
সরকারি হিসেব মতে ঈদের ছুটি রয়েছে আরোও একদিন ! পরিবার-পরিজনের সাথে ঈদের ছুটি কাটিয়ে এরি মধ্যে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। শুক্রবার সকাল থেকে শিবালয়ের আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাটে দেখা গেছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের অজ¯্র মানুষ এ দ্’ুঘাটযোগে ফিরছেন নিজ-নিজ কর্মস্থলে। বাস-কোচ, লঞ্চ-ফেরি প্রত্যেকটি পরিবহনেই ছিল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। করোনার নতুন করে পাদুর্ভাভ দেখা দিলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১১ দফা নির্দেশনা মানছেন না কেউ।
জানা গেছে, ঈদুল আজহায় এবার সরকারি ছুটি ছিল ১০দিন। যা আগামী শনিবার শেষ হবে। এরি মধ্যে মানুষ ছুটতে শুরু করেছে নিজ-নিজ কর্মস্থলে। পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাটে রাজধানীমুখী যাত্রী চাপ আরোও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে বলে ধারনা করছেন পরিবহন মালিক শ্রমিকরা।
পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলের মানুষ পদ্মা ও যমুনা সেতু এড়িয়ে পাবনার কাজিরহাট ও রাজবাড়ির দৌলতদিয়া থেকে ফেরি, লঞ্চ, স্পিডবোট ও ইঞ্জিন চালিত নৌকাযোগে উত্তাল পদ্মা-যমুনা পাড়ি দিয়ে আসছে মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাটে। এখান থেকে বাসযোগে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছুঁটছেন এরা।
ঘাটে আসা যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানাযায়, রাস্তায় বাড়তি কোন সমস্যা না থাকলেও প্রচন্ড গরমে অস্বস্থিতে পড়তে হয় তাদের। ছুটির সময় বেশী হওয়ায় আরামেই কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন তারা। আরিচা ঘাটেও মিলেছে একই চিত্র। ঘাট এলাকায় যাত্রী চাপ থাকলেও তারা স্বস্তিতে গন্তব্যে ফিরছেন।
আরিচা ঘাটে বাসের জন্য অপেক্ষামান বেশ কয়েক যাত্রী বলেন, প্রশাসনের বাড়তি রজরদারি থাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ঈদের পর বেশ স্বস্তিতেই কর্মস্থলে ফিরতে পারছি। ঘাটে মলম পার্টি, পকেট মাইর ও ছিনতাইকারীদের কোন উটকো ঝামেলা নেই। পরিবহন গুলোতেও বাড়তি ভাড়ার সুযোগ নেই। এক কথায় এ যেন স্বস্থির যাত্রা।
পাটুরিয়া ঘাটে নীলাচল পরিবহনের সুপার ভাইজার সুমন হোসেন বলেন, ঈদের পর সাধারণত তৃতীয় বা চতুর্থ দিন থেকে ঢাকায় ফিরতি যাত্রীর চাপ থাকে। এবার লম্বা ছুটি হওয়ায় তেমন চাপ নেই। যে কারণে কোন সমস্য হচ্ছে না। শিবালয়ের বরংগাঈল হাইওয়ে পুলিশ জানান, স্বার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় ঈদের ছুটির পর ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক এখনও তুলনামূলক গাড়ির চাপ কম রয়েছে। ঢাকায় ফেরা যাত্রীদের চাপ থাকলেও রাস্তার অবস্থা ভালো থাকায় কোথাও বড় ধরনের জট বা বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়নি।
আরিচা-কাজিরহাট রুটের স্পিডবোট চালক মান্নান জানান, এ নৌরুটে ৬৫টি স্পিডবোট চলাচল করছে। ফিরতি পথে স্পিডবোটের কোনো সংকট নেই বলে যাত্রীরা স্বস্তিতে পার হচ্ছে। পাটুরিয়া ঘাটে দেখা গেছে একই চিত্র। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাট হয়ে লঞ্চ ও ফেরিতে পার হয়ে ঢাকা, নবীনগর, সাভারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ফিরছেন মানুষ।
সাভার বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হাসান সিকদার নামে এ যাত্রী বলেন, ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ছিলাম। এখন আবার ফিরছি কর্মস্থলে। পরিবহনের ঝক্কি-ঝামেলা এড়ানোর জন্য আগে-আগে ফিরলাম। ঈদের আনন্দ শেষ, এখন শুরু হবে জীবনযুদ্ধ।
এদিকে দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত বুধবার থেকে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়েছে। তবে আরিচা ও পাটুরিয়া ফেরি ঘাট, বাস স্ট্যান্ড এবং লঞ্চ ঘাট এলাকায় এসব নির্দেশনা মানতে দেখা যায়নি কাউকে। বেশির ভাগ যাত্রীরাই মাস্ক ছাড়া চলাচল করছে। ভীরের কারণে শারীরিক দুরত্বও মানছে না কেউ। আর এগুলো দেখারও যেন কেউ নেই।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাকির হোসেন জনকন্ঠকে বলেন, এবার যাত্রীদের নিকট থেকে কোন পরিবহণে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার সুযোগ নেই। কোন পরিবহণ বাড়তি ভাড়া নিলেও যাত্রীদেরকে সে ভাড়া ফেরত দেয়া হচ্ছে। উপজেলার টেপড়া বাসস্ট্যান্ড ও উথলী-পাটুরিয়ার মোড়সহ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে আমাদের মোবাইল টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
আঁখি