
কয়েকদিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে উত্তরাঞ্চল। আজ শুক্রবার (১৩ জুন) উত্তরাঞ্চলের নীলফামারীর তিস্তাপাড়ের উপজেলা ডিমলায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে বালুভাজা গরম তিস্তারপাড় পুড়ছে।
ডিমলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আব্দুর সবুর মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান সন্ধ্যা ৬টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ডিমলায় রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলমান জুন মাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
তিনি জানান, ডিমলায় গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে তাপমাত্রা বেড়েছে এক দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ১২ জুন ডিমলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল কুড়িগ্রামের রাজারহাটে সর্বোচ্চ ৩৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস নির্ণয় করা হলেও আজ শুক্রবার সেখানে ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পরিমাপ করা হয়েছে। এখানে গত ২৪ ঘন্টায় তাপমাত্রা বেড়েছে এক দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ ছাড়া বিভাগীয় শহর রংপুর,দিনাজপুর ও সৈয়দপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়ান ও পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বোচ্চ ৩৭.৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয়েছে। এখানে তেঁতুলিয়ায় গত ২৪ ঘন্টায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে ২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিস্তাপাড়ের এলাকায় প্রচন্ড গরম ও তাপদাহে মানুষজন বলছেন তিস্তাপার চরের বালুভাজা গরমে চরবাসীর হাঁসফাঁস অবস্থা। তপ্ত গরমে চরের বালুর পথে হাটাহাটি করা ছিল কঠিন অবস্থা।
নীলফামারীর ডিমলা,জলঢাকা, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রামের তিস্তাপাড়ে বালুভাজা গরম পড়েছে। টানা তীব্র তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে তিস্তাপাড়ের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা। মাথার ওপর থাকা নীল আকাশটা যেন তপ্ত কড়াইয়ে রূপ নিয়েছে। প্রকৃতিতে বয়ে চলা গরম বাতাস শরীরে বিঁধছে আগুনের হল্কার মত। সূর্যোদয়ের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত একই মাত্রাই তাপ নামছে। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কাছাকাছি দিয়ে যাচ্ছে। ফলে তীব্র গরম অনুভুত হচ্ছে। একে তো বৃষ্টির দেখা নেই উল্টো তীব্র গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
গরমের তীব্রতায় সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় পড়েছে শিশুরা। জ্বর, ঠান্ডা, এলার্জিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের হার বেড়েছে কয়েকগুণ। পানিশূন্যতায় শিশুদের রোগ প্রতিরোধ মতা কমে এ ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গরমের তীব্রতায় শিশুদের বাড়তি যত্নের তাগিদ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।নীলফামারী মেডিকেল কলেজের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. দিলীপ বলেন, গরম বেশি হওয়ার কারণে জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত রোগী আগের চেয়ে বেশি আসছে। এ পরিস্থিতিতে প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল খাবার খাওয়াতে হবে। বাচ্চারা সাধারণত কম খায়। তাই কিছুণ পর পর পানিশূন্যতা দূর করার চেষ্টা করতে হবে।
আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে তাপমাত্রার চেয়েও বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে, যা কেটে যাবে কয়েক দিনের মধ্যেই। আগামী সোমবার (১৬ জুন) থেকে সারা দেশে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানান দিয়েছে আবহাওয়া অফিস, যা অব্যাহত থাকবে ২২ জুন পর্যন্ত।
আঁখি