ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

এবার ঠাকুরগাঁওয়ের তিন কিশোরী নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচার

প্রকাশিত: ১১:৪৩, ৫ জুন ২০২৫

এবার ঠাকুরগাঁওয়ের তিন কিশোরী নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচার

ছবি:সংগৃহীত

বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁওয়ের তিন হিন্দু কিশোরীর পারিবারিক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেল ‘রিপাবলিক বাংলা’ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার করেছে। চ্যানেলটি দাবি করে, ওই তিন শিক্ষার্থী নিখোঁজ এবং তাদের কট্টরপন্থীরা অপহরণ করেছে, যা পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে তাদের পরিবার ও স্থানীয় প্রশাসন।

 

 

ঘটনার শুরু সোমবার। স্কুল শেষে ঠাকুরগাঁওয়ের তিন বান্ধবী পার্শ্ববর্তী জেলা দিনাজপুরের কাহারোলে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেদিন বৃষ্টির কারণে তারা সেখানে আটকা পড়ে এবং মোবাইল ফোনে চার্জ না থাকায় পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি। তাদের স্কুল থেকে বাড়ি না ফেরায় উদ্বিগ্ন হয়ে পরিবারের সদস্যরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

পরদিন সকালে কিশোরীরা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানায়, তারা নিরাপদেই আত্মীয়ের বাড়িতে আছে। এরপর তারা বাড়ি ফিরে আসে। বিষয়টি এখানেই শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ভারতীয় গণমাধ্যমে তা বিকৃতভাবে তুলে ধরা হয়।

 

 

রিপাবলিক বাংলা চ্যানেলটি এই ঘটনাকে ‘হিন্দু নিধন’ এবং ‘কট্টরপন্থীদের কাজ’ বলে প্রচার করে, যা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিরুদ্ধে স্পষ্ট অপপ্রচারের শামিল। কিশোরীরা ও তাদের অভিভাবকরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তারা নিজেরাই ঘুরতে গিয়েছিল এবং কোনো রকম অপহরণ বা নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটেনি।

এই মিথ্যা প্রচার নিয়ে এলাকাবাসী, জনপ্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশে এ ধরনের অসত্য সংবাদ সরাসরি ভ্রাতৃত্বের বন্ধন দুর্বল করতে চায়।

 

 

এক কিশোরীর ভাষায়, “আমরা ঘুরতে গিয়েছিলাম। বৃষ্টির কারণে আটকে পড়ি। ফোনে চার্জ ছিল না, তাই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এ নিয়ে ভারতীয় চ্যানেল যেটা বলেছে, সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।”

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলেন, “বাংলাদেশের হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে এ ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। কিন্তু এতে কোনো লাভ হবে না। আমরা সবাই মিলে সম্প্রীতির সংস্কৃতি বজায় রাখবো।”

পুলিশ জানায়, বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তারা মেয়েদের উদ্ধার করেনি, কারণ উদ্ধারের কিছু ছিল না, তারা স্বেচ্ছায় আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিল এবং নিরাপদে ছিল।

এই ঘটনা প্রমাণ করে, কতিপয় ভারতীয় মিডিয়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াতে গুজব ছড়াচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণ ও প্রশাসন এসব অপপ্রচারের জবাব শান্তি ও সত্যের মাধ্যমে দিচ্ছে।

আঁখি

×