ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

এশিয়া নিয়ে আশায় কপিল

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

এশিয়া নিয়ে আশায় কপিল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপ যত ঘনিয়ে আসছে দলগুলোর শক্তি-সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা তত জমে উঠছে। স্টিভেন ফ্লেমিংয়ের বাজির ঘোড়া অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। দুই স্বাগতিকে বাইরে বেশি ভোট দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরে। কি হবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের, কেমন করবে এশিয়ার অপর দলগুলো, বিশেষ করে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার মতো ক্রিকেট পরাশক্তি? সাম্প্রতিক পারফরমেন্সের বিচারে হয়ত পিছিয়ে, কিন্তু উপহাদেশের দলগুলো নিয়ে আশাবাদী গ্রেট কপিল দেব ও সৌরভ গাঙ্গুলী। ভারতের প্রথম বিশ্বজয়ী সেনাপতি কপিলের মতে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বদলে যাবে সমীকরণ। আর এই অঞ্চল থেকে কোয়ার্টারে জায়গা করে নেয়ার সামর্থ্য রয়েছে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার। ‘বিশ্বকাপে প্রতিটি দলেরই সুযোগ থাকবে। যারা কেবল হালের পারফরমেন্স দিয়ে বিচার করছেন, তারা বোকার স্বর্গে বাস করেন! ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার মতো শক্তিকে স্রেফ দু-সিরিজ দিয়ে মাপা যায় না। গ্রুপ পর্ব পার হলে যে কিছুই হতে পারে। বদলে যেতে পারে সমীকরণ। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে আমি সেটাই দেখেছি। বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে আসল লড়াই শুরু নক-আউট পর্বে, আর ভারত-শ্রীলঙ্কার সামর্থ্য রয়েছে গ্রুপ পেরিয়ে সে লড়াইয়ে শামিল হওয়ার।’ বলেন ভারতীয় ক্রিকেটের ‘কালোমানিক’খ্যাত কপিল দেব। ১৯৮৩ সালে তার নেতৃত্বেই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। উপহাদেশের কোন দেশের ভা-ারে জমা হয়েছিল শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট। এরপর ১৯৯২-এ এই অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড থেকেই শিরোপা নিয়ে ফিরেছিল ইমরান খানের পাকিস্তান। ১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপ জয় করে ‘জিরো থেকে হিরো‘ বনে গিয়েছিল অর্জনু রানাতুঙ্গার লঙ্কাবাহিনী। গত বছর ভারত-বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত আসরে ২৮ বছর পর শিরোপা পুনরুদ্ধার করে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত। শিরোপা ধরে রাখতে তাদের চ্যালেঞ্জটা এবার অনেক বেশি। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া সফরে টেস্ট সিরিজের পর ত্রিদেশীয় ওয়ানডেতেও ব্যর্থ ধোনির দল। তবে এসব প্রভাব ফেলবে না বলে আশাবাদী কপিল আরও বলেন, ‘মনে রাখতে হবে বিশ্বকাপে ছোট দলগুলোর সাফল্য বলতে বোঝায় অঘটন ঘটানো। কিন্তু বড় দলগুলোর নিজেদের মেলে ধরার আসল জায়গা বড় মঞ্চ। এবারও তাই হবে, শেষ পর্যন্ত বড় দলগুলোই বাজিমাত করবে। এশিয়ার কাউকেই পিছিয়ে রাখব না। তবে ভারত-পাকিস্তানের তুলনায় শ্রীলঙ্কাকে একটু বেশিই গোছানো।’ যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের কাছে হারলেও লঙ্কান দলটাকে দারুণ মনে হচ্ছে। ইতিহাসে ১২ হাজারের ওপর ওয়ানডে রান সংগ্রকারী মাহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারা যে কোন পরিস্থিতিতে ফিট। চমৎকার ফর্মে ফিরেছে ওপেনার তিলকারতেœ দিলশান। এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, থিসারা পেরেরা, রঙ্গনা হেরথাদের নিয়ে গঠিত বোলিং বিভাগেও বৈচিত্র্য রয়েছে।’ পাশাপাশি অধিনায়ক ধোনিরও প্রশংসা করেন তিনি। ক’দিন আগে টেস্ট (৯০ ম্যাচ) ক্রিকেট থেকে অবসর নেন যিনি। তাঁকে ঠা-া মাথার ও সাহসী ক্যাপ্টেনের স্বীকৃতি দিয়ে কপিল আরও বলেন, ‘চাইলে ও অনায়াসে ১শ’ টেস্ট খেলতে পারত। কিন্তু মাইলফলক ছোঁয়ার কথা না ভেবে সরে দাঁড়িয়েছে। বিরাট কোহলিদের নিয়ে এগিয়ে প্রশাসনকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। আমি নিজে হলেও কিন্তু এটা পারতাম না। গতবার শচীনের মতো সিনিয়রদের নিয়ে নেৃতৃত্ব দিয়ে শিরোপা ফিরিয়ে এনেছে। বোর্ড কর্তাদের সামনে মাথা উঁচু করে কথা বলার সাহস রয়েছে। মাঠে দল পরিচালনায় অসাধারণ, ব্যাট হাতে দারুণ ফিনিশার। সুতরাং সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ ধরে রাখতে ওর ওপর শতভাগ আস্থাশীল আমি।’ টেস্ট হারের পর যে সৌরভ গাঙ্গুলীর মাথা বিগড়ে গিয়েছিল। ধোনি ও দল নিয়ে ছিলেন চরম বিরক্ত সেই তিনিও শুনিয়েছেন আশার বাণী। সৌরভ বলেন, ‘ওয়ানডেতে যে কোন দলকে হারানোর সামর্থ্য ভারতের রয়েছে। ধোনিদের প্রয়োজন কেবল ক্ষুধার্থ বাঘের ন্যায় ঝাঁপিয়ে পড়া।’ ব্যাটিংই ভারতের মূল শক্তি হবে বলে মনে করা সৌরভ আরও যোগ করেন, ‘বিশ্বকাপে ব্যাটিংই হবে আমাদের চালিকাশক্তি। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, ধোনি পরীক্ষিত, সঙ্গে আমবাতি রাইডু, অজিঙ্কা রাহানেরা ছন্দে ফিরছে। অস্ট্রেলিয়ায় গত আড়াই মাস কাটানোর পর ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়েছে। ওদিকে লঙ্কান গ্রেট মুত্তিয়া মুরলিধরন উল্টরসূরিদের নিয়ে আশাবাদী। একই সঙ্গে ভারত-পাকিস্তানও বিশ্বকাপে ভাল করবে বলে মনে করেন তিনি।
×