমি ॥ এবারও বাম্পার ফলনের আশা

এমদাদুল হক তুহিন ॥ গত বোরো মৌসুমে সারাদেশে বাম্পার ফলন হয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় চলতি আউশ ও রোপা আমন মৌসুমেও দেশে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রাকৃতিক বিরূপ পরিবেশ, ভারিবর্ষণ এবং বন্যার প্রভাবে কয়েক স্থানে ক্ষতির সম্মুখীন হলেও চলতি মৌসুমে আবাদের তেমন কোন বিরূপ প্রভাব পড়বে না। বৃষ্টি ও বর্ষার ওপর নির্ভরশীল ধানের এ আবাদ কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে- এমন আশঙ্কায় কৃষকরা আগে থেকেই ছিলেন সজাগ। দেশের কোথাও কোথাও মৌসুম কেন্দ্র করে কৃষিশ্রমিক সঙ্কটও দেখা দিয়েছে। বিরূপ সকল অনুঘটককে তোয়াক্কা না করে পুরোদমে এগিয়ে চলছে চাষাবাদ। চলতি মৌসুমে সারাদেশে আউশ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১০ লাখ ৮০ হাজার হেক্টর। আবাদ হয়েছে ১০ লাখ ২৫ হাজার ২৭৪ হেক্টর পরিমাণ জমিতে, যা শতাংশের হিসেবে ৯৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অন্যদিকে সারাদেশে আমনের বীজতলা নির্মাণ শেষ হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের জেলাভিত্তিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসলের ক্ষয়ক্ষতির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোপা আমনের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে বীজতলার আর কোন ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দৈনন্দিন কার্যক্রমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে সারাদেশে আউশ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১০ লাখ ৮০ হাজার হেক্টর। এখন পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ১০ লাখ ২৫ হাজার ২৭৪ হেক্টর জমিতে, শতাংশের হিসেবে তা ৯৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আবাদকৃত জাতের মধ্যে রয়েছেÑ হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় জাতের ধান। সারাদেশ আউশ মৌসুমে হাইব্রিড জাতের ধান আবাদ হয়েছে ৫০ হাজার ৩৩৪ হেক্টর জমিতে, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩৩৪ হেক্টর বেশি। অন্যদিকে উফশী ধানের আবাদ হয় ৭ লাখ ৮১ হাজার ৫৭ হেক্টর জমিতে, যা চলতি বছরের টার্গেট পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। উফশীর আবাদ লক্ষ্যমাত্রার ৯৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। জানা গেছে, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় উফশী ধানের আবাদও বেশি হয়েছে। বর্ষা মৌসুম কাজে লাগিয়ে সারাদেশে স্থানীয় জাতের ধানের আবাদ হয়েছে সবচেয়ে কম, শতাংশের হিসাবে অর্জিত জমির পরিমাণ তা মাত্র ৮৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। সারাদেশে স্থানীয় জাতের আউশ ধান আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৮৩ হেক্টর জমিতে। আউশ আবাদের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার হরশী গ্রামের কৃষক হিমেল জনকণ্ঠকে বলেন, আমাদের এলাকায় আউশ রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। কিছু কিছু জমিতে আউশ ধান বের হওয়া শুরু হয়েছে। কোন ধরনের কৃষি উপকরণের ঘাটতি নেই বলে জানান এই কৃষক। আউশ ধানের পরিচর্চায় কৃষক ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন এই তো কিছুদিন। রোপা আমনের বীজতলা নির্মাণে ব্যস্ত সময় কাটিয়ে এখন তা মাঠে লাগানো শুরু হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে সারাদেশে রোপা আমন ধানের বীজতলা নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। হাইব্রিড ও উফশী ধানের বীজতলা নির্মাণ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি; তবে স্থানীয় জাতের আমন ধানের বীজতলা নির্মাণ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এ বছর সারাদেশে আমনের বীজতলা নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ ৮১ হাজার ৬৬৪ হেক্টর। বীজতলা নির্মাণ হয়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার ৭১৮ হেক্টর পরিমাণ জমিতে, যা লক্ষমাত্রার তুলনায় ৩৯ হাজার ৫৪ হেক্টর বেশি। শতাংশের হিসেবে সারাদেশে রোপার বীজতলা নির্মাণ হয়েছে ১১৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
×