ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২

মাদারীপুরের রাজৈরে আবারও বিএনপির সম্মেলনে হট্টগোল

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর

প্রকাশিত: ১৫:৫৩, ১৯ জুন ২০২৫

মাদারীপুরের রাজৈরে আবারও বিএনপির সম্মেলনে হট্টগোল

ছবি: জনকণ্ঠ

মাদারীপুর রাজৈর উপজেলার ইশিবপুর ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে হট্টগোল হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে অর্থের বিনিময়ে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদ দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ইউপি সদস্যকে। বুধবার (১৮ জুন) সন্ধ্যায় রাজৈর উপজেলার ইশিবপুর ইউনিয়নের লুন্দী কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত বিএনপির সম্মেলনে কমিটি ঘোষণা দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. জাফর আলী মিয়ার উপর চড়াও হন পদ বঞ্চিত প্রার্থীরা। পরে পুলিশের সহযোগিতায় সভাস্থল ত্যাগ করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. জাফর আলী মিয়া।

মাদারীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. জাফর আলী মিয়া তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “অভিযোগকারীর জনপ্রিয়তা না থাকায় তার মনের কষ্টে এ মিথ্যা অভিযোগ করেছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট, আমি সততা ও স্বচ্ছতার সাথে এবং সবার মতামত নিয়ে কমিটি ঘোষণা করেছি।”  

বিএনপি নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা জানায়, বুধবার (১৮ জুন) বিকেলে রাজৈর উপজেলার ইশিবপুর ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন লুন্দী কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। পরে একটি কমিটি ঘোষণা দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মাদারীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. জাফর আলী মিয়া। এসময় সভাপতি পদে মোঃ জামাল খন্দকার, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ লিয়াকত হোসেন, সহ সভাপতি মোঃ মুরাদ শেখ, সাধারণ সম্পাদক পদে ইশিবপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুল ইসলাম শরীফ, সাংগঠনিক সম্পাদক রিজভী আহম্মেদ সবুজ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আতিয়ার হাওলাদারের নাম ঘোষণা করেন তিনি। এরপরই শুরু হয় হট্টগোল।

ইশিবপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ আমলের ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম শরীফকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করায় ক্ষিপ্ত হয় অপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইউনিয়ন যুবদলের আরেক সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আলী শেখ বয়াতি ও তার সমর্থকেরা। উত্তেজনা দেখা দিলে গাড়িতে উঠে সভাস্থল ত্যাগ করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, মাদারীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাড. এএইচএম মিজানুর রহমান ও গাউস-উর-রহমান, রাজৈর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ওহাব আলী মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ জাহিদুর রহমান লেবু কাজী, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ সাধারণ সম্পাদক হিমেল আল ইমরান প্রমুখ।

ইশিবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদবঞ্চিত প্রার্থী সৈয়দ আলী শেখ বয়াতি অভিযোগ করে বলেন, “আমি ইশিবপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। তারপরের কমিটিতে নুরুল ইসলাম শরীফকে সাধারণ সম্পাদক করেছিলাম। কিন্তু সে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থাকাকালীন সময়ে তাদের সাথে মিশে মেম্বার হইছে এবং সে আওয়ামী লীগের লোক। তারপরও নুরুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করছে।” 

এ অভিযোগ অস্বীকার করে ইশিবপুর ইউনিয়ন বিএনপির নব-ঘোষিত সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম শরীফ বলেন, “তার (জাফর আলী মিয়া) টাকা পয়সার কোন অভাব নাই। তাকে টাকা দেওয়ার সাহস কারো নাই। তার কথা একটাই তারেক রহমানের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে হবে। আসলে যারা না হতে পারবে বা ব্যর্থ হবে, তারা পরে অন্যের ঘারে দোষ চাপায়। কিন্তু নিজেদের ব্যর্থতা উল্লেখ করে না। আর আমি আমার বংশের কারণে সর্বোচ্চ ভোটে মেম্বার নির্বাচিত হয়েছি, আওয়ামী লীগের সমর্থনে হই নাই। আমি ওয়ান-এলিভেনের পর থেকে ইশিবপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। এখন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হয়েছি। কারণ দীর্ঘদিন মাঠে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলাম।”

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাদারীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. জাফর আলী মিয়া মুঠোফোনে সাংবাদিকদের বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি সততা ও স্বচ্ছতার সাথে এবং সবার মতামত নিয়ে কমিটি ঘোষণা করেছি। অভিযোগকারীর জনপ্রিয়তা না থাকায় তার মনের কষ্টে এ মিথ্যা অভিযোগ করেছে।”

আবির

×