নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশবপুর, ১ নবেম্বর ॥ কেশবপুরের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুর্নীতির আকড়ায় পরিণত হয়েছে। প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ শিক্ষকদের সীমাহীন দুর্নীতি আর অনিয়ম শিক্ষা ব্যবস্থাকে কুলষিত করছে বলে অভিজ্ঞ মহল মন্তব্য করেছেন। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অডিটের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে কেশবপুরের তিনটি কলেজের ব্যাপক অর্থ লুটপাট, দুর্নীতি ও নানা অনিয়মন ধরা পড়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কেশবপুর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষসহ ২৩ জন শিক্ষকের চাকরিচ্যুতির পর শনিবার হিজলডাঙ্গা শহীদ ফ্লাইট মাসুদ মেমোরিয়াল কলেজের অধ্যক্ষসহ চারজন প্রভাষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে অর্থ লুটপাট ও দুর্নীতির অভিযোগে। এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে কেশবপুর হাজী আব্দুল মোতালেব মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ জুলফিকার আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। জানা গেছে, চলতি বছরের জুন মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাজেট অধিশাখার যুগ্ম সচিব মজিবুর রহমান, পরিদর্শন নিরীক্ষা অধিদফতরের উপ-পরিচালক রাশেদুজ্জামান এবং পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের সহকারী শিক্ষা পরিদর্শক মোহাম্মদ নেয়ামত উল্যাহ কেশবপুর হাজী আব্দুল মোতালেব মহিলা কলেজ, কেশবপুর ডিগ্রী কলেজ ও হিজলডাঙ্গা শহীদ ফ্লাইট মাসুদ মেমোরিয়াল কলেজে অডিট করেন। তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকা লুটপাট, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতিসহ নানা রকম অভিযোগ পান। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়। সে মোতাবেক গত ২১ অক্টোবরের হাজী মোতালেব মহিলা কলেজের পরিচালনা পরিষদ এক সভায় কলেজের অধ্যক্ষ জুলফিকার আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করে ও কলেজের দাতা সদস্য বিএনপি নেতা ও পৌর মেয়র আব্দুস সামাদ বিশ্বাসের দাতা সদস্যপদ বাতিল করে। কেশবপুর ডিগ্রী কলেজের আর্থিক অনিয়ম ও ভুয়া সনদে চাকরি নেয়ায় বৃহস্পতিবার কলেজ কমিটি অধ্যক্ষ রফিকুল বারিসহ দু’জনকে বরখাস্ত ও ২৩ জনকে চাকরিচ্যুত করেছে। এদের মধ্যে দু’জন এমপিওভুক্ত রয়েছেন। একই মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে শনিবার বিকেলে কলেজ পরিচালনা পরিষদ এক সভায় দুর্নীতির অভিযোগে হিজলডাঙ্গা শহীদ ফ্লাইট মাসুদ মেমোরিয়াল কলেজের অধ্যক্ষসহ চারজন প্রভাষককে সাময়িক বরখাস্ত করা করেছে। এদের মধ্যে অধ্যক্ষ মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে ৪ কোটি টাকা লুটপাট, নিয়োগ বোর্ডে নিজে সদস্য থাকা, প্রশাসনিক অনিয়মের অভিযোগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অপর তিন প্রভাষক ওবায়দুর রহমানের বিরুদ্ধে নিয়োগ বোর্ডে শূন্য নম্বরের জায়গায় দশ নম্বর বসিয়ে চাকরিতে যোগদান, স ম কামরুজ্জামানের ও হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত না হয়েও চাকরি করার অভিযোগে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে কলেজের সভাপতি সামছুর রহমান জানিয়েছেন।