ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায়ও পুরোদমে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ৪ এপ্রিল ২০২০

  করোনায়ও পুরোদমে  এগিয়ে চলছে  পদ্মা সেতুর কাজ

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, জাজিরা থেকে ফিরে ॥ নোভেল করোনাভাইরাসের মধ্যেও পুরো দমে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ। জাজিরা প্রান্তে এখন সেতুর ওপর দিয়ে নির্মাণ কাজের যান বাহন চলাচল করছে। ভারি ভারি লড়ি, ট্রাক যাচ্ছে সেতুর ওপর দিয়ে। বসে যাওয়া স্প্যানের ভেতরে নিচ তলায় বসছে রেলওয়ে স্লাব। আর ওপর তলায় বসছে রোডওয়ে স্লাব। ৬.১৫ কিলোমিটার পুরো সেতুতে রোডওয়ে স্লাব স্থাপন হবে মোট ২৯১৭টি। এর মধ্যে ২৬০০ স্লাব তৈরি হয়ে গেছে। বাকি ৩১৭ রোডওয়ে স্লাব এখন তৈরির কাজ চলছে। এ পর্যন্ত রোডওয়ে স্লাব স্থাপন হয়ে গেছে ৪শ’। আর রেলওয়ে স্লাব স্থাপন হবে ২৯৫৯টি। রেলওয়ের সব স্লাবই তৈরি হয়ে গেছে। এর মধ্যে রেলওয়ে স্লাব স্থাপন হয়েছে ৮৪৩টি। সরেজমিন প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, করোনার মধ্যেও নির্মাণ কাজ চলছে। দেশী-বিদেশী কর্মীরা স্বাভাবিকভাবেই কাজ করছেন। নদী এবং তীরে সবখানেই কাজ আর কাজ। কর্মীদের সবাই মাস্ক ব্যবহার করছেন। মাথায় নিরাপত্তা ক্যাপ আর মুখে মাস্ক। হাতে গ্লাভস নিয়ে হরদম কাজ করছেন। সেতুর একবারে ওপরে জাজিরা প্রান্তে বসানো হচ্ছে রোডওয়ে স্লাব। সেখানে পরিদর্শনে যাচ্ছি। আমাদের টিমে থাকা একজন প্রকৌশলী অনবধানবশত মুখের মাস্কটি খোলা ছিল। আটকে দিলেন চীনা এক নিরাপত্তা কর্মী। উর্ধতন প্রকৌশলী সত্ত্বেও তাকে কোন ছাড় দিলেন না। পরে মাস্ক যথাযথভাবে পরিধানের পরই আমাদের সঙ্গে প্রবেশ করতে দেয়া হলো। এতটাই এখানে নিয়ম-শৃঙ্খলা। আর ভেতরে প্রবেশের আগেও নানা রকমের নির্দেশনা এবং জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়। দীর্ঘ সিঁড়ি বেয়ে সেতুর ওপরে উঠতেই ছয় লেনের বিশাল সেতুর সড়ক। সেতুটি এখন এতটাই দীর্ঘ হয়ে গেছে, হেঁটে শেষ করা কষ্টসাধ্য। তাই ব্যাটারিচালিত একটি তিন চাকার একটি রিক্স রয়েছে। সেটি ডেকে আনা হলো। এই রিক্সায় চড়েই আমরা রোডওয়ে স্লাব স্থাপনের কাজ প্রত্যক্ষ করলাম। করোনা নিয়ে কর্মীরা সতর্ক থাকলেও কেউ আতঙ্কিত নন। স্প্যানের ভেতরে নিচ তলায় বসছে রেলওয়ে স্লাব। এসব স্লাব নিচ থেকে উঠানো এবং বসানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি। বড় বড় ক্রেন খুব অল্প সময়েই ভারি ভারি স্লাব যথা স্থানে নিয়ে আসছে। আর বড় বড় রডসহ নানা রকমের ভানি উপকরণে শক্তভাসে খাপে খাপে বসিয়ে দিয়ে সিমেন্টসহ নানা রকমের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। এই চিত্র শুধু স্প্যানের ওপরে আর নিচেই নয়। নয় কিলোমিটার সেতু এলাকার সবখানেই কর্মব্যস্ততা। ব্যস্ততা বেশি লক্ষ্য করা গেছে মাওয়া প্রান্তের কুমারভোগের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে। এখানেও স্প্যান ফিটিংসহ অন্যান্য কাজে ব্যস্ততা সময় কাটাচ্ছে কর্মীরা।
×