নিজস্ব সংবাদদাতা, কুষ্টিয়া/ইবি সংবাদদাতা ॥ কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) চাকরির দাবিতে প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে চাকরি প্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকারসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। শনিবার দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে চরম আতঙ্ক। প্রত্যক্ষদর্শী একধিক সূত্র জানায়, চাকরির দাবিতে বহিরাগত ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীরা শনিবার প্রশাসন ভবনের সামনে একত্রিত হতে থাকে। তারা বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আশকুর রহমান জাপান, মাহমুদ হাসান লেলিন, মিজানুর রহমান টিটু, তৌফিকুর রহমান হিটলার, কাশেম মাহমুদ, মাসুদ রানা, আরব আলীর নেতৃত্বে ২৫-৩০ নেতাকর্মী উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যায়। কিন্তু চাকরির কোন নিশ্চিয়তা না পেয়ে তারা দুপুর ১টার দিকে প্রশাসন ভবনে বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মাচারীদের জোরপূর্বক বের করে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা লাগিয়ে আন্দোলন শুরু করে এবং বিভিন্ন সেøাগান দিতে থাকে। তারা এ সময় প্রশাসন ভবনের মেইন গেট ও ভিসির কার্যালয়েও তালা ঝুলিয়ে দেয়। এতে ভিসি প্রফেসর ড. আবদুল হাকিম সরকার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এ পরিস্থিতিতে প্রশাসন ভবনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।
চাকরি প্রত্যাশীদের এ আন্দোলনের মুখে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ থেকে ছেড়ে আসা ২টার শিফটের বাস ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী শান্তিডাঙ্গা এবং শেখপাড়া বাজারে অবস্থান নেয়। পরে সেখান থেকে প্রায় ৪৫ মিনিট বিলম্বে দুপুর পৌনে ৩টার দিকে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের উদ্দেশে ছেড়ে যায় বলে জানায় পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান। চাকরি প্রত্যাশীদের একজন মাহমুদ হাসান লেলিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রশাসন আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে।
এবার চাকরি না দেয়া পর্যন্ত আমরা এ আন্দোলন-অবরোধ তুলব না। এদিকে দুপুর রদড়টার দিকে ইবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সম্পাদক অমিত কুমার দাস, সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মিজুর হস্তক্ষেপে চাকরি প্রত্যাশীদের একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্য আবদুল হাকিম সরকারের সঙ্গে বৈঠক করে। উপাচার্য তাদের চাকরি দেয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করলে বেলা আড়াইটার দিকে প্রশাসন ভবনের তালা খুলে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে চাকরি প্রত্যাশী আরব আলী বলেন, ‘চাকরির ব্যাপারে যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেটি প্রত্যাহার হলে কর্তৃপক্ষ আমাদের চাকরি নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছে। এ জন্য আমরা তালা খুলে দিয়েছি।’ এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আবদুল হাকিম সরকার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে চাকরি দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। মঞ্জুরি কমিশন নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারব।’