
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের ছোট হামিরদী গোপীনাথপুর গ্রামে একটি সুন্নতের খতনা অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আধিপত্য বিস্তার এবং সাউন্ড বক্স বাজানো নিয়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (৮ জুন) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে চলা এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুরুতর ৫ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছোট হামিরদী গ্রামের ইমরান মুন্সীর ছেলে আবু ঈসার সুন্নতের খতনা উপলক্ষে সোমবার অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। রোববার বিকেল থেকে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে প্রায় ৫০ হাজার অতিথি আপ্যায়নের প্রস্তুতি চলছিল। আয়োজনের অংশ হিসেবে সাউন্ড বক্সে উচ্চ শব্দে গান বাজানো হচ্ছিল।
এই গান বাজানোকে কেন্দ্র করে প্রথমে উঠতি বয়সের কিশোরদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে রাত দেড়টার দিকে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সাজ্জাদ হোসেন লিটন মাতুব্বরের নেতৃত্বে শতাধিক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত গ্রামবাসী খতনার অনুষ্ঠানস্থলে হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা ভাড়াকরা ডেকোরেটরের চেয়ার-টেবিল, জেনারেটর, রান্নার ডেকসি, প্যান্ডেলসহ অনুষ্ঠানস্থলের সবকিছু তছনছ করে দেয়। এমনকি দুটি গরু ও রান্নার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। আতঙ্কিত অতিথিরা ছুটোছুটি করে প্রাণ বাঁচায়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ইমরান মুন্সীর সমর্থকরাও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, ফলে দু’পক্ষের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা এলাকা।
খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং থমথমে অবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ভুক্তভোগী ইমরান মুন্সী জানান, “বিএনপি নেতা লিটন মাতুব্বর পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমার ছেলের খতনা অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে। তারা তিনটি বাড়িঘর, ডেকোরেটরের মালামাল ভাঙচুর করে এবং দুটি গরু, রান্নার সামগ্রী লুটে নেয়। এতে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।”
লিটন মাতুব্বরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন রিসিভ করলেও তিনি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মিমিয়া